Thursday, January 26, 2017

সমকামিতার শাস্তি


বিসমিল্লাহির রহমানীর রহীম । 

ব্যাপারটা দুঃখজনক ।

 LGBT’র শুরুটা হয়েছিল ভন্ড আলফ্রেড কিনসের হাত ধরে । সেক্স নিয়ে অনেক গাঁজাখুরি রিসার্চ করেছিল এই লোকটা তারপরের দায়িত্বটুকু কাঁধে তুলে নিয়েছিল   রক ফেলার ইন্সটিটিউট, প্ল্যান্ট প্যারেন্টহুড,পশ্চিমা মিডিয়া । এরা  ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে  এই ‘বিজ্ঞামনস্ক’ লোকটার একেবারেই অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে করা রিসার্চগুলো বিশ্ববাসীর সামনে উপস্থাপন করেছে । তার রিসার্চ পেপারগুলো যেন আসমান থেকে আসা কোন ঈশ্বরের বাণী । অক্ষরে অক্ষরে মেনে নিতে হবে সব কিছু । পরবর্তীতে বিজ্ঞানী এবং গবেষকরা  আলফ্রেড কিনসের রিসার্চগুলো  তুলোধুনো করে ছেড়েছিলেন । কিন্তু যা ক্ষতি হওয়ার তা ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছিল । যৌনতার ব্যাপার স্যাপার গুলো আমেরিকানরা (সে তা সাধারন নাগরিকই হোক বা রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারক) দেখেছে আলফ্রেড কিনসের পড়িয়ে দেওয়া চশমার ভেতর থেকেই । তাইতো কিন্ডারগার্ডেনের বাচ্চাদেরকেও সেক্স এডুকেশানের নামে সমকামিতার শিক্ষা দেওয়া হয়, মাস্টারবেট করতে উৎসাহিত করা  হয় । কিছু দিন আগে তো ‘সমলিঙ্গ বিবাহ’ আইনও পাশ হয়ে গিয়েছে ।

Image result for stop   lgbt



কিন্তু এর চেয়েও দুঃখজনক ব্যাপার হলো পাশ্চাত্যের কিছু স্কলার, দা’ঈ এর সাম্প্রতিক কিছু কর্মকাণ্ড ।উনারা ঘুরিয়ে, পেঁচিয়ে , হিকমাহর আড়ালে  সমকামিতাকে স্বাভাবিক ব্যাপার হিসেবে মুসলিমদের গ্রহণ করে নিতে বলছেন।

সুবহানাল্লাহ!        

কুরআন এবং হাদীসে সুস্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে এটা খুবই  জঘন্য  কবীরা গুনাহ । এর শাস্তি মৃত্যুদন্ড । আজ কুফফারদের কাছে ইসলামের ইমেজ রক্ষার নামে আল্লাহর দেওয়া বিধানের বিরুদ্ধাচারণ করা হচ্ছে, সুকৌশলে বদলে দেওয়া হচ্ছে আল্লাহ্‌র বিধান। সুবহানাল্লাহ ! 

Islamqa এর একটি ফতোয়া (https://islamqa.info/en/38622) অনুবাদ করে দেওয়া হল এখানে । কুরআন,হাদীসে আলোকে সমকামিতা, সমকামীদের ব্যাপারে সালাফদের দৃষ্টিভঙ্গি কেমন  সবকিছুই  আলোচনা করা হয়েছে   এতে ইনশা আল্লাহ্‌ ।    আল্লাহ্‌ (সুবঃ) আমাদেরকে এই জঘন্য পাপ থেকে হেফাজত করুন । আমাদেরকে তথাকথিত স্কলারদের ফিতনা থেকে রক্ষা করুক ।

.........প্রথমত, ইসলামে যতগুলো কবীরা গুনাহ আছে তাদের মধ্যে সমকামিতা একটি।এটি এতোটাই গর্হিত যে পুরো একটি জাতি পর্যন্ত এর কারণে মর্মান্তিকভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে।আল্লাহ আমাদের সবাইকে হেফাজত করুন।

আল্লাহ বলেন,

“আর আমি লুত(আঃ)কে নবুওয়াত দান করে পাঠিয়েছিলাম যখন তিনি তার সম্প্রদায়কে বলেছিলেন, ‘তোমরা কি এমন অশ্লীল ও কুকর্ম করছো যা তোমাদের আগে বিশ্বে আর কোন জাতি করে নি?’
নিঃসন্দেহে তোমরা নারীদের পরিবর্তে পুরুষদের দিয়ে তোমাদের যৌন ইচ্ছা নিবারণ করে নিচ্ছো।প্রকৃতপক্ষে তোমরা হলে সীমালঙ্ঘনকারী সম্প্রদায়।’

কিন্তু তাঁর জাতির লোকদের একমাত্র উত্তর ছিল এটাই যে, ‘এদেরকে তোমাদের জনপদ থেকে বের করে দাও, নিঃসন্দেহে এরা পবিত্র।’

অবশেষে আমি লুতকে(আঃ) ও তার পরিবারকে শাস্তি হতে রক্ষা করেছিলাম শুধুমাত্র তার স্ত্রী ছাড়া কেননা সে ছিল ধ্বংসপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত।

তারপর আমি তাদের ওপর মুষলধারে পাথরের বৃষ্টি বর্ষণ করেছিলাম।সুতরাং অপরাধীদের পরিণাম কি হয়েছিল তা লক্ষ্য করো।”

(সূরা আল-আরাফঃ৮০-৮৪)

এছাড়াও আরেক জায়গায় আল্লাহ বলেন,

“অতঃপর সূর্যোদয়ের সময় এক বিকট আওয়াজ তাদের পাকড়াও করলো।
আর আমি জনপদকে উল্টিয়ে উপর-নিচ করে দিলাম এবং তাদের উপর প্রস্তর-কঙ্কর নিক্ষেপ করলাম।

অবশ্যই এতে নিদর্শন রয়েছে পর্যবেক্ষণ সম্পন্ন ব্যাক্তিদের জন্য।
নিঃসন্দেহে সেগুলো(শহরের ধ্বংসস্তূপ) এখনও লোক চলাচলের পথের পাশে বিদ্যমান।”

(সূরা হিজরঃ৭৩-৭৬)

এইবার কিছু হাদিস নিয়ে আলোচনা করা যাক।

ইবনে আব্বাস(রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে মহানবী(সাঃ) বলেছেন, “লুত(আঃ) এর সময়কার লোকজন যা করতো তা যদি কাউকে করতে দেখো তাহলে তাকে এবং যার সাথে করা হয়েছে তাকেও মৃত্যুদণ্ড দান করো।”(আবু দাউদ,তিরমিজী ও ইবনে মাজাহ)

ইবনে আব্বাস(রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত আরেকটি হাদিস এসেছে সুনান আহমাদে।মহানবী(সাঃ) বলেছেন, “তার উপর আল্লাহর গযব পড়ুক যে লুত(আঃ) এর সম্প্রদায়ের লোকদের মত কাজ করে”এই কথা তিনি তিনবার উচ্চারণ করেছেন

সমকামীদের মৃত্যুদণ্ডের ব্যাপারে সাহাবীগণ একমত ছিলেন।কিন্তু মৃত্যুদণ্ডের পদ্ধতি নিয়ে ছিল মতভেদ
কেউ কেউ মনে করতেন যে ওদের আগুনে পুড়িয়ে মারাটাই শ্রেয় আবার কেউ কেউ ভাবতেন যে উঁচু কোন জায়গা থেকে ফেলে দিয়ে পাথর নিক্ষেপ করলেই যথেষ্ট।

সমকামিতার শাস্তির ব্যাপারে ৩ ধরনের মতামত সবচেয়ে বেশি আলোচিতঃ

প্রথমটি হল সমকামীর মৃত্যুদণ্ড অবধারিত।

বিবাহিত না অবিবাহিত তাতে কিছু আসে যায় না।এই মতকে সায় দিয়েছেন আবু বকর(রাঃ),আলী(রাঃ),খালিদ ইবনে ওয়ালিদ(রাঃ),ইবনে আব্বাস(রাঃ),আব্দুল্লাহ ইবনে জুবায়ের(রাঃ),ইমাম আহমাদ(রহঃ),ইমাম মালিক(রহঃ) প্রমুখ ব্যাক্তিবর্গ।

শাফেয়ী মাজহাবের সিদ্ধান্ত হল যদি সে বিবাহিত হয় তাহলে তাকে পাথর মারা হবে আর অবিবাহিত হলে চাবুক ঠিক যেমনটা জিনার শাস্তি হিসেবে প্রচলিত।

আবার ইমাম আবু হানিফা(রহঃ) মনে করতেন যে সমকামিতার শাস্তি জিনার শাস্তির মতো এতো কঠিন হওয়া ঠিক না এবং তা নির্ধারণ করার অধিকার তিনি বিচারককেই দিয়েছেন।

প্রথম মতামতটি যারা ব্যক্ত করেছেন, আপাতদৃষ্টিতে তা কঠোর বলে মনে হলেও এর পেছনে যে ব্যাখা রয়েছে তা কিন্তু বেশ জোরদার।তারা বলেন, লুত(আঃ) এর জাতিকে আল্লাহ যেভাবে পরীক্ষা করেছেন এর আগে অন্য কোন জাতির ক্ষেত্রে তা করেন নি।এই অপকর্মের জন্য তাদের ধাপে ধাপে শাস্তি দেওয়া হয়েছে, একবারে শেষ করে দেওয়া হয় নি।তাদের বাড়িঘর উল্টিয়ে উপর-নিচ করা হয়েছে, তাদের ওপর পাথর নিক্ষেপ করা হয়েছে, দৃষ্টিশক্তি কেড়ে নেওয়া হয়েছে, মাটি তাদের গিলে খেয়েছে ইত্যাদি।এসব ছিল যথেষ্ট অবমাননাকর।তাদের জঘন্য কৃতকর্মের জন্যই তাদের এ ভয়াবহ পরিণাম আল্লাহ নিশ্চিত করেছেন ও আমাদের সতর্ক করেছেন

একবার খালিদ ইবনে ওয়ালিদ(রাঃ) খুঁজে বের করলেন যে কোন এক আরবীয় গোত্রে এক লোক আছে যার সাথে নাকি অন্যান্য পুরুষরা যৌনকর্মে লিপ্ত হয়।তিনি খবর পাকাপোক্ত করে আবু বকরের(রাঃ) কাছে চিঠি পাঠালেন।এ নিয়ে সাহাবীদের মধ্যে পর্যাপ্ত আলোচনা হল।তারপর আলি(রাঃ) মত দিলেন যে ওই লোককে পুড়িয়ে মারা হোক এবং অবশেষে তাই করা হল।  

এখন কথা হল যার সাথে সমকামিতা করা হয়েছে তার কী হবে?এখানে আসলে দুইটি বিষয় দেখার আছে।

১।কাউকে যদি জোর করে বা প্রাণহানির ভয় দেখিয়ে এই কাজ করানো হয়, তাহলে সে মাজলুম হিসেবে চিহ্নিত হবে।অর্থাৎ সে নির্দোষ কারণ স্বেচ্ছায় সে এতে অংশ নেয় নি।তাই তার কোন শাস্তিও নেই।

২।যদি দ্বিতীয় ব্যাক্তি নাবালক বা উন্মাদ হয় তাহলে তার ক্ষেত্রেও কোন শাস্তি নেই।কিন্তু তাকে ভবিষ্যতে আরও সজাগ থাকতে হবে।

এই বিষয় দুটি সব আলেমদের কাছেই স্বীকৃত।

কিন্তু দ্বিতীয় ব্যাক্তি যদি একজন সমকামী হয় এবং নিজের ইচ্ছায় এই অপকর্মে লিপ্ত হয়ে থাকে তাহলে তার দণ্ডবিধি তো আগেই উল্লেখ করা হয়েছে।মোদ্দাকথা হল, সমকামিতার শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডকেই বেছে নেওয়া হয়েছে।এ ব্যাপারে সবাই একমত।শুধু বিতর্ক রয়েছে মৃত্যুদণ্ডের পদ্ধতি নিয়ে।
     

[দেখা যেতে পারে এই ফতোয়াটিও- https://islamqa.info/en/10050 ]


Wednesday, January 25, 2017

ফাঁদ (ষষ্ঠ পর্ব)


বিসমিল্লাহির রহমানীর রহীম ।

ফাগুনের দুপুর ।

রাফি সি এনজি থেকে নেমে ঠ্যালাভ্যানে উঠেছে বেশ কিছুক্ষন হল । দেশের বাড়ীতে ছুটি কাটাতে যাচ্ছে ও । দেশে অবশ্য  বহুদিন যায় না সে । এক দূর সম্পর্কের চাচার পরিবার ছাড়া কেউ আর নেইও দেশে । সবাই যে যার মতো ঢাকাতে সেটেল্ড। এতদিন পর  সে যে দেশে যাচ্ছে তার কারন তার পাশে বসা আপাদমস্তক বোরখায় মোড়ানো এই মানুষটা; তার স্ত্রী সুমাইয়া । সুমাইয়াকে নিজের দেশ দেখাতে নিয়ে যাচ্ছে সে । মাত্র দু’মাস হলো ওদের বিয়ে হয়েছে । দুজনের ঘোর যে এখনো কাটেনি সেটা বুঝতে তৃতীয়পক্ষের খুব বেশী বেগ পেতে হবেনা । দুজন দুজনার দিকে মাঝে মাঝেই যেভাবে ঘোর লাগা চোখে তাকাচ্ছে,চার চোখ এক হওয়া মাত্রই রাফি তার লাজুক চেহারা ঝট করে ফিরিয়ে নিচ্ছে  তা দেখে একটা পিচ্চিও চোখ বন্ধ করে বলে দিবে   মিয়া আর বিবির  জীবন ফাল্গুনের এই মায়াবী প্রকৃতির মতোই, রঙ্গীন ।
                                           

 বুড়াভ্যান চালক শামুকের গতিতে ভ্যানটা টেনে নিয়ে যাচ্ছে । ওদের দুজনের অবশ্য ভালোই লাগছে এতে । দুপুরটা অসম্ভব শান্ত । ১১ কেভি লাইনের ওপরে বসে একটা ঘুঘু তারস্বরে ডেকে দুপুরের এই অপার্থিব নিস্তব্ধতা দূর করার বৃথা চেষ্টা করছে । রাস্তার দুপাশের শিশু গাছ গুলো গার্ড অব অনারের ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছে । বসন্তের লিলুয়া বাতাসে সেই গাছগুলোর পাতা ঝরে ঝরে পড়ছে রাফি আর সুমাইয়ার ওপর । রাফি মাথার সবুজ টুপিটা  ঠিক ঠাক করে নিয়ে আস্তে করে হাত রাখলো সুমাইয়ার মোজা পড়া হাতটার ওপর, সুমাইয়া ঘুরে তাকালো তার দিকে, চার চোখ এক হলো , চোখে চোখে কথা শুরু হল এমন সময় বেরসিকের মতো কাছের একটা গ্রাম থেকে লাউডস্পীকারে চলতি একটা হিন্দি গান বেজে উঠলো । জমাট বাঁধা নিস্তব্ধতা ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেল, ঘুঘুটা চমকে  উড়ে পালালো । রাফি আর সুমাইয়াও চমকে উঠলো । রাফির হাতের ভেতর থেকে এক ঝটকায় হাত সরিয়ে নিল সুমাইয়া।

 স্বপ্ন ভঙ্গ হলো ওদের । নির্ঝরের স্বপ্ন ভঙ্গ ।

প্রচন্ড বিরক্তিতে ফোঁস করে একটা শ্বাস ছাড়লো রাফি । যে ব্যাটা গানটা বাজাচ্ছে তাকে হাতের কাছে পেলে ......

রাফির মনেই পড়লো না একসময় সেও ভরদুপুরে কিংবা গভীর রাতে লাউডস্পীকারে গান ছেড়ে আশেপাশের  লোকদের নাভিশ্বাস তুলে ফেলতো । তার জীবনটা এখন কার মতো গোছানো ছিল না। সে ছিল এক বাউন্ডুলে। তেল আর চিরুনির সংস্পর্শ থেকে বঞ্চিত মাথা ভর্তি ঝাঁকড়া চুল,হাতে বালা । হুমায়ুন গোগ্রাসে গিলতো, হিমু হয়ে খালি পায়ে হেঁটে বেড়াতো রাস্তায় । অষ্টপ্রহর গান শুনত সে । জন ডেনভার,ঈগলস,মান্না দে, হেমন্ত,অঞ্জন দত্ত,আর্টসেল,তাহসান ...... ।  জীবনের কোন লক্ষ্য ছিল না তার । ভাবতো বন্ধু, আড্ডা,গান, ট্যুর,মাস্তি এই তো জীবন ।

হৈচৈ করে বেড়ানো হাসিখুশী রাফির জীবনে হুট করেই বিশাল একটা বিপর্যয় ঘটে গেল । ফিজিক্সের প্রতীতির প্রেমে পড়েছিল সে প্রথম দেখাতেই ।  প্রতীতিও । ওদের রিলেশানটা ছিল খুবই গোপন । রাফির বন্ধুবান্ধব কেউই জানতো না ব্যাপারটা।

 প্রেম যখন পেকে টসটসে, প্রতীতি রাফির হাতে হাত রেখে ১০৮ বারেরও বেশী  জিজ্ঞেস করেছে আমাকে কখনো ছেড়ে চলে যাবে নাতো , তখন কানাডা থেকে এলো এক দমকা হাওয়া । সেই দমকা হাওয়ায় অচিন দেশের রাজকুমার প্রতীতিকে নিয়ে উড়াল দিল । বিদায় নিতে প্রতীতি, রবীন্দ্র সরোবরের সামনে দেখা করেছিল রাফির সঙ্গে । কেঁদে কেঁদে বলেছিল, “আমাকে ক্ষমা করে দিও,রাফি”। রাফি হেসেছিল । প্রতীতির চোখের পানি মুছে দিয়ে তার দুগালে নিজের দুহাত রেখে বলেছিল, “পাগলি মেয়ে একটা” ।  

তারপর কত দিন চলে গেছে । রাফি কত রাত নির্ঘুম কাটিয়ে দিয়েছে বিছানায় এপাশ করে করে । একটার পর একটা সিগারেট ধ্বংস করেছে । গভীর রাতে সাউন্ড সিস্টেম অন করেছে । মান্নাদে কেঁদে কেঁদে জানিয়েছে সে অনেকদিন দেখেনি তার প্রিয়াকে ,তাহসান বলেছে চাঁদের আলো কখনো তার হবে না । মাঝে মাঝে গিটার নিয়ে হলের সিড়িতে বসতো  রাফি। গাঁজায় দুটো দম মেরে গান ধরতো ‘গিভ মি সাম সানশাইন , গিম মি সাম রেইন ......’ । খাওয়া দাওয়া করতোনা , ক্লাসে যেত না , ক্লাস টেস্টগুলোও মিস করতো । তার রুমমেট, বন্ধু বান্ধব অনেকেই চেষ্টা করেছে তাকে বোঝানোর । বোঝেনি সে ।

বন্ধুরা সবাই হাল ছেড়ে দিয়েছিল । এমন সময় একটা ঘটনা ঘটলো যেটা রাফির জীবনের মোড় ঘুরে ঘুরিয়ে দিল ১৮০ ডিগ্রী ।

গাঁজা আর সিগারেটের গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে তার রুমমটে রুম ছেড়ে চলে গিয়েছিল । বেডটা কয়েকদিন ফাঁকাই পড়েছিল । সেই দিনগুলাতে রাফি আরো বেশী করে গাঁজা টানত । কয়েকদিন পরে সেই বেডে উঠলেন সিভিলের নাফিস ভাই । নাফিস ভাই এর মুখে একগাল দাঁড়ি, চোখে চশমা , ইয়েমেনি এক শায়খের মতো দেখতে অনেকটা । মুখে সব সময় স্মিত হাসি । প্রথম দেখাতেই মানুষটাকে খুব ভালো লেগে গিয়েছিল রাফির । রাফির বেহাল অবস্থায় খুব কষ্ট পেয়েছিলেন উনি ।

ঘন্টার পর ঘন্টা ধরে রাফিকে বুঝিয়েছেন উনি । রাফি তর্ক করেছে , মেজাজ হারিয়েছে মাঝে মধ্যেই , চিৎকার করে বলেছে , “আমাকে আমার মতোই থাকতে দিন না নাফিস ভাই। আপনারা হুজুর মানুষ , ভালোবাসার কি বোঝেন ?”

ভালোবাসার কি বুঝি! নাফিস ভাই স্মিত হেসে রাফিকে শুনিয়েছেন ভালোবাসার এক মহাকাব্যিক উপাখ্যান । শুনিয়েছেন মুহাম্মাদ খাদীজার প্রেমের কথা, শত বাঁধা বিপত্তির মুখেও দ্বীন প্রচারে মুহাম্মাদের দৃঢ়তা আর খাদীজার পাশে থাকার কথা । শুনিয়েছেন স্ত্রীর সঙ্গে মুহাম্মাদের দৌড় প্রতিযোগিতার গল্প, সওয়ারীর পিঠে উঠতে স্ত্রীকে সাহায্য করার জন্য হাঁটু গেড়ে বসে পড়ার গল্প । রাফি শুনেছে আর মুগ্ধ হয়েছে ।

এমনটাও হয়!

আস্তে আস্তে রাফির মধ্যে পরিবর্তন আসা শুরু হল । ঝাঁকড়া চুলে তেল চিরুনী পড়লো,সিগারেট খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দিল ,গাঁজা ছেড়ে দিল একেবারেই, শুক্রবার ছাড়াও মাঝে মাঝে মসজিদে যাওয়া শুরু করলো । প্রতীতির বিরহের মাত্রা হ্রাস পেতে শুরু করলো ।

একদিন নাফিস ভাই রাফিকে শোনালেন আশ্চর্য একদল তরুণীদের কথা ,আয়তনয়না যাদের চোখ, কোন মানুষ ও জ্বীন কখনো যাদের স্পর্শ করেনি । প্রবাল ও পদ্মরাগের মতো এই সব তরুণীদেরকে আল্লাহ্‌ (সুবঃ) নাম দিয়েছে হূর আল আঈণ । আল্লাহ্‌ (সুবঃ) এদেরকে নাকি এতো সুন্দর করে বানিয়েছেন যে এদের দিকে তাকিয়েই মানুষ নাকি বছরের পর বছর কাটিয়ে দিবে । তবু চোখ ফেরাতে পারবে না ।

“দেখ রাফি, প্রতীতির চেয়ে হাজার হাজার গুনে সুন্দরী হবেন জান্নাতে তোমার স্ত্রী। প্রতীতি যেমন তোমাকে ধোঁকা দিয়ে চলে গেছে, জান্নাতের স্ত্রী কখনোই তোমাকে ধোঁকা দিবেন না । প্রতিটা মুহূর্তে তোমাকে আগের মুহূর্তের চেয়েও বেশী ভালোবাসবেন । জান্নাতের স্ত্রীর হাতে হাত রেখে কার্তিকের নরম হলুদ আলোয় তুমি হেঁটে বেড়াতে পারবে ধানক্ষেতের আইল বেয়ে, অশত্থের গুড়িতে হেলান দিয়ে বসবে তুমি , তোমার স্ত্রী তোমার কাঁধে মাথা রেখে বসবে ঠিক তোমার পাশেই। সব রং নিভে যাবে । থাকবে শুধু অন্ধকার । পাশাপাশি বসবার ।

নাফিস ভাই এরপর রাফিকে দুইটা লিখা (http://bit.ly/2gqcbH8   , http://bit.ly/2khn5xA  ) পড়তে দিয়েছিলেন । এই দুইটা লিখা পড়ার পর প্রতীতির প্রতি যা ভালোবাসা ছিল তার এক কানাকড়িও আর থাকলো না রাফির মনে । কঠোর প্রতিজ্ঞা করলো জান্নাতের সেই মুহূর্তগুলো কিছুতেই মিস করা যাবে না । বদলে গেল রাফি । আমূল বদলে গেল ।

    
   
দ্বীন নিয়ে সিরিয়াস হবার পর একটা বিষয় খুব ভোগাতো রাফিকে । প্রতীতি যখন ছেড়ে চলে যায়  রাফিকে তখন বাস্তবতা থেকে হারিয়ে যাওয়ার জন্য সে গাঁজা টানতে শুরু করে , সেই সাথে সে ঘন্টার পর ঘন্টা পর্ণমুভি দেখা । নাফিস ভাইয়ের দেখা পাবার আগ পর্যন্ত সে পর্ণমুভির আসক্তি নিয়ে তেমন একটা মাথাঘামাতো না । কিন্তু পরে এই ব্যাপারটাতে সে ভেতর থেকে কুঁকড়ে যেতে থাকে । একদিন ঐ জঘন্য কাজটা করার পর রাফি মসজিদের পিলারের আড়ালে সিজদাহতে লুকিয়ে লুকিয়ে কাঁদছিল । সেটা দেখে ফেলেন নাফিস ভাই । তারপর কি করে যেন বুঝে ফেলেন রাফির পর্ণ আসক্তির কথা । একবিকেলে আসরের সলাতের পর রাফিকে নিয়ে মিজান মামার দোকানে যান নাফিস ভাই । লাচ্ছির অর্ডার দিয়ে শুরু করেন কথা .........


(আগামী পর্বে সমাপ্য ইনশা আল্লাহ্‌ )

পড়ুন আগের পর্বগুলো - 
ফাঁদ (প্রথম পর্ব ) - http://bit.ly/2bDKVOm
ফাঁদদ্বিতীয় পর্ব- http://bit.ly/2bL33YP
ফাঁদ’ (তৃতীয় পর্ব)  - http://bit.ly/2g8htV2
ফাঁদ(চতুর্থ পর্ব )   - https://goo.gl/ryLCb1

Monday, January 23, 2017

কুড়ানো মুক্তো (চতুর্থ পর্ব)


বিসমিল্লাহির রহমানীর রহীম । 

[বউয়ের ছবি ফেসবুকে আপলোডের লোভ যারা সামলাতে পারে না, তাদের উদ্দেশ্যে !]

১।
 ‘আমার হাসবেন্ড আমাকে অনেক আদর করে, যত্ন নেয়... আমার জন্য রান্না করে।’
নিউজফিডে এমন অনেক মন্তব্য বা অন্তরঙ্গ ছবি প্রায়ই দেখতে পাই। মন থেকে তখন বলি, ‘আলহামদুলিল্লাহ্‌, বারাকাল্লাহ। আল্লাহ্‌ যেন এমনি রাখেন।’ কিন্তু কতটুকু উচিত নিজেদের এরকম ছবি দেয়া বা একান্ত নিজেদেরকার কথাগুলো সবাইকে বলে বেড়ানো, তা অবশ্যই ভেবে দেখতে হবে। স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক খুব অনন্য, অন্য কিছুর সাথে তার তুলনা চলে না। কিন্তু তা নিজেদের ঘরের দরজার ভিতরেই আবদ্ধ থাকা ভালো।

 

বেপর্দা স্ত্রী হোক বা পর্দানশীল, কোন পুরুষ যদি তার স্ত্রীর সাথে তোলা অন্তরঙ্গ ছবি সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রচারের অনুমতি দেয়, তার মানে কিন্তু একটাই- তার ভালো লাগে অন্যরা তার স্ত্রীকে কামনার বস্তু মনে করলে, হয়ত কিছুটা গর্ববোধও হয়ে থাকে। শুনতে খারাপ শুনাচ্ছে হয়ত, কিন্তু ছবিগুলোতে বন্ধুদের মন্তব্য পড়লেই ব্যাপারটা স্পষ্ট বোঝা যায়- ‘ইসস, কবে পাব এরকম একটা বউ।’ অথবা ‘যা লাগতেসে না, হট কাপল।’, বা ‘আমাকেও খুঁজে দে রে এরকম বউ।’ আচ্ছা, আপনার সুন্দর বউটাকে আপনার থাকতে দিন না, সবার সাথে শেয়ার করার কি একান্ত প্রয়োজন? মনে রাখবেন, যে আপনার বউকে সুন্দর, হট, চরম বিশেষণে প্রশংসা করছে, সে নিশ্চয়ই মনে মনে সব রকম মাপ-জোঁক করে ফেলেছে- আপনার স্ত্রীর কোমরের বাঁক, দীঘল কালো চুল, সুকোমল বাহু- কিছুই তার চোখে বাদ পড়েনি। পর্দার প্রয়োজনীয়তা ঠিক এখানেই।


আমি আমার জীবনে প্রথমবার পর্দার গুরুত্ব বুঝলাম যেদিন আমি যেখানে পড়াতাম সেখানে এক ছাত্র, বেশী বয়স না, ১২-১৩ হবে, আরেকজনের সাথে কথা বলতে বলতেই আরেক ছাত্রর (তারই বন্ধু) মায়ের দিকে হা করে তাকিয়ে ছিল। মহিলা শালীন পোশাকই পরা ছিলেন, আমাদের সমাজে যাকে শালীন বলা হয়, তবে যখন উনি মাটি থেকে কিছু তোলার জন্য ঝুঁকলেন, তখন অতটুকু ছেলেটাও তাকিয়ে থাকল। বন্ধুর মা-র দিকেই যদি চোখ পড়ে, বন্ধুর বউ তো আরও আপন! এটা কিন্তু Natural instinct। আপনি দেখবেন, বাতাসে কারো কামিজ একটু এদিক ওদিক হলে চট করে সবার নজর ওখানে চলে যায়- আমার আপনারও, ছেলেদের দোষ দিয়ে কি লাভ? যেখানে সমাজের এই হীন অবস্থা, সেখানে আপনি নিজের বেডরুমের দরজা জনসম্মুখে উন্মুক্ত করে দিলে কিভাবে হবে?

হাসাদের ভয় তো আছেই ষোলোআনা- নজর লাগা তো কোন রূপকথার গল্প নয়। যে কারো নজরই লাগতে পারে। আমি ‘আলহামদুলিল্লাহ্‌’ বললাম হয়ত, কিন্তু কিঞ্চিত মন খারাপও করলাম, কই আমার স্বামী তো কোনদিন এরকম চাইনিজ জাপানিজ রান্না করল না আমার জন্য! ফলাফল? আমার সংসারেও অশান্তি, আপনারটাও নজর লেগে হয়ত বিষাদময় হয়ে গেল। যদি সত্যি সুখী হয়ে থাকেন, আল্লাহ্‌র কাছে শোকরানা করলেই যথেষ্ট। স্বামী স্ত্রী যখন নামাজ পড়বেন, তখন আল্লাহ্‌র কাছে মাথা নত করে তার রহমতের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবেন যাতে সারাজীবন এমন সুসম্পর্ক অটুট থাকে।

Save your wife from hungry eyes, Save yourself from Fitna.

২।

ভাইয়েরা আপনারা যারা নিজেদের স্ত্রীদেরকে পরপুরুষের চোখের মনোরঞ্জনের ব্যবস্থা করছেন, স্ত্রীদের ছবি ফেসবুকে দিয়ে সবাইকে দেখাচ্ছেন, স্ত্রীকে সাজিয়ে নিয়ে বাইরে বের হচ্ছেন আর পরপুরুষ ও লম্পটরা চোখকে পরিতৃপ্ত করছে সেসব প্রত্যেক পুরুষের “দাইয়্যুস” টার্মটির ব্যাপারে জ্ঞান থাকা আবশ্যক। একজন পুরুষ হাদিসের ভাষ্যমতে দাইয়্যুস সাব্যস্ত হবে যদি সে তার বোন, স্ত্রী, কন্যাদের বেপর্দাভাবে চলাফেরা করাকে বন্ধ না করে, তাদেরকে অশ্লীলতা, ব্যভিচার থেকে দূরে না রাখে। যেসব ভাইয়েরা এখনও দাইয়্যুসের কাতারে আছেন আজই তাওবা করুন, নিজের পরিবারের মহিলাদের বুঝান, দাওয়াহ দিন। তারপরও না বুঝলে বাধ্য করুন, কেননা তাদের ব্যাপারে আপনি জিজ্ঞাসিত হবেন। এমনকি আপনার জান্নাত জাহান্নামও অনেকাংশে তাদের উপর নির্ভর করছে। কারণ তারা আপনার অধিনস্ত।

রাসুলুল্লাহ()বলেছেন,

“তিনজন আছেন যাদের দিকে আল্লাহ সুবহানু তায়ালা কিয়ামাতের দিন নজর দেবেন না। যে পিতামাতার অবাধ্য, যে নারী বেশভূষায় পুরুষের অনুকরণ করে এবং দাইয়্যুস ব্যক্তি।”
[সুনান আন নাসাঈ: ২৫৬২, হাদিস সাহীহ]

ইমাম আহমাদের বর্ণনাকৃত অন্য আরেকটি সাহীহ হাদীসে ‘আল্লাহ নজর দেবেন না’ এর সাথে এসেছে দাইয়্যুস ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। [মুসনাদে আহমাদ]

রাসুলুল্লাহ() আরও বলেছেন, “আল্লাহ প্রত্যেক আদম সন্তানের জন্যে তার অংশের অনিবার্য জিনা লিখে রেখেছেন, হোক সে তার ব্যাপারে জ্ঞাত বা অজ্ঞাত। চোখের জিনা হল দৃষ্টিপাত করা (যে দিকে বা যার দিকে দৃষ্টি দেবার অনুমতি নেই সেদিকে দৃষ্টিপাত করা), জিহ্বার জিনা হল উচ্চারণ করা (যা উচ্চারণ করা বা বলা বৈধ নয়)। আর নফসের ইচ্ছা জাগে (জিনার জন্যে) এবং গুপ্তাংগ তা বাস্তবতায় রূপ দেয় অথবা তা অস্বীকার করে।“ [সাহীহ বুখারীঃ ৬৬১২]

উলামায়ে কিরামের মতে মুখের জিনা, চোখের জিনা, হাতের জিনা, পায়ের জিনা সবই জিনার দরজা আর অনস্বীকার্য অংশ। অতএব যে ব্যক্তি তার স্ত্রীকে এইসব জিনা থেকে বাধা দেবে না, সে ব্যক্তিও দাইয়্যুসের কাতারে পরে যাবে। মহান আল্লাহ আমাদেরকে দাইয়্যুস হওয়া থেকে হিফাজত করুন এবং মা বোনদের যথাযথভাবে পর্দা করারতাওফিক দান করুন।

 ৩ ।

//আমার স্ত্রী সর্বাবস্থায় আমারই স্ত্রী। আমার স্ত্রীর সৌন্দর্য উপভোগ ও অবলোকনের পূর্ণ অধিকার একমাত্র আমারই। যে কোন স্ত্রীর রূপ ও ভূষণ-সজ্জার সৌন্দর্য-দর্শনের একমাত্র হকদার সেই মহিলার স্বামী। এই যদি হয়ে থাকে সর্বজন স্বীকৃত সত্য, তাহলে আমার স্ত্রীর চেহারা দশজনকে আহবান করে দেখাবার কোন প্রয়োজন পড়ে না। পকেটের পয়সা খরচ করে পত্রিকায় এ্যাড ছাপিয়ে পরোহ্মভাবে এ কথা বুঝবার-ও তো দরকার পড়েনা যে, দেখ দেখ দুনিয়ার মানুষ আমি কি একখানা চীজ পেয়েছি।//

(তাহলে ফেসবুকে যে নব দম্পতিদের ছবি আপলোডের হিড়িক বয়ে যায় তার কী হবে!)

//নিজের স্ত্রীকে স্বশরীরে বা তার স্ব-ছবিকে হাজার হাজার লোকের চোখের সামনে তুলে ধরলে অনেকে হা-পিত্তেস করবে, টীকা টিপ্পনী কাটবে। বলুনতো এসব কেমন করে বরদাস্ত করা যায়? মান ইজ্জত ও সৌন্দর্যের নিরাপত্তার জন্য ইসলাম পর্দা প্রথার যে ব্যবস্থা রেখেছে, সেই ব্যবস্থার বাইরে কদম রাখলেই নানা কথা শোনতে হয়, নানা কেলেংকারী ডেকে আনা হয়। নানা অঘটন ঘটে।//

//সদ্যবিবাহিতা স্ত্রীর চেহারা কাগজে ছাপিয়ে/ ফেসবুকে আপলোড করে কি লাভ? তিনিতো দশের মনোরঞ্জনের জন্য আমার স্ত্রী হয়ে আমার ঘরে আসেননি। তাছাড়া তিনি কোন বাজারী পণ্যও নন যে, তাকে বাজারে পরিচিতি করাতে হবে বাজারজাত হওয়ার জন্য। হাঁ, এমন কোন চিন্তা কারো মনে প্রচ্ছন্নে উঁকি দিয়ে থাকলে অবশ্য ভিন্ন কথা, কিন্তু তা যদি না হয়ে থাকে, তাহলে নিজের সুন্দরী বউয়ের এ্যাড ছাপিয়ে বাজারী সওদার মত দশজনের দৃষ্টি আকর্ষনের কি অর্থ থাকতে পারে? পাবলিসিটির নেশা যদি একান্তই না কাটে, তাহলে ছবি ছাড়া বিয়ের সংবাদটা সংবাদ হিসেবে ছাপিয়ে দিলেই তো হয় সুখী দাম্পত্য জীবনের দোয়া চেয়ে।//

//নিজের ভোগের বস্তুকে এত পাবলিসিটি দিলে স্বাদ আর কিছু থাকে না। যার কাছে যে বস্তু যত বেশী দামী, সেই বস্তুর মালিক তত সযতনে তা সংরহ্মণ করে থাকেন। যে মালিক তার প্রিয় দামী বস্তুর কদর বুঝে না, সে এই মূল্যবান বস্তুটি এখানে সেখানে ফেলে রাখে, হাজার জন দেখে, নাড়াচাড়া করে, হাজার কথা বলে। এসব কথার মাঝে অশ্লীল মন্তব্যও থাকে বেশী। পাবলিসিটি আর প্রদর্শনী করলে মস্তানেরা কাছে ভিড়বার সুযোগ পায়। অতএব বিয়ের পরিচ্ছন্ন মানসিকতা নিয়ে যারা বিয়ে করেছেন, তারা নিঃসন্দেহে উত্তম কাজ করেছেন। এখন সুন্দরমত ঘর সংসার করুন। ঘরে বসে নিরিবিলি নতুন বউয়ের সংগে নতুন সংসার গড়ার আলাপ শুরু করুন। এ নিয়ে বাহিরে ডুগডুগি বাজাবেন না।//

৪।

*ফেসবুকে ও ব্লগে ছবি আপলোডের নেশায় দম্পতিরা

আপনি জানেন কি? কোথাও গেলেই ছবি তোলার এবং তা ফেসবুকে আপলোডের চিন্তা যদি আপনার মনে জাগে, তাহলে তা একটা মানসিক রোগ। আপনি এই রোগের উচ্চমানের রোগী নন তো? আপনি দু'জনের অন্তরঙ্গতা এখন ফেসবুকে চেনা অচেনা সবাইকে দেখিয়ে লাইক চাচ্ছেন? নাকি চাইছেন আপনার স্ত্রীকে সবাই দেখুক, দেখে মন্তব্য করুক আপনি সুন্দরী পেয়েছেন বউ। এই রূপ-চেহারা আর কয়দিন ভাই? ৫-৭ বছর পরে আর ছবি তুলতেও লজ্জা পাবেন এই চিন্তাগুলা মাথায় থাকলে। আর অল্প কিছু বছর পরেই আপনাদের দু'জনকেই সাদা কাপড়ে তুলে মাটির নিচে রেখে আসবে গন্ধ লাগবে বলে... এমন কিছু করতে যাবেন না, যার খারাপ প্রতিফল সেই কবরে আপনাকে ধাওয়া করবে...

আপনাদের দু'জনার জড়াজড়ি আর গলাগলি ছবি দেখে কেউ সুখী বলে ভেবেছেন? আপনি হয়ত জানেন না শয়তানের কাজ। আপনি হয়ত জানেন না ওয়াসওয়াসা কেমন হয়। আপনার কল্পনাই নেই আপনার খুব কাছের কারো কতটা হিংসার পাত্র আপনি হয়ে গেলেন। অথচ আপনি নিজেই জানেন, এই ছবি দেখে লোকে যতটা সুখী ভাববে আপনাদের, ততটা সুখী আপনারা নন।

প্রেম জিনিসটা দু'জনের মধ্যেই রাখুন। পারলে ইমাম আহমাদের মতন করে ৩০ বছর পরে গিয়ে বলবেন স্ত্রীর মৃত্যুর পরে যে তার স্ত্রীর সাথে তার কোনদিন ঝগড়া হয়নি। তারা একজন খেপে গেলে আরেকজন চুপ করে থাকতেন। প্রেম বুঝতে চান? তাহলে এই হলো প্রেম, ভালোবাসা।

ছবি প্রদর্শনের মানসিক রোগ থেকে মুক্তি পাক সদ্য বিবাহিত দম্পতিরা। ভালোবাসা শুরুর দিকে বেশি থাকে, এসময়ের বিষয়গুলোকে মন দিয়ে গেঁথে নিন, তাতে সামনের সময়গুলোতে তা অনুপ্রেরণা দিবে, দু'জনের সম্পর্ক মধুময় হবে। এখন লোককে দেখিয়ে বেড়ালে আপনাদের ভালোবাসার গোপন আকর্ষণ নষ্ট হবে পরস্পরের কাছে। সাবধান হোন সময় থাকতেই।

৫।

কেন রে ভাই, বউয়ের ছবি কেন আপলোড দেয়া লাগবে? আপনার বউকে দেখে আমাদের লাভ কী? উল্টো আপনার আমল নষ্ট হচ্ছে, গুনাহ হচ্ছে, বউ যতই পর্দায় থাকুক না কেন খামাকা আমাদেরকে এইসব ছবি কেন দেখাচ্ছেন, আপনি বিয়ে করেছেন, নতুন বউ পেয়েছেন, মনে আনন্দ লাগছে বুঝতে পারছি, ভাই এটা আপনার ব্যক্তিগত আনন্দ, আপনার এই আনন্দ আল্লাহ্‌ আরো বাড়িয়ে দিন, মৃত্যু পর্যন্ত আল্লাহ্‌ আপনাকে আপনার বউ সমেত আনন্দের মধ্যে রাখুন সেই দুয়া করি। কিন্তু আপনার বউকে দেখে আমাদের কোন কাজ নেই ভাই, এটা একেবারেই অপ্রয়োজনীয় এবং গুনাহর কাজ।

courtesy : - * ১, -Nabila Noshin Shejuti
                    ২ - Sabet Bin Mukter                 
                 * ৩- মরহুম জহুরী,
                    ৪- সাফওয়ান
                    ৫ - Abdullah Russel

 [সংকলনে - বিবাহ একটি উত্তম বন্ধুত্ব (https://goo.gl/0kBV30) ডেস্ক ]

চলবে ইনশা আল্লাহ...... 

পড়ুন প্রথম তিনটি পর্ব -
প্রথম পর্ব- https://goo.gl/RSriJy 
দ্বিতীয় পর্ব- https://goo.gl/zImLKR 
তৃতীয় পর্ব- https://goo.gl/5sd3tc 



Monday, January 16, 2017

এরই নাম স্বাধীনতা (তৃতীয় পর্ব) !!!


বিসমিল্লাহির রহমানীর রহীম।

#
ম্যানেজমেন্টে এমবিএ শেষ করে একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি নেন মনিকা (ছদ্ম নাম) চাকরিতে যোগদানের পর থেকেই এমডি তাকে কারণে-অকারণে রুমে ডেকে নিয়ে বসিয়ে রাখতেন। প্রায়ই রাতে ফোন দিয়ে অপ্রয়োজনীয় কথা বলতে শুরু করেন। একপর্যায়ে তিনি অফিস কক্ষে মনিকার হাত ধরার চেষ্টা করেন এবং আপত্তিকর প্রস্তাব দেন। মনিকা ভেবে দেখব বলে এমডির রুম থেকে বের হয়ে আসেন এবং ওই দিনই চাকরি ছেড়ে দেন।
.
একটি করপোরেট অফিসে চাকরি নেন শ্রাবন্তি  কিছুদিন পর থেকেই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রায়ই অফিস ছুটির পর নানা অজুহাতে তাকে ফোন দিতে থাকেন। একপর্যায়ে শ্রাবন্তি তার ফোন রিসিভ করা বন্ধ করে দেন। পরদিন ওই কর্মকর্তা তাকে সাফ জানিয়ে দেন তার অফিসে কাজ করতে হলে তার সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক রাখতে হবে। শ্রাবন্তি এতে রাজি না হওয়ায় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ওই দিনই কাজে পারদর্শী না হওয়ার অজুহাত দেখিয়ে শ্রাবন্তিকে চাকরিচ্যুত  করেন ।
.
# 
গ্রামীণফোনে যৌন হয়রানি, সম্ভ্রম রক্ষায় চাকরি ছাড়ছে নারী! গ্রামীণফোনের সিডিএম শাখার একজন শীর্ষ কর্মকর্তা এডমিনের ট্রেনিং শাখার এক নারী কর্মকর্তার রূপ-গুণে মুগ্ধ হন। সিডিএম শাখার ওই কর্মকর্তা ছিলেন বিবাহিত। আবার ট্রেনিং শাখার ওই নারী কর্মকর্তাও ছিলেন বিবাহিত। বিষয়টি জানার পরও ওই নারী কর্মকর্তাকে অনৈতিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেন ওই কর্মকর্তা। ওই নারী কর্মকর্তা এমন আবেদন প্রত্যাখ্যান করেন। এরপরই তার উপর খড়গ নেমে আসে। কারণে অকারণে তার ডিউটি টাইম নির্ধারণ করা হয় সন্ধ্যার পর থেকে। রাতে অফিসে ওই নারী কর্মকর্তার ওপর চলে বিভিন্ন ধরনের মানসিক নির্যাতন। এতেও ওই নারী কর্মকর্তা দমে যাননি। একপর্যায়ে তাকে বরিশাল আঞ্চলিক অফিসে বদলি করা হয়। স্বামী-সন্তদান ঢাকায় ফেলে বরিশাল যেতে চাননি তিনি। ফলে একটা পর্যায়ে বাধ্য হয়েই ওই নারী কর্মকর্তা চাকরি থেকে ইস্তফা দেন। এতে তিনি সব ধরনের আর্থিক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন। গ্রামীণফোন থেকে এভাবে নির্যাতনের মুখে চাকরি ছেড়ে আসা একজন নারী কর্মকর্তা এ সব কথা বলেন। শুধুই একটি ঘটনা নয়, এমন অহরহ যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোনে।
.
তাছাড়া, গ্রামীণফোনে একশ্রেণির কর্মকর্তা আছেন যারা নারী কর্মীদের কাছ থেকে ‘ভাইয়া’ ডাক শুনতে পছন্দ করেন। কারণে অকারণে তাদের সঙ্গে আড্ডা দিতে চান। দুপুরে বা বিকালে এক সঙ্গে খাবারের অফারও দেয়া হয়। বিভিন্ন ধরনের আড্ডায় বড় কর্মকর্তাদের মনোরঞ্জন না করতে পারলে, তাকে পরবর্তীতে ডিউটি টাইম পরিবর্তন করে রাতে দেয়া হয়। এতে বিপাকে পড়ে অনেকে নারীই চাকরি ছাড়েন বা ‘ভাইয়া’দের খুশি করার চেষ্টা করেন। এ ছাড়া রাতের বেলা গ্রামীণফোনের কোনো অনুষ্ঠান থাকলে সেখানে নারী কর্মকর্তাদের উপস্থিত হতে অনেকটাই বাধ্য করা হয়। অতিথিদের সঙ্গে নারী কর্মকর্তাদের মদপান করতেও উৎ্সাহিত করেন ঊর্ধ্বতনরা।
.
ঢাকার বাইরে আঞ্চলিক অনুষ্ঠান, সভা ও প্রচারণার অংশ হিসাবে সুন্দরী নারী কর্মকর্তাদের বেশিরভাগ সময় সেখানে পাঠানো হয়। ওইসব স্থানে হোটেলে রাত্রিযাপনে গ্রামীণফোনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নারীদের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে বিদেশ থেকে ঊর্ধ্বতনরা এলে তাদের সঙ্গে অফিসিয়াল প্রোগ্রামের নাম করে ঢাকার বাইরে পাঠানো হয় সুন্দরী নারীদের। কিছুদিন আগেও এক নারী কর্মীকে ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তার সঙ্গে কক্সবাজার পাঠানো হয়। সেখানে ওই কর্মকর্তা একটি বিলাসবহুল হোটেলে নারী কর্মকর্তাকে রাতে সুইমিং করার প্রস্তাব দেয়। ওই নারী কর্মকর্তা সুইমিং কস্টিউম পরে আসলেও তাতে ওই কর্মকর্তার মন ভরেনি। তিনি ওই নারীকে আরো শর্ট পোশাক পরে আসার প্রস্তাব দেন। বাধ্য হয়ে ওই নারী কর্মকর্তা সেদিন রাতে শর্ট পোশাক পরে সুইমিং করেন। ঢাকায় ফিরে ওই নারী চাকরি থেকে ইস্তফা দেন।
.
এভাবে মানসিক নির্যাতন সহ্য করেই অনেক নারী এখনো চাকরি করে যাচ্ছেন গ্রামীণফোনে। আর যাদের উপর নির্যাতনের পরিমাণ বেশি তাদের অনেকেই চাকরি ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অফিস চলাকালীন সময়ে গ্রাামীণফোনের নারী কর্মকর্তাদের ড্রেস কোড মেনে চলতে হয়। বিশেষ করে পশ্চিমা ঘরানার পোশাক বাধ্যতামূলক করা হয় সুন্দরী নারী কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে। যদিও গ্রামীণফোনে এ ধরনের ড্রেস কোড নেই। কিন্তু গ্রাামীণফোনে তথাকথিত শীর্ষ কর্মকর্তারা তাদের মনবাঞ্ছা চরিতার্থ করতে, ইচ্ছা করেই নারী কর্মকর্তাদের ওপর প্রগতিশীলতার নামে ড্রেসে কোড চাপিয়ে দেয়। আবার রাজধানী বা রাজধানীর বাইরে কোনো অনুষ্ঠানে নারী কর্মকর্তাদের পশ্চিমা ধাঁচের ড্রেস কোড থেকেও ছোট পোশাক পরতে বাধ্য করা হয়। নারী কর্মকর্তাদের বলা হয়, ‘কর্পোরেট কালচারে এ সব মেনে চলতে না পারলে এখানে চাকরি করা যাবে না।’
.
দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে কর্মস্থলে নারীর উপস্থিতি এখন পুরুষদের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। তবে কর্মস্থলে নারীর উপস্থিতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে যৌন হয়রানির ঘটনাও। যদিও কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির কথা খুব কমই প্রকাশ হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নারীরা সংকোচ, চাকরি হারানোর ভয়, মানসম্মানের ভয়ে বিষয়গুলো গোপন রাখার চেষ্টা করেন।
.
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের এক হিসাবে দেখা গেছে, ২০১৩ সালে ২৯ জন নারী কর্মক্ষেত্রে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এ সংখ্যা ২০১২ সালে ২৫ জন, ২০১১ সালে ২৮৭ জন, ২০১০ সালে ৩৭ জন এবং ২০০২ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ১ হাজার ১৩৭ জন।

তবে মহিলা পরিষদের এই হিসাব শুধু পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্ট থেকে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির ঘটনা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রকাশিত হয় না।
.
কথা হয় নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবিরের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘কর্মক্ষেত্রে প্রায় সব ধরনের প্রতিষ্ঠানেই নারীরা যৌন হয়রানির শিকার হন। একজন নারীর পেশার সঙ্গে তার রুটি-রুজি জড়িত। তাই সমস্যা হলেও তা অনেকে ছেড়ে আসতে পারেন না।
.
গার্মেন্টস কারখানাগুলোয় অসংখ্যা নারী প্রতিনিয়ত যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। আইনে আছে সকাল ৭টার আগে ও রাত ৮ টার পর গার্মেন্টসে নারী কর্মীদের রাখা যাবে না। কিন্তু মালিকরা শিপমেন্টের কথা বলে গভীর রাত, এমনকি সারা রাত গার্মেন্টসে থাকতে বাধ্য করেন। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের গবেষণায় দেখা যায়, ৩০ শতাংশ নারী শ্রমিক নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
.
একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরিরত শাম্মী আখতার বলেন, ‘নামিদামি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আকার-ইঙ্গিতে কুপ্রস্তাব দেন। দূরে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলেন। প্রলোভন দেখান পদোন্নতির। বিশেষ করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ফ্রন্ট ডেস্ক, রিসিপশন এবং দ্রুত পদোন্নতির সুযোগ রয়েছে এমন পদগুলোয় চাকরি করতে গেলে নারীদের বেশি বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। তবে প্রমাণ না থাকায় ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করতে পারেন না।
.
সূত্রঃ 
.
চায়নাঃ
২০১৩ সালের শরতে চালানো এক জরিপ অনুসারে ফ্যাক্টরীতে কাজ করা শতকরা ৭০ জন নারী জানিয়েছেন তাঁরা কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরণের যৌন নির্যাতনের স্বীকার  হয়েছেন ।
 প্রতি চারজনের একজন বলেছেন তাঁরা খুব ফোনে অপমানিত হয়েছেন বা পরনোগ্রাফিক মেসেজ পেয়েছেন , প্রতি দশজনের একজন কর্মক্ষেত্রেই কুপ্রস্তাব পেয়েছেন এবং শতকরা ১৫ জন নারী চাকুরী ছেড়ে দিয়েছেন  যৌন নির্যাতনের কারণে ।
Leta Hong Fincher  একটি বই লিখছেন ‘Leftover’ Women: The Resurgence of Gender Inequality in China’ এই নামে । তিনি মন্তব্য করেন ,“ যৌন নির্যাতন চায়নার খুবই সিরিয়াস একটি সমস্যা । কোথায় নেই এটি ? সার্ভিস ইন্ডাস্ট্রি, শিক্ষাক্ষেত্র, ফিন্যান্স ... কোথায় নেই ?
.
কোন মহিলা নির্যাতিত হবার পরে যদি অফিসে অভিযোগ পেশ করেন , বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই তার অভিযোগ গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয়না”।  
.
হংকংঃ
"প্রতি পাঁচজন নারীকর্মজীবির মধ্যে একজন কর্মক্ষেত্রে যৌন নির্যাতনের স্বীকার হন । নির্যাতনের স্বীকার হওয়া নারীদের প্রায় একতৃতীয়াংশ এ ব্যাপারে কিছুই করেন না" । 
- Equal-rights watchdog
.
কর্মক্ষেত্রে যৌন নির্যাতন খুবই কমন একটা ঘটনা”
-  Convenor of the Equal Opportunities Commission's policy and research committee John Tse Wing-ling said yesterday.
.
“নারীদেরকে কর্মক্ষেত্রে এমন পোশাক পড়তে ‘বাধ্য’ করা হয় যা যৌন নির্যাতনকে আরো উস্কে দেয় । বস সবসময়  তার কর্মচারীদের বলেন, ‘তোমাদের কাজ কাস্টোমারদের সার্ভিস দেওয়া , তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার জন্য তোমাদের বেতন দেওয়া হয়না । কাজেই মুখ বুজে সব মেনে নাও ”
-      - Yu Mei-wan, Confederation of Trade Unions

.
.
জাহেলিয়ায়েত যুগে যখন সমাজের চোখে নারী আর পশুর মধ্যে কোন পার্থক্য ছিলনা, নারীরা ছিলই কেবলি ভোগ্যপন্য ,তখন ইসলাম এসে নারীকে দিয়েছিল প্রকৃত মুক্তির স্বাদ । মুসলিমরা নারীকে দিয়েছিল রাণীর মর্যাদা ।আর স্বাধীনতার মুলো ঝুলিয়ে  পাশ্চাত্য নারীদেরকে ঘর থেকে বের করে এনে  বানিয়েছে যৌন দাসী  এরপরেও পাশ্চাত্য আর তাদের চামচারাই নাকি  নারীদের মুক্তিদাতা ! এরাই নাকি নারীকে দিয়েছে প্রকৃত মর্যাদা !
চলবে ইনশা আল্লাহ্‌......
.
#নারীস্বাধীনতা
#একেই_বলে_সভ্যতা
# সূর্য_তোমার_কমছে_আয়ু
.
পড়ুন প্রথম দুইটি পর্ব -  
প্রথম পর্ব - https://goo.gl/CkM5LO
 দ্বিতীয় পর্ব- https://goo.gl/LknhGH