বিসমিল্লাহির রহমানীর রহীম।
#
ম্যানেজমেন্টে এমবিএ শেষ করে একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি নেন মনিকা (ছদ্ম নাম)। চাকরিতে যোগদানের পর থেকেই এমডি তাকে কারণে-অকারণে রুমে ডেকে নিয়ে বসিয়ে রাখতেন। প্রায়ই রাতে ফোন দিয়ে অপ্রয়োজনীয় কথা বলতে শুরু করেন। একপর্যায়ে তিনি অফিস কক্ষে মনিকার হাত ধরার চেষ্টা করেন এবং আপত্তিকর প্রস্তাব দেন। মনিকা ভেবে দেখব বলে এমডির রুম থেকে বের হয়ে আসেন এবং ওই দিনই চাকরি ছেড়ে দেন।
.
একটি করপোরেট অফিসে চাকরি নেন শ্রাবন্তি । কিছুদিন পর থেকেই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রায়ই অফিস ছুটির পর নানা অজুহাতে তাকে ফোন দিতে থাকেন। একপর্যায়ে শ্রাবন্তি তার ফোন রিসিভ করা বন্ধ করে দেন। পরদিন ওই কর্মকর্তা তাকে সাফ জানিয়ে দেন তার অফিসে কাজ করতে হলে তার সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক রাখতে হবে। শ্রাবন্তি এতে রাজি না হওয়ায় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ওই দিনই কাজে পারদর্শী না হওয়ার অজুহাত দেখিয়ে শ্রাবন্তিকে চাকরিচ্যুত করেন ।
.
#
গ্রামীণফোনে যৌন হয়রানি, সম্ভ্রম রক্ষায় চাকরি ছাড়ছে নারী! গ্রামীণফোনের সিডিএম শাখার একজন শীর্ষ কর্মকর্তা এডমিনের ট্রেনিং শাখার এক নারী কর্মকর্তার রূপ-গুণে মুগ্ধ হন। সিডিএম শাখার ওই কর্মকর্তা ছিলেন বিবাহিত। আবার ট্রেনিং শাখার ওই নারী কর্মকর্তাও ছিলেন বিবাহিত। বিষয়টি জানার পরও ওই নারী কর্মকর্তাকে অনৈতিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেন ওই কর্মকর্তা। ওই নারী কর্মকর্তা এমন আবেদন প্রত্যাখ্যান করেন। এরপরই তার উপর খড়গ নেমে আসে। কারণে অকারণে তার ডিউটি টাইম নির্ধারণ করা হয় সন্ধ্যার পর থেকে। রাতে অফিসে ওই নারী কর্মকর্তার ওপর চলে বিভিন্ন ধরনের মানসিক নির্যাতন। এতেও ওই নারী কর্মকর্তা দমে যাননি। একপর্যায়ে তাকে বরিশাল আঞ্চলিক অফিসে বদলি করা হয়। স্বামী-সন্তদান ঢাকায় ফেলে বরিশাল যেতে চাননি তিনি। ফলে একটা পর্যায়ে বাধ্য হয়েই ওই নারী কর্মকর্তা চাকরি থেকে ইস্তফা দেন। এতে তিনি সব ধরনের আর্থিক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন। গ্রামীণফোন থেকে এভাবে নির্যাতনের মুখে চাকরি ছেড়ে আসা একজন নারী কর্মকর্তা এ সব কথা বলেন। শুধুই একটি ঘটনা নয়, এমন অহরহ যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোনে।
.
তাছাড়া, গ্রামীণফোনে একশ্রেণির কর্মকর্তা আছেন যারা নারী কর্মীদের কাছ থেকে ‘ভাইয়া’ ডাক শুনতে পছন্দ করেন। কারণে অকারণে তাদের সঙ্গে আড্ডা দিতে চান। দুপুরে বা বিকালে এক সঙ্গে খাবারের অফারও দেয়া হয়। বিভিন্ন ধরনের আড্ডায় বড় কর্মকর্তাদের মনোরঞ্জন না করতে পারলে, তাকে পরবর্তীতে ডিউটি টাইম পরিবর্তন করে রাতে দেয়া হয়। এতে বিপাকে পড়ে অনেকে নারীই চাকরি ছাড়েন বা ‘ভাইয়া’দের খুশি করার চেষ্টা করেন। এ ছাড়া রাতের বেলা গ্রামীণফোনের কোনো অনুষ্ঠান থাকলে সেখানে নারী কর্মকর্তাদের উপস্থিত হতে অনেকটাই বাধ্য করা হয়। অতিথিদের সঙ্গে নারী কর্মকর্তাদের মদপান করতেও উৎ্সাহিত করেন ঊর্ধ্বতনরা।
.
ঢাকার বাইরে আঞ্চলিক অনুষ্ঠান, সভা ও প্রচারণার অংশ হিসাবে সুন্দরী নারী কর্মকর্তাদের বেশিরভাগ সময় সেখানে পাঠানো হয়। ওইসব স্থানে হোটেলে রাত্রিযাপনে গ্রামীণফোনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নারীদের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে বিদেশ থেকে ঊর্ধ্বতনরা এলে তাদের সঙ্গে অফিসিয়াল প্রোগ্রামের নাম করে ঢাকার বাইরে পাঠানো হয় সুন্দরী নারীদের। কিছুদিন আগেও এক নারী কর্মীকে ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তার সঙ্গে কক্সবাজার পাঠানো হয়। সেখানে ওই কর্মকর্তা একটি বিলাসবহুল হোটেলে নারী কর্মকর্তাকে রাতে সুইমিং করার প্রস্তাব দেয়। ওই নারী কর্মকর্তা সুইমিং কস্টিউম পরে আসলেও তাতে ওই কর্মকর্তার মন ভরেনি। তিনি ওই নারীকে আরো শর্ট পোশাক পরে আসার প্রস্তাব দেন। বাধ্য হয়ে ওই নারী কর্মকর্তা সেদিন রাতে শর্ট পোশাক পরে সুইমিং করেন। ঢাকায় ফিরে ওই নারী চাকরি থেকে ইস্তফা দেন।
.
এভাবে মানসিক নির্যাতন সহ্য করেই অনেক নারী এখনো চাকরি করে যাচ্ছেন গ্রামীণফোনে। আর যাদের উপর নির্যাতনের পরিমাণ বেশি তাদের অনেকেই চাকরি ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অফিস চলাকালীন সময়ে গ্রাামীণফোনের নারী কর্মকর্তাদের ড্রেস কোড মেনে চলতে হয়। বিশেষ করে পশ্চিমা ঘরানার পোশাক বাধ্যতামূলক করা হয় সুন্দরী নারী কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে। যদিও গ্রামীণফোনে এ ধরনের ড্রেস কোড নেই। কিন্তু গ্রাামীণফোনে তথাকথিত শীর্ষ কর্মকর্তারা তাদের মনবাঞ্ছা চরিতার্থ করতে, ইচ্ছা করেই নারী কর্মকর্তাদের ওপর প্রগতিশীলতার নামে ড্রেসে কোড চাপিয়ে দেয়। আবার রাজধানী বা রাজধানীর বাইরে কোনো অনুষ্ঠানে নারী কর্মকর্তাদের পশ্চিমা ধাঁচের ড্রেস কোড থেকেও ছোট পোশাক পরতে বাধ্য করা হয়। নারী কর্মকর্তাদের বলা হয়, ‘কর্পোরেট কালচারে এ সব মেনে চলতে না পারলে এখানে চাকরি করা যাবে না।’

.
দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে কর্মস্থলে নারীর উপস্থিতি এখন পুরুষদের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। তবে কর্মস্থলে নারীর উপস্থিতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে যৌন হয়রানির ঘটনাও। যদিও কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির কথা খুব কমই প্রকাশ হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নারীরা সংকোচ, চাকরি হারানোর ভয়, মানসম্মানের ভয়ে বিষয়গুলো গোপন রাখার চেষ্টা করেন।
দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে কর্মস্থলে নারীর উপস্থিতি এখন পুরুষদের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। তবে কর্মস্থলে নারীর উপস্থিতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে যৌন হয়রানির ঘটনাও। যদিও কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির কথা খুব কমই প্রকাশ হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নারীরা সংকোচ, চাকরি হারানোর ভয়, মানসম্মানের ভয়ে বিষয়গুলো গোপন রাখার চেষ্টা করেন।
.
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের এক হিসাবে দেখা গেছে, ২০১৩ সালে ২৯ জন নারী কর্মক্ষেত্রে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এ সংখ্যা ২০১২ সালে ২৫ জন, ২০১১ সালে ২৮৭ জন, ২০১০ সালে ৩৭ জন এবং ২০০২ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ১ হাজার ১৩৭ জন।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের এক হিসাবে দেখা গেছে, ২০১৩ সালে ২৯ জন নারী কর্মক্ষেত্রে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এ সংখ্যা ২০১২ সালে ২৫ জন, ২০১১ সালে ২৮৭ জন, ২০১০ সালে ৩৭ জন এবং ২০০২ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ১ হাজার ১৩৭ জন।
তবে মহিলা পরিষদের এই হিসাব শুধু পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্ট থেকে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির ঘটনা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রকাশিত হয় না।
.
কথা হয় নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবিরের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘কর্মক্ষেত্রে প্রায় সব ধরনের প্রতিষ্ঠানেই নারীরা যৌন হয়রানির শিকার হন। একজন নারীর পেশার সঙ্গে তার রুটি-রুজি জড়িত। তাই সমস্যা হলেও তা অনেকে ছেড়ে আসতে পারেন না।’
.
কথা হয় নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবিরের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘কর্মক্ষেত্রে প্রায় সব ধরনের প্রতিষ্ঠানেই নারীরা যৌন হয়রানির শিকার হন। একজন নারীর পেশার সঙ্গে তার রুটি-রুজি জড়িত। তাই সমস্যা হলেও তা অনেকে ছেড়ে আসতে পারেন না।’
.
গার্মেন্টস কারখানাগুলোয় অসংখ্যা নারী প্রতিনিয়ত যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। আইনে আছে সকাল ৭টার আগে ও রাত ৮ টার পর গার্মেন্টসে নারী কর্মীদের রাখা যাবে না। কিন্তু মালিকরা শিপমেন্টের কথা বলে গভীর রাত, এমনকি সারা রাত গার্মেন্টসে থাকতে বাধ্য করেন। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের গবেষণায় দেখা যায়, ৩০ শতাংশ নারী শ্রমিক নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
.
একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরিরত শাম্মী আখতার বলেন, ‘নামিদামি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আকার-ইঙ্গিতে কুপ্রস্তাব দেন। দূরে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলেন। প্রলোভন দেখান পদোন্নতির। বিশেষ করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ফ্রন্ট ডেস্ক, রিসিপশন এবং দ্রুত পদোন্নতির সুযোগ রয়েছে এমন পদগুলোয় চাকরি করতে গেলে নারীদের বেশি বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। তবে প্রমাণ না থাকায় ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করতে পারেন না।’
.
.
একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরিরত শাম্মী আখতার বলেন, ‘নামিদামি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আকার-ইঙ্গিতে কুপ্রস্তাব দেন। দূরে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলেন। প্রলোভন দেখান পদোন্নতির। বিশেষ করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ফ্রন্ট ডেস্ক, রিসিপশন এবং দ্রুত পদোন্নতির সুযোগ রয়েছে এমন পদগুলোয় চাকরি করতে গেলে নারীদের বেশি বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। তবে প্রমাণ না থাকায় ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করতে পারেন না।’
.
সূত্রঃ
.
চায়নাঃ
চায়নাঃ
২০১৩ সালের শরতে চালানো এক জরিপ অনুসারে ফ্যাক্টরীতে কাজ করা শতকরা ৭০ জন নারী জানিয়েছেন তাঁরা কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরণের যৌন নির্যাতনের স্বীকার হয়েছেন ।
প্রতি চারজনের একজন বলেছেন তাঁরা খুব ফোনে অপমানিত হয়েছেন বা পরনোগ্রাফিক মেসেজ পেয়েছেন , প্রতি দশজনের একজন কর্মক্ষেত্রেই কুপ্রস্তাব পেয়েছেন এবং শতকরা ১৫ জন নারী চাকুরী ছেড়ে দিয়েছেন যৌন নির্যাতনের কারণে ।
Leta Hong Fincher একটি বই লিখছেন ‘Leftover’ Women: The Resurgence of Gender Inequality in China’ এই নামে । তিনি মন্তব্য করেন ,“ যৌন নির্যাতন চায়নার খুবই সিরিয়াস একটি সমস্যা । কোথায় নেই এটি ? সার্ভিস ইন্ডাস্ট্রি, শিক্ষাক্ষেত্র, ফিন্যান্স ... কোথায় নেই ?
.
কোন মহিলা নির্যাতিত হবার পরে যদি অফিসে অভিযোগ পেশ করেন , বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই তার অভিযোগ গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয়না”।
.
হংকংঃ
"প্রতি পাঁচজন নারীকর্মজীবির মধ্যে একজন কর্মক্ষেত্রে যৌন নির্যাতনের স্বীকার হন । নির্যাতনের স্বীকার হওয়া নারীদের প্রায় একতৃতীয়াংশ এ ব্যাপারে কিছুই করেন না" ।
- Equal-rights watchdog
.
“কর্মক্ষেত্রে যৌন নির্যাতন খুবই কমন একটা ঘটনা”
- Convenor of the Equal Opportunities Commission's policy and research committee John Tse Wing-ling said yesterday.
.
“নারীদেরকে কর্মক্ষেত্রে এমন পোশাক পড়তে ‘বাধ্য’ করা হয় যা যৌন নির্যাতনকে আরো উস্কে দেয় । বস সবসময় তার কর্মচারীদের বলেন, ‘তোমাদের কাজ কাস্টোমারদের সার্ভিস দেওয়া , তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার জন্য তোমাদের বেতন দেওয়া হয়না । কাজেই মুখ বুজে সব মেনে নাও ”
- - Yu Mei-wan, Confederation of Trade Unions
.
.
জাহেলিয়ায়েত যুগে যখন সমাজের চোখে নারী আর পশুর মধ্যে কোন পার্থক্য ছিলনা, নারীরা ছিলই কেবলি ভোগ্যপন্য ,তখন ইসলাম এসে নারীকে দিয়েছিল প্রকৃত মুক্তির স্বাদ । মুসলিমরা নারীকে দিয়েছিল রাণীর মর্যাদা ।আর স্বাধীনতার মুলো ঝুলিয়ে পাশ্চাত্য নারীদেরকে ঘর থেকে বের করে এনে বানিয়েছে যৌন দাসী । এরপরেও পাশ্চাত্য আর তাদের চামচারাই নাকি নারীদের মুক্তিদাতা ! এরাই নাকি নারীকে দিয়েছে প্রকৃত মর্যাদা !
চলবে ইনশা আল্লাহ্......
.
#নারীস্বাধীনতা
#একেই_বলে_সভ্যতা
# সূর্য_তোমার_কমছে_আয়ু
.
পড়ুন প্রথম দুইটি পর্ব -
No comments:
Post a Comment