Monday, January 25, 2016

“তোমরা কী এমনি এমনি জান্নাতে চলে যাবে ?"

বিসমিল্লাহির রহমানীর রহীম।  



মাঝে মধ্যেই  পুরোনো এক বন্ধু   ফোন  করে  কুশলাদি জানতে চায় উষ্ণ কন্ঠে । সেদিন দুপুরের দিকে ফোনে  কথা হচ্ছিল তার সঙ্গে। কন্ঠটা একটু  ভার ভার মনে হলবুঝলাম মন খারাপ। কি হয়েছে জানতে চাইলাম

বন্ধু যা বলল তার সারমর্ম হল তার ফ্রেন্ড সার্কেলের সবাই (ছেলে মেয়েবন্ধু আমার ততোটা প্র্যাক্টিসিং না ) কমবেশি ভালবাসার জোয়ারে গা ভাসিয়েছে    রেস্টুরেন্টের আলো আঁধারিতে হাত সাফাই,  পার্কে বাদাম খাওয়বা রিকশায় বাতাস    খাওয়া এসব ওরা নিয়মিতই করে বেড়ায় ।    মাঝে মাঝে   ভালবাসার সম্পর্ককে  চাঙ্গা করতে কেউ কেউ হয়তো  লিটনের ফ্ল্যাট থেকেও ঘুরে  আসে । এরকম অস্থির পরিবেশে  থাকা  সত্ত্বেও বন্ধুর গায়ে অশ্লীলতার  বাতাস সেরকম লাগেনি । এরকম  পরিবেশে সে কতদিন  ভালো থাকতে পারবে সে জানে নাভার্সিটি লাইফের একেবারে শেষে এসে তার পক্ষে  ফ্রেন্ড সার্কেল থেকে বের হয়ে যাওয়াও সম্ভব না ; গ্রুপ স্টাডি করে একসঙ্গে ।    আমার কাছে জানতে চাইলো  এখন সে কী করবে ? চুপ করেই থাকলাম । কিইবা বলার আছে আমার ?  এই দেশে এই সময়   এই প্রশ্নের  যে কোন উত্তর নেই     

বুকের একেবারে গভীর থেকে উঠে আসা বড় বড় দীর্ঘশ্বাস গুলোর আড়ালে সে  চেষ্টা করছিল তার কষ্ট গুলো লুকিয়ে রাখার কিন্তু পারলো কই?  সে শুধু একা নয় , তারমতো অনেকেই  চারপাশের সস্তা ভালোবাসার ছড়াছড়ির মাঝেও নিজেকে বাঁচিয়ে রাখ চায়, স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে অসহায়ের মতো  একা একা লড়ে যায় এই হাইপার সেক্সুয়ালাইজড সমাজটার বিরুদ্ধেতাদের পবিত্র থাকার আকুতিগুলো , হৃদয়ের আর্তনাদগুলো চারদেয়ালের মাঝেই থমকে যায় । ভোগবাদের জোয়ারে গা ভাসানো এই সমাজটার  সময় নেই এই ছেলেগুলোর কষ্টগুলো বুঝতে চেষ্টা করার , আর্তনাদগুলো শোনার । কিন্তু পরম করুণাময়  সাত আসমানের উপর থেকে নিশ্চয়ই দেখেন এই ছেলেগুলোর হৃদয়ের রক্তক্ষরণ । সিজদাতে কেঁদে কেঁদে বুক ভাসানো এই ছেলেগুলোর চোখের পানির  প্রতিদান  একদিন নিশ্চয়ই  তিনি দিবেন। ইনশা আল্লাহ ।

এই হৃদয়হীন সমাজটা এই ছেলেদের কষ্টগুলো না বুঝুক , আল্লাহ (সুবঃ) অবশ্যই বোঝেন এই ছেলেদের কষ্ট গুলো ।এই ছেলেগুলো তাঁরই উপর ভরসা করে এবং তাঁর কাছেই  প্রতিদান আশা করেআর যে ব্যক্তি আল্লাহ’র (সুবঃ) ওপর ভরসা করে তাঁর জন্য তিনিই যথেষ্ট।
 এক  ভাইয়ের সঙ্গে একবার কথা হচ্ছিল ঈদের দিন কে কীভাবে মজা করে এইগুলো নিয়ে।আমাদের জেনারেশনের ছেলেমেয়ে  কোন একটা উপলক্ষ পেলেই হয় – সেটাকে ভ্যালেন্টাইনডে বানিয়ে ফেলতে ভুল করে না ।  ভাই বলছিলেন – ঈদের বিকেলে রিকশায় জোড়ায় জোয়ায় কপোত কপোতী  দেখে  ভীষণ  মন খারাপ হয়ে যায় তাঁর । আমাকে  জিজ্ঞাসা করেছিলেন, 'তোমার মাঝে মাঝে খারাপ লাগে না , ভেতরটা   ফাঁকা ফাঁকা লাগে না'? 
আমি বলেছিলাম, 'হ্যাঁ ভাইচারপাশের এইসব সস্তা ভালোবাসার ছড়াছড়ি দেখে ভেতরটা খাঁ খাঁ করে একজনের জন্য
ভাইকে সেদিন বলা হয়নি  এই একাকী থাকার জন্য আমার যতটা না খারাপ লাগে তারচেয়েও বেশি খারাপ লাগে  আল্লাহর ঐসব অবুঝ  বান্দার জন্য, যারা শয়তানের ধোঁকায় পড়ে একটা হারাম রিলেশানে জড়িয়ে আছে , বিনোদনের নামে পর্নমুভি,আইটেমসং এই টাইপের জিনিসগুলো  নিয়মিত দেখছে । ফেসবুকে নামীদামি রেস্তোরায় চেকইন, জানুপাই , বেবীপাই , কুট্টুস ক্যাপশনের কাপল সেলফি  দেখে  মনে হতে পারে  এরা বোধহয় বেশ সুখেই আছে । শান্তিতে আছে । আসলে এদের মনে  এতটুকুও শান্তি নেই । বাবা মার হাতে  ফোনে কথা বলতে যেয়ে ধরা পড়ে  যাবার টেনশন , বিএফ জিএফের সাথে নিয়মিত দেখা করার ঝামেলা , রেস্টুরেন্ট বিল , এই সেই হাবিজাবি নিয়ে এদের প্রচুর টেনশানে থাকতে  হয় । আল্লাহ’র (সুবঃ) আইনকে অমান্য করার জন্য  আল্লাহ এদের অন্তর অশান্ত করে দেন । আর বিয়ের পরে তাদের সংসারে শুরু হয় আরো অশান্তি ।  

এই সব অবুঝ ভাইবোনেরা যদি জানতো  হারাম রিলেশান থেকে দূরে থাকা ভাইবোনদের অন্তর গুলো কতটা শান্ত! আল্লাহ কি পরিমান সকীনা ঢেলে দিয়েছেন সেই ভাইটির অন্তরে যিনি রাস্তায় চলাফেরা করার  সময় শুধুমাত্র আল্লাহর ভয়ে চোখের হেফাজত করেন! তারা যদি উপলব্ধি করতে পারতো  সেই বোনটির অন্তরের প্রশান্তি   যিনি শীতের গভীর রাতে ঘুম থেকে উঠে তাঁর রবের সিজদাতে যেয়ে দু’আ করেন – তার রব যেন তাকে এমন একজন জীবন সঙ্গী দান করেন  যিনি তাঁর চোখ শীতল করবেন।     

ফিতনায় ভরপুর এই যুগে নিজের নফসকে সংযত করা বড় কঠিন ভাই । আমরা বোধহয় সেই সময়ে চলে এসেছি যখন  রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর সুন্নাহ অনুসরণ করা হাতে জ্বলন্ত অঙ্গার নিয়ে থাকার চেয়েও বেশি কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে ।  চারপাশের সব কিছুই ভেতরের প্রবৃত্তির  আগুন জ্বালানোর জন্য যথেষ্ট । বিল বোর্ড, বিজ্ঞাপন , নাটক, সিরিয়াল, মুভি , পত্রিকা সব কিছুতেই নগ্নতা আর বেহায়াপনার বিচরণ । শয়তান তার সকল হাতিয়ার  ব্যবহার করে আমাদের সমাজে অশ্লীলতার প্রসার ঘটাতে চাচ্ছে এবং তাতে সে সফলও । সমাজের বেশিরভাগ মানুষই তার ফাঁদে পা দিয়েছে । তাই  বলে তুমি ,আমিও কি শয়তানের ধোঁকায় পড়ে যাব?

ভাই, হারাম রিলেশান জিনিসটা শয়তান আমাদের কাছে শেয়ারিং, কেয়ারিং , রোমান্টিসজমের প্যাকেজ বানিয়ে অনেক আকর্ষণীয় ভাবে উপস্থাপন করে । বিয়েকে কঠিন করে ফেলা  এবং ব্যাভিচারকে সহজলভ্য করে ফেলা এই সমাজে শয়তানের এই প্যাকেজ ফিরিয়ে দেওয়া অনেক অনেক কষ্টকর। সিরিয়াল, পর্নমুভি,আইটেম সং এর বিনোদন থেকে নিজেকে বঞ্চিত করে রাখাও তো অনেক কষ্টকর । কিন্তু তোমার আমার এই কষ্ট কী বিলাল ইবনে রাবাহ (আল্লাহ তাঁর উপর সন্তুষ্ট হোক) এর কষ্টের চেয়েও বেশি যাকে মরুভূমির  উত্তপ্ত বালুতে খালি গায়ে শুইয়ে রেখে তাঁর ওপর ভারী পাথর চাপা দিয়ে রাখা হতো ? তোমার আমার এই কষ্ট কী মুসআব ইবনে উমাইর (আল্লাহ তাঁর উপর সন্তুষ্ট হোক) চেয়েও বেশি যিনি মক্কার সবচেয়ে ড্যাম স্মার্ট , সুদর্শন, ধনী আদরের দুলাল ছিলেন , কিন্তু ইসলাম গ্রহণের কারণে তাঁকে ঘর ছাড়তে হয়েছিল । পেছনে ফেলে আসতে হয়েছিল বিপুল ঐশ্বর্য আর বিলাসিতার জীবন। অনাহারে অর্ধাহারে অপুষ্টিতে তার গায়ের চামড়া এমনভাবে উঠে গিয়েছিল যেমন সাপ তার খোলস পরিবর্তন করে। সাহাবীগন (রাঃ) জীর্ণ পোশাকের মুস’আবকে (রাঃ) দেখে চোখের পানি আটকাতে পারতেননা। ভাই তাঁরাও তো আমাদের মতোই রক্ত মাংসের মানুষ ছিলেন । তাঁরা যদি আল্লাহ এবং তাঁর রাসুল (সাঃ) এর জন্য এতোটা কষ্ট করতে পারেন ,  ত্যাগ স্বীকার করতে পারেন , তাহলে আমরা কেন এতটুকু কষ্ট করতে পারবো না ? আমরা কি আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলকে ভালোবাসি না ? না কি শুধু মুখেই দাবি করি ?

ভাই , তুমি আমি কি চাই না জান্নাতের স্ত্রীকে নিয়ে খালিপায়ে সবুজ ঘাসের চাদরে হেঁটে বেড়াতে ,  অলস দুপরে নারিকেল বীথিতে বসে সমুদ্রের ঐ নীল জলরাশির দিকে চেয়ে  থাকতে ? তোমার কাঁধে তোমার প্রবাল ও পদ্মরাগ সদৃশ  জান্নাতী স্ত্রী মাথা এলিয়ে দিয়ে আছে , মাতাল বাতাসে তোমার জান্নাতী স্ত্রীর চুল এলোমেলো হয়ে তোমার  চোখ মুখে এসে পড়ছে , প্রাণভরে নিচ্ছো তুমি তাঁর চুলের সুবাস। যতবার তোমার স্ত্রী হাত দিয়ে চুল ঠিক করতে যাচ্ছে , ততবার  তাঁকে আগের বারের চেয়ে বেশি সুন্দরী মনে হচ্ছে , তাঁর মুখটার দিকে তাকিয়ে তুমি  নতুন করে তাঁর প্রেমে পড়ে যাচ্ছ ততবার।   

এইগুলো কি এমনি এমনি পেয়ে যাব তুমি , আমি ? এর জন্য কষ্ট করতে হবে না ? ভালো জিনিস কি কেউ এমনি এমনি দেয়?  জান্নাতের স্ত্রীদের জন্য মোহরানার ব্যবস্থা করতে হবে না ?  
“......তোমরা কি মনে করে নিয়েছ তোমরা এমনি এমনি বেহেশতে চলে যাবে ?  

অথচ পূর্ববর্তী নবীদের অনূসারীদের মতো কিছুই তোমাদের উপর এখনো নাযিল হয়নিতাদের উপর বহু ধরণের বিপর্যয় ও সংকট এসেছে , কঠোর নির্যাতনে তারা নির্যাতিত হয়েছে, কঠিন নিপীড়িত তারা শিহরিত হয়ে উঠেছেন , এমন কি স্বয়ং আল্লাহ্‌র নবী ও তার সঙ্গী সাথীরা অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে এক পর্যায়ে এই বলে আর্তনাদ করে  উঠেছে , আল্লাহ্‌র সাহায্য কবে আসবে ? অবশ্যই আল্লাহ্‌র সাহায্য অতি নিকটে ।  
সূরা বাকারা -২১৪

ভাই,আমাদের রব আমাদের পরীক্ষা নিচ্ছেন এই দুনিয়াতে । যাতে তিনি আমাদের পবিত্র করতে পারেন আমাদের পাপ থেকে ,  হাশরের ময়দানে আমাদের স্থান দিতে পারেন তাঁর আরশের ছায়ায় , কাউসার থেকে পানি পান করাতে পারেন , তাঁর দীদার দিয়ে আমাদের মানব জন্ম সার্থক করতে পারেন । তাই ভাই , দুনিয়ার এই ফিতনা, এই পরীক্ষায় হিম্মত হারিয়ে ফেললে হবে না । আল্লাহ্‌র ওপর তাওয়াক্কুল করে , তাঁর  নিকটে অনবরত  সাহায্য চেয়ে আমাদের কোমরবেঁধে লাগতে হবে এই পরীক্ষা উৎরানোর জন্য ।  আমাদের মঞ্জিল ভাই এই বয়ফ্রেন্ড , গার্ল ফ্রেন্ডের দুদিনের রিলেশান না , জিনা , ব্যভিচারের সাময়িক ফুর্তি না , আমাদের মঞ্জিল জান্নাত ।  জান্নাতে এক মুহূর্ত কাটানোর পর ভাই তুমি ভুলে যাবে দুনিয়ার এখনকার এই  দুঃখ, কষ্ট গুলো ।

চলোনা এই জীবনের এই সাময়িক দুঃখ , কষ্ট গুলো সিজদাতে লুটিয়ে পড়ে চোখের পানিতে  সমর্পণ করি আমাদের রবের কাছে  ।

“ …….আমি তো আমার অসহনীয় যন্ত্রণা, আমার দুশ্চিন্তা আল্লাহ্‌র কাছেই নিবেদন করি ” 
(সূরা-১২, আয়াত ৮৬)




Saturday, January 23, 2016

“পর্নোগ্রাফি ও ইসলাম”


প্রতিবার জুমুআতে ইমাম সাহেব খুতবা শেষ করেন কুরআনের এই আয়াত দিয়ে-
আল্লাহ ন্যায়পরায়ণতা,
 সদাচরণ এবং আত্নীয়-স্বজনকে দান করার আদেশ দেন এবং তিনি অশ্লীলতা, অসঙ্গত কাজ এবং অবাধ্যতা করতে বারণ করেন। তিনি তোমাদের উপদেশ দেন যাতে তোমরা স্মরণ রাখ। (সূরা আন নাহল,আয়াত-৯০)

এখানে যে বিষয়গুলো থেকে বেঁচে থাকতে বলা হয়েছে পর্নোগ্রাফিক কালচার সে বিষয়গুলোকেই রাঙ্গিয়ে তোলে।এইবার একটু টেকনিক্যাল কথাবার্তায় আসি।এইখানে মূলত ৩ টি শব্দের উল্লেখ করা হয়েছে যেগুলো হল
(১)ফাহসা,
(২)মুনকার ও
(৩)বাগি

মুনির বালবাকির আল মাওরিদ অ্যারাবিক-ইংলিশ ডিকশনারি অনুযায়ী “ফাহসা” অর্থ হল অশ্লীলতা,অসভ্যতা,অভদ্রতা,লজ্জাহীনতা,এমন কিছু যা জঘন্য,নোংরা ও কুরুচিপূর্ণ।অন্য এক অভিধানে এগুলোর বাইরেও কিছু অর্থ এসেছে যেমন অঙ্গবিকৃতি,নিচুতা,কদর্যতা ও ব্যাভিচার।কুরআন ও সুন্নাহতে অনৈসলামিক যৌন কার্যকলাপ বোঝাতে এই শব্দটির বহুল ব্যবহার রয়েছে।কুরআনের আলেমদের মতে,প্রত্যেক কুকর্ম তা ব্যাভিচারই হোক বা আর যাই হোক তা এই ক্যাটাগরির অন্তর্ভুক্ত।উদাহরণস্বরূপ, নগ্নতা,পাবলিক ফোরপ্লে,গালাগালি,অশ্রাব্য ভাষা,বাছবিচারহীন মেলামেশা,টাইট কাপড় পড়া ইত্যাদি।এসবের একেবারে চূড়ান্ত ধাপ হল জিনা ও সমকামিতা(কুরআন ১৭:৩২,৭:৮০,২৭:৫৪)

আল-মুনকার” এর অর্থ হল বাজে,নিকৃষ্ট,রুচিহীন,গর্হিত ও চরম অনৈতিক।এই ক্যাটাগরিতে আছে ওইসব খারাপ কাজ যেগুলো সর্বসম্মতভাবে বর্জনীয়,বিবেকের কাছে ঘৃণিত ও বিধাতা কর্তৃক সর্বকালের জন্য নিষিদ্ধ।যেকোনো ধর্মাবলম্বী মানুষের কাছে পর্ন ধিক্কারযোগ্য।এমনকি মূলধারার আমেরিকান পত্রপত্রিকা ও টিভি চ্যানেলগুলোও এসব অনুমোদন করে না।এই নীতিহীনতাকেই কুরআনে আল-মুনকার বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
এইবার বাকি রইল “আল-বাগি” যার অর্থ ভুল,অবিচার,অত্যাচার ও নিপীড়ন।মানে বিধাতা বা যে কোন আদম সন্তানের ন্যায্য অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলা বা দুর্নীতি করা।পর্নোগ্রাফিক ইন্ডাস্ট্রি নারীদের অধিকার ও মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করে আজ তাদের সেক্স অবজেক্টে বদলে দিয়েছে।পর্নোগ্রাফিক ই-মেইল দিনে কমপক্ষে ৪ বার আমেরিকানদের ইনবক্সে ঢুঁ মারে।আল্লাহ বলেন,
তাদের বলে দাও(হে মুহাম্মাদ):আমার প্রতিপালক প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য অশ্লীলতা,পাপকাজ..................নিষিদ্ধ করেছেন।”(৭:৩৩)


তাই ঘরের চার দেয়ালে আটকে থেকে পর্ন দেখা বা যাবতীয় অশ্লীলতা সবই হারাম।কুরআনে আল্লাহ সুবহানা ওয়া তাআ’লা অশ্লীল কাজ ও কথাবার্তার ধারে কাছে যেতেও বারণ করেছেন তা প্রকাশ্যেই হোক কিংবা গোপনে।এই একই আয়াতে আল্লাহ শিরক ও হত্যার মত ভয়াবহ অপরাধ সম্বন্ধে আমাদের সচেতন করেছেন।এইবার বুঝুন তাহলে কত প্রবল এই পর্নোগ্রাফির আযাব।আল্লাহ আমাদেরকে খুব ভালভাবেই চিনেন কারণ তিনিই আমাদের সৃষ্টি করেছেন।আমাদেরকে দুর্বল করে তৈরি করা হয়েছে।তাই আমাদের হারাম থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা কম চ্যালেঞ্জিং না।আল্লাহ বলেন,

যারা মুমিনদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রসার কামনা করে তাদের জন্য আছে দুনিয়া ও আখিরাতে পীড়াদায়ক শাস্তি এবং আল্লাহ জানেন,তোমরা জানো না।”(২৪:১৯)
শয়তানের এই মারণাস্ত্র থেকে বেঁচে থাকার তাগিদ মহান আল্লাহ বার বার দিয়েছেন।তিনি আরও বলেন,

হে ঈমানদারগণ, তোমরা শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। যে কেউ শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করবে, তখন তো শয়তান নির্লজ্জতা ও মন্দ কাজেরই আদেশ করবে।”(২৪:২১)

এখানে ফাহসা ও মুনকার ২ ধরণের কাজের ব্যাপারেই উল্লেখ করা হয়েছে।আপনাকে শয়তান কোনদিনই বলবে না যে,“চলো,একটা বড়সড় হারাম করি বা জিনা করি।”সে আপনাকে একটু একটু করে লোভ দেখাবে এবং আপনি যতই ওর টোপ গিলবেন ততই ও আপনার অন্তরকে নিজের দখলে আনতে থাকবে।এমন একসময় আসবে যখন ও আপনাকে আদেশ দিবে আর সাথে সাথে সেটা পালনে আপনি মরিয়া হয়ে উঠবেন।নিজেকে বেচে দিবেন এই অভিশপ্তের হাতে।এই অঘটন যাতে না ঘটে তাই শুরু থেকেই ব্যাটার নীল নকশাতে পানি ঢেলে দিন।

মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে।.........”(২৪:৩০-৩১)


এইবার হাদিস এর কয়েকটি রেফারেন্স দেওয়া যাক
১। কোন পুরুষ বা নারীর উচিৎ নয় অপর কোন পুরুষ বা নারীর গোপনাঙ্গের দিকে দৃষ্টিপাত করা যদি না তারা বিবাহিত হয়।(মুসলিম)
২। আমার রবের কসম, কারো গোপনাঙ্গের দিকে তাকানোর চেয়ে বা কাউকে আমার গোপনাঙ্গ দেখানোর চেয়ে আমি আকাশ থেকে নিক্ষিপ্ত হওয়া ও তারপর খণ্ড খণ্ড টুকরায় ভাগ হওয়াই বেছে নিব।(সালমান(রাঃ) কর্তৃক বর্ণনাকৃত)
৩। কারোর সামনে তোমার থাই অনাবৃত করো না এবং অন্য কারোর থাই এর দিকেও নজর দিয়ো না হোক সে জীবিত বা মৃত কিংবা নারী অথবা পুরুষ।(ইবনে মাজাহ,আবু দাউদ)
৪। আল্লাহ তাআ’লা আদম সন্তানের জন্য তার জিনার অংশ লিখে রেখেছেন যা সে অবধারিতভাবে করে।চোখের জিনা হল যা সে দেখে(হারাম জিনিসপত্র),মুখের জিনা হল যা সে বলে(হারাম জিনিসপত্র)।আর তার ভেতরের মনটা তা কামনা করে।তার গোপনাঙ্গ হয় এসবের সাক্ষী হয় নয় এগুলো বর্জন করে।(বুখারি,মুসলিম,আবু দাউদ)

পর্নমুভি দেখা,এই ধরণের গান শোনা বা গাওয়া,নিজের হাত বা পা এর অপব্যবহার করা এসবই ধীরে ধীরে জিনার দিকে টেনে নেয় ও ঈমান ধ্বংস করে দেয়।একবার এই সাইকেলে আটকা পড়লে এই সাইকেল ভাঙ্গাটা অনেক চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়ায় বিশেষত তরুণ ভাই বোনদের জন্য।কিন্তু আল্লাহ কখনই আমাদের নিঃসঙ্গ হতে দিতে নারাজ।আর এই ভালোবাসা ও নিজের সচ্চেষ্টাকে আগলে নিয়ে নিজেদের নফসের বিরুদ্ধে চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।দুয়া করি আল্লাহ রাব্বুল আ’লামিন যাতে আমদের আত্মিক ও শারীরিক উভয়ভাবেই নিরাপদ রাখেন।আমিন।  
(লস্ট মডেস্ট অনুবাদ টিম কর্তৃক অনূদিত)



Sunday, January 10, 2016

একগুচ্ছ অনুবাদ (দ্বিতীয় কিস্তি)

বিসমিল্লাহির রহমানীর রহীম ।



# কর্মক্ষেত্রেও পর্নোগ্রাফি!!
পর্নোগ্রাফির বিষবাষ্প আর এর বিষাক্ত প্রভাব রেহাই দেয়নি কর্মক্ষেত্রের পরিবেশকেও পাশ্চাত্য সভ্যতার তৈরি পর্ন ইন্ডাস্ট্রি এবং এর ন্যাক্কারজনক প্রোডাক্ট পর্নোগ্রাফি তিলে তিলে ধ্বংস করে চলেছে সারা পৃথিবীর মানুষের নীতিবোধ পবিত্রতা তবে এর ক্ষতিকর প্রভাব বুমেরাং হয়ে সবথেকে বেশি আক্রান্ত করেছে স্বয়ং পাশ্চাত্য সমাজকেই পর্নোগ্রাফির দূষিত প্রভাবে কর্মপরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সাথে সাথে কর্মক্ষেত্রের নারীদেরকে সম্মুখীন হতে হচ্ছে বিভিন্ন প্রতিকূল অবস্থার


ভাবুন তো, অফিসে বসে একজন কর্মী কম্পিউটারে কাজের ফাঁকে ফাঁকে চুপিচুপি আরেকটা ট্যাব খুলে তাতে পর্ন দেখছেন এতে কাজের ক্ষতি হচ্ছে কি না সেটা আমাদের আলোচনার বিষয় নয় তবে এতে তার কল্পনা চিন্তনপ্রক্রিয়া ভরে যাচ্ছে কলুষতায় এমন অবস্থায় তিনি তার পাশের বিপরীত লিংগের সহকর্মীর দিকে তাকালেন; হয়ত কোন জরুরি কাজের বিষয়েই তার সাথে কথা বলতে হবে কিন্তু তিনি আর পারছেন না মনোযোগ স্থির রেখে মানুষটাকে স্বাভাবিকভাবে দেখতে না চাইলেও তার দৃষ্টি এমনভাবে চলে যাচ্ছে, যেভাবে একজন সহকর্মীর দিকে তার তাকানো উচিত নয় বা চিন্তা করা উচিত নয়; লুকানো ট্যাবে সদ্য দেখা চরিত্রের সাথে বারবার মিলিয়ে ফেলছেন তাকে আচ্ছা এবার ভাবুন, দুর্ভাগা সেই সহকর্মীটি আপনি নিজেই! যেই কুপ্রবৃত্তির প্রভাবে পড়ে কেউ পর্ন দেখছেন, সেই একই প্রবৃত্তিই তাকে ধাবিত করছে কলুষ চিন্তাভাবনার দিকে, ফলে ঘটে চলেছে কর্মক্ষেত্রে নারী-পুরুষ বৈষম্য, হয়রানি ইত্যাদি


২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রেরবার্না গ্রুপ’-এর চালানো একটি জরিপে দেখা যায়, বিগত তিন মাসের মধ্যে পুরুষদের ৬৩% কর্মস্থলে থাকা অবস্থায় পর্ন দেখেছেন; নারীদের মধ্যে এর সংখ্যাটি ৩৬% (1)


২০০৩ সালে বিজনেস অ্যান্ড লিগ্যাল রিপোর্ট একটি জরিপ করেছিল ৪৭৪ জন হিউম্যান রিসোর্স প্রফেশনালদের উপর, যেখানে দুই-তৃতীয়াংশ কর্মীই বলেছেন তারা তাদের অফিস কম্পিউটারের হার্ডড্রাইভে পর্ন পেয়েছেন (2) পাওয়াটা অস্বাভাবিক নয় কারণ, ২০০৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য অস্ট্রেলিয়ার ৩৫০টি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে চালান জরিপে জানা যায় প্রায় এক-তৃতীয়াংশ কর্মীই স্বীকার করেছেন অফিস কম্পিউটারে পর্নোগ্রাফিক উপাদান ডাউনলোড করার কথা(3) একই বছরেই ম্যাসেজ ল্যাবস-এর রিপোর্টে দেখা গেল, সারাদিনের ভেতর পর্নসাইটগুলোতে সবচেয়ে বেশি হিট পড়ে সকাল ৯টা থেকে ৫টার মধ্যে- যখন কি না অধিকাংশ মানুষই থাকে কর্মস্থলে তার মানে তারা সারাদিনের ভেতর পর্ন দেখার জন্য অফিসের সময়টাকে নির্বিঘ্ন বলে বেছে নেন, এতটাই নেশা!


কলুষতার সাথে বসবাস করলে এর প্রভাব আচরণ, কাজে-কর্মে পড়বেই এরই এক উদাহরণ কর্মক্ষেত্রে নারীদের হয়রানি ‘Survey Monkey’ নামক একটি সংস্থা ২২৩৫ জন পূর্ণ খন্ডকালীন নারী কর্মীর উপর জরিপ চালিয়ে ফলাফল পায়, ১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সী মহিলা কর্মীদের প্রতি জনের মধ্যে জনই কর্মস্থলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বা সহকর্মীর দ্বারা যৌন হয়রানির শিকার হন এদের মধ্যে শতকরা ৮১ জন জানিয়েছেন তারা মৌখিক হয়রানির (অশালীন ইংগিত/মন্তব্য) শিকার অন্য দিকে শতকরা ২৫ জন বলেছেন, তারা চুড়ান্ত অশালীন ক্ষুদে বার্তা বা -মেইল পান এবং শতকরা ৪৪ জন অভিযোগ করেছেন যে তারা অনাকাংক্ষিত স্পর্শের সম্মুখীন হয়েছেন


জরিপে আরো দেখা যায় যে, হয়রানির শিকার মহিলাদের শতকরা ৭১ জনই ব্যাপারে কোন রিপোর্ট করেন না চাকরি হারানোর ভয়, তার কথা কেউ পাত্তা দেবে না, মূল অপরাধীর বদলে বরং তাকেই সবাই দোষ দেবে ইত্যাদি চিন্তা করে তারা সাহস করে মুখ না খুলে বিষয়গুলো চেপে যান এবং দুঃখজনক হলেও সত্যি, অনেক সময় এধরনের অভিযোগ তোলা হলে হয়রানিকারীর দোষ না দেখে ভুক্তভোগীকেই দোষী বলা হয় আবার কিছুক্ষেত্রে দেখা যায় মানুষ এই আচরনকে মজা বা কৌতুক হিসেবে নেয় ফলে ভুক্তভোগী মনে করে ব্যাপারে কিছু বললে বা অভিযোগ করলে অন্যরা তাকে অসামাজিক বা রসবোধহীন মনে করবে এমনকি যেসব পেশাকে খুব সম্মানজনক বলে ধরে নেওয়া হয় সেখানেও এই অন্ধকার দিকগুলো বিদ্যমান উদাহরণস্বরুপ সেনাবাহিনীর সদস্যদের কথা বলা যায়, যেখানে কেউই নিরাপদ নন


শুধুমাত্র নারীরাই না, পুরুষরাও কর্মক্ষেত্রে হয়রানির শিকার হন আইনজীবি স্লেটার আর. গর্ডন কর্তৃক প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, কর্মস্থলে নারী পুরুষ উভয়ই যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে এবং তা বেড়েই চলেছে প্রায় ৪০% পুরুষ ব্যাপারে রিপোর্ট করেন কিন্তু আরও বাকি ৬০% পুরুষ এই ধরনের ঘটনা নিজেদের মাঝেই চেপে রাখেন এবং এটাই এখন সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে  (4&5)  




#  ......প্রতি বছর হাজার হাজার টীনেজারদের সঙ্গে কথা বলার অভিজ্ঞতা থেকে আমি বলতে পারি আপনি যদি এই “বড়দিনে”  বড়দিনের উপহার হিসেবে আপনার বাচ্চার জন্য বাজার থেকে স্মার্টফোন বা আইপড কিনে আনেন , তাহলে  আপনি আপনার বাচ্চার জন্য আসলে একটা পোর্টেবল এক্স রেটেড মুভি থিয়েটার কিনে নিয়ে আসলেন ।


আপনার বাচ্চার নিরাপদ ভবিষ্যতের জন্য (এবং তাদের ভবিষ্যৎ জীবন সঙ্গী / সঙ্গিনীর জন্যও) দয়া করে অবশ্যই অবশ্যই বাচ্চার হাতে স্মার্টফোন তুলে দেওয়ার আগে তাকে ইন্টারনেটের অন্ধকার জগত সম্পর্কে সচেতন করুন ।   বিপদ ঘটার পূর্বেই  প্রয়োজনীয়  এক্সরেটেড ওয়েবসাইট ব্লকিং  সফটওয়্যার বা অ্যাপস  ইন্সটল করুন । দেরী করবেন না । এবং ভাববেন না আমার বাচ্চার ওপর আমার বিশ্বাস আছে , ও কখনো এমন করবে না । সমস্যাটা হয় আপনার সন্তানের ওপর আপনার বিশ্বাসের কারণে না বরং ইন্টারনেটের ওপর আপনার অগাধ বিশ্বাসের কারণে ।  আবারো বলছি গড়িমসি করবেন না । তা হলে  হয়তো কিছু দিন পর  আপনি আবিষ্কার করে বসবেন  আপনার সন্তান পর্ণমুভিতে আসক্ত হয়ে পড়েছে”। (Matt Fradd , anti porn activist)
- 


শিশু কিশোরদের পর্ণ আসক্তির ব্যাপকতা, ক্ষতিকর দিক এবং এ  শিশু কিশোরদের পর্ণ আসক্তি দূর করার উপায় নিয়ে লিখা এই আর্টিকেল গুলো পড়তে পারেন –
আমাদের সন্তান পর্ণ দেখে  সিরিজের চারটি পর্ব –

২) দ্বিতীয় পর্ব- http://lostmodesty.blogspot.com/2015/08/blog-post_26.html


৪) চতুর্থ পর্ব- http://lostmodesty.blogspot.com/2015/09/blog-post_6.html

পাশ্চাত্যে বেড়ে ওঠা-http://lostmodesty.blogspot.com/2015/09/blog-post_6.html

   
আসল কথা হল পর্ণ ইন্ড্রাস্টীর মুনাফার অংকটা বেশ বড় ।  আর এ কারনেই  বিশ্বজুড়ে  পর্ণমুভির ভয়াবহ বিস্তার । এবং ব্যক্তিজীবনে, সমাজ জীবনে  পর্ণ মুভির  ভয়াবহতা দেখেও পর্ণ মুভির বিস্তার ঠেকানোর সেরকম উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ কেউ নেয় না ।   আমাদের দেশে (ইন্দোনেশিয়া)  কয়েক বছর আগে সরকার একটা উদ্যোগ নিয়েছিল আইন করে পর্ণ  মুভির ভয়াবহ প্রসার বন্ধ করার  । কিন্তু তথাকথিত “প্রগতিশীলরা” এটা হজম করতে পারলো না কারণ ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন ধর্মীয় কমিউনিটি বিশেষ করে মুসলিম কমিউনিটি সরকারকে সাধুবাদ জানিয়েছিল এবং সাপোর্ট করেছিল এই আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য । সেই তথাকথিত ‘প্রগতিশীল এবং মুক্তমনাদের’ প্রতিবাদের মুখে শেষ পর্যন্ত আমাদের সরকার সেই আইনটি আর পাশ করাতে পারেনি ।  এই পর্ণমুভির কারণে  বর্তমান ইন্দোনেশিয়ান তরুণ- তরুনীদের  মানসিকতা কতটা নীচে নেমে গেছে তা আপনি হয়তো ভাবতেও পারবেন না । ইউটিউবে তারা নিয়মিত এমন সব ভিডিও আপলোড দেয় যা অনেক সময় পর্ণ মুভির বেহায়াপনাকেও হার মানায় ।
(একটি এন্টিপর্ণ ওয়েবসাইটের কমেন্ট সেকশনে করা একজন ইন্দোনেশিয়ান মুসলিমের কমেন্টের চুম্বুকাংশ)
---------------------------*-------------------------
#  ……. বিশ্বায়নের একটি অভাবিত ফল হল উন্নয়নশীল বিশ্বে পশ্চিমা পর্ণোগ্রাফির জঘন্য প্রভাব বিস্তার।  অনেক অনুন্নত দেশের গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকা সত্ত্বেও জেনারেটর চালিয়ে গ্রামের একটি কুঁড়েঘরকে অশ্লীল সিনেমা হলে পরিণত করা হয়, যা  তরুণদেরকে বানায় ধর্ষক; উৎসাহিত করে নারীদেরকে  নির্যাতন করতে তরুণরা লাগামহীন ভাবে পর্ণ মুভি দেখছে  আর যা দেখছে ঠিক তা-ই বাস্তবে করতে গিয়ে সমাজে বিশৃঙ্খলা, অনাচার আর   HIVএর সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। এইডস কমিশনের প্রধানের বিবৃতি অনুযায়ী, পর্ণোগ্রাফি হল এমন এক টাইমবোমা যা তাদের সকল জীবনকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে।  জরিপে দেখা গেছে যে HIV আক্রান্ত বিবাহিতদের যৌনশিক্ষার উৎস হল ল্যাটিন আমেরিকায় তৈরি পর্ণোগ্রাফি” .  
---- টিম স্যামুয়েলসচলচ্চিত্র নির্মাতা,বিবিসি প্রামাণ্য চিত্র "Hardcore Profits"(২০০৯)  The Guardian "Africa Goes Hardcore" )  


(লস্ট মডেস্টী অনুবাদ টীম কর্তৃক অনূদিত) 
চলবে ইনশাআল্লাহ......
পড়ুন একগুচ্ছ অনুবাদ সিরিজের  প্রথম কিস্তি- http://lostmodesty.blogspot.com/2015/12/blog-post_26.html

রেফারেন্স-
1)    2014 Pornography Survey and Statistics. Proven Men Ministries. http://www.provenmen.org/2014pornsurvey/ (accessed Dec. 29, 2014).
2)    Michael Leahy, Porn @ Work: Exposing the Office’s #1 Addiction(Chicago: Northfield Publishing, 2009).
3)    Bob Sullivan, “Porn at work problem persists,” MSNBC News,Sept.6,2004.http://www.msnbc.msn.com/id/5899345/ (accessed Dec. 27, 2012).