বিসমিল্লাহির রহমানীর রহীম।
...অনেক দিন পর ফুল পিচ ক্রিকেটে খেলা হল । শরীর প্রচন্ড ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিল ।
বিছানায় গা এলানো মাত্র গভীর ঘুমে । সকালে ঘুম থেকে যখন উঠলাম তখন শরীর এক্কেবারে ঝরঝরে ।
পর্নআসক্তি বা মাস্টারবেশন আসক্তি নিয়ে যারা ঝামেলায় আছেন তাদের উচিত অবসর পেলেই নিয়মিত খেলাধুলা করা বা শারীরিক পরিশ্রম করা । সারাদিন ব্র্য়লার মুরগীর মতো রুমে বসে বসে ফিফা , কাউন্টার স্ট্রাইক বা কক খেলে লাভ নেই ; আসল পুরুষের মতো আসল খেলা খেলুন - ক্রিকেট খেলুন , ফুটবল খেলুন (এটা বেশি কাজের )।
ঢাকা শহরের মুরগীর কুঠিতে থাকেন ? খেলার জায়গা নেই ?
...ফুটপাতে জগিং করুন, লিফট ব্যবহার না করে সিঁড়ি ভাঙ্গুন , রিকশায় চড়া কমিয়ে দিয়ে হাঁটুন, পুশ আপ দিন – দশটা করে শুরু করুন , এক দিন পর পর পুশ আপের পরিমাণ তিনটা করে বাড়াতে থাকুন – ১০- ১৩-১৬ এভাবে ।
সুযোগ থাকলে মাঝে মাঝে পুলে যেয়ে সাঁতার কাটুন,অফিসে,ক্লাসে বা টিউশানিতে সাইকেল চালিয়ে যান । মোদ্দা কথা হল যত বেশি সম্ভব ঘাম ঝরান ।
আপনার বয়সটাই এমন যে শরীরে এখন হেব্বি এনার্জি । এত্ত এনার্জি যে কিছু এনার্জি রিলিজ না করলে ঠিক স্বস্তি পাওয়া যায় না, শরীরটা কেমন কেমন জানি করে । হালাল পথে এই এনার্জি রিলিজ না করলে ইবলিশ ব্যাটা তো রয়েছেই আপনাকে হারাম পথ গুলো বাতলে দেওয়ার জন্য । তার পাল্লায় পড়ে দেখা যাবে রিলিভ পাওয়ার জন্য আপনি মাস্টারবেট করা শুরু করেছেন – আর মাস্টারবেট করার আগে পর্নমুভি দেখছেন ;হোক সেটা সফটকোর বা হার্ডকোর বা আইটেম সং । তাই খেলাধুলা করুন , এক্সারসাইজ করুন – হালাল পথে এনার্জি রিলিজ করুন।
শারীরিক পরিশ্রম করলে বা খেলাধুলা করলে খুব সলিড ঘুম হবে ইনশা আল্লাহ, শরীর মন দুটোই চাঙ্গা থাকবে । ঘুমানোর আগে যে “উলটা পালটা” চিন্তা ভাবনা মাথায় আসে সেগুলো থেকেও মুক্তি পাওয়া যাবে ইনশা আল্লাহ ।
রাসূল (সাঃ) এর একটা সুন্নাহও আদায় হয়ে যাবে ইনশা আল্লাহ এক্সারসাইজ করলে । মুহাম্মদ (সাঃ) নিজে নিয়মিত ব্যায়াম করতেন। এছাড়া তিনি নির্দোষ খেলাধুলা, ঘোড়দৌঁড়, কুস্তি ও তীর নিক্ষেপ চর্চার জন্য অন্যদেরকে উপদেশ দিতেন। তিনি বলেছেন, পিতার ওপর সন্তানের অধিকারহলো হলো, পিতা সন্তানকে সাঁতার ও তীর-চালনা শেখাবে।
রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ
“দূর্বল মু’মিনের চেয়ে শক্তিশালী আল্লাহর কাছে মু’মিন অনেক উত্তম ও অধিক প্রিয়, সবার মধ্যেই কল্যান রয়েছে•••”। (সহীহ্ মুসলিম, কিতাবুল ক্বাদর)
তো এক্সারসাইজ , খেলাধুলা করে হয়ে উঠুন শক্তিশালী , মেদ ভুঁড়ি কমিয়ে হয়ে উঠুন ফিট , বিয়ের বাজারে নিজের মুল্য বাড়ান আর তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিন বেয়াড়া পর্ন/মাস্টারবেশন আসক্তি ।
জীবন নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই আমাদের । এটা পাইনি,ওটা পাইনি। অবসরে, বিশেষ করে একাকী থাকলে এক এক করে মনে পড়ে জীবনের সব হিসেব না মেলা ঘটনাগুলোর কথা । অজান্তেই বিষন্নতা আর হতাশা গ্রাস করে । হৃদয়ের রক্তক্ষরণ হয় । অনেকসময় এই অপ্রয়োজনীয় দুঃখ বিলাস খুলে দেয় পর্ন আসক্তির দুয়ার ।
খুব বেশি বয়স হয়নি আমার । কিন্তু এরমধ্যেই দুইবার ঘুরে আসতে হয়েছে হাসপাতাল থেকে । পড়তে হয়েছে সার্জনের ছুরির নিচে । সহ্য করতে হয়েছে অবর্ণনীয় যন্ত্রণা। বিছানায় শুয়ে বসে থাকতে হয়েছে দেড় দুই মাস। বারবার অনুভব করেছি তখন, সুস্থতা আল্লাহ্’র(সুবঃ) কি বিশাল নেয়ামত। আপনি হেঁটে বেড়াতে পারেন , ইচ্ছে হলে যেখানে খুশি যেতে পারেন, চোখ দিয়ে দেখতে পান , কান দিয়ে শুনতে পান -আপনি ডুবে আছেন নিয়ামতের এক মহাসমুদ্রে। তারপরেও কেন এত দুঃখ বিলাস ?
বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে অবসরে মাঝে মাঝে হাসপাতালে যান । জীবনকে দেখতে পাবেন এক আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি থেকে। কত নানা রকমের রোগী! কেউ চোখে দেখতে পায়না , কারো পা কেটে ফেলতে হয়েছে, কেউ শ্বেতশুভ্র বিছানায় শুয়ে শুয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে ওপারে যাবার।
স্পিরিট,ন্যাপথালিন,স্যাভলন,ওষুধের কড়া গন্ধ,নার্সদের ছোটাছুটি, বসতবাড়ির জমিটুকুও বিক্রী করে গ্রাম থেকে আসা রোগীর স্বজনদের শূন্য চাহনি, অন্যরকম নিষ্ঠুর,নির্দয় এক জগত । ঘুরে আসুন হাসপাতাল থেকে । মন নরম হবে, জীবনে অল্পে তুষ্ট হওয়া শেখা যাবে, আল্লাহ্’র (সুবঃ) প্রতি কৃতজ্ঞ হওয়া শেখা যাবে, মৃত্যুভীতি জাগবে; পর্ন/মাস্টারবেশন আসক্তি কাটানোর জন্য যেটা খুবই দরকারী ।
রোগী দেখতে যাওয়া রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর সুন্নাহ । অনেক হাদীসে রোগী দেখতে যাওয়াকে উৎসাহিত করা হয়েছে ।
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কোন মুসলমান যদি অন্য মুসলমান রোগীর সেবা শুশ্রষা বা খোঁজখবর নেওয়ার জন্য সকালে যায়, তাহলে সকাল হতে সন্ধ্যা পর্যন্ত সারাদিন তার জন্য সত্তর হাজার ফেরেশতা দোয়া করতে থাকে। আর যদি সন্ধ্যায় যায়, তাহলে সারারাত সত্তর হাজার ফেরেশতা তার জন্য দোয়া করতে থাকে। (তিরমিযী শরীফ, আবু দাউদ শরীফ)
বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন এতিমখানা বা বৃদ্ধাশ্রম থেকে । পর্ন/মাস্টারবেশন আসক্তি কাটানোর ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে এগুলোও ।
মাঝেমধ্যে কবরস্থানে যাওয়া নিশ্চিতভাবেই এমন অভিজ্ঞতা যা অহংকারকে নিঃশেষ করে দেয়,অন্তরে আল্লাহ্ভীতি জাগায়। যদি কিছুদিনের মধ্যে না গিয়ে থাকেন, তাহলে স্থায়ী বাসিন্দা হবার আগে একবার দর্শনার্থী হিসেবে ঘুরে আসুন।
কবরস্থানে গিয়ে আপনার প্রিয় মানুষদের কবরের পাশে দাঁড়ান। সেই সময়গুলোর কথা স্মরণ করুন যখন তারা ছিলেন সুস্থ-সবল। অবস্থান করছিলেন জীবিতদের মাঝেই। সেই কবরবাসীদের জায়গায় নিজেকে কল্পনা করুন। কল্পনা করুন আপনি কবরে শায়িত,কল্পনা করুন একবার , দুনিয়ায় থাকতে পর্ন মাস্টারবেশনে যে ক্ষনিকের মজা নিয়েছিলেন এখন তার প্রতিদান দেওয়া হচ্ছে, আপনার কবরে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে,আপনার পরিধানে জাহান্নাম থেকে আনা আগুনের পোশাক…
অবসরে ঘুরে আসুন গোরস্থান থেকে। আল্লাহর কাছে কবরবাসীদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন এবং তাদের উপর রহমত বর্ষণের আকুল আবেদন জানান। দুয়া করুন যেন আল্লাহ তাদের কবরসমূহকে প্রশস্ত করে দেন ও আলো দ্বারা উদ্ভাসিত করে দেন। আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ জানান যেন আপনি নিজে যখন তাদের মাঝে অবস্থান করবেন তখন আপনার উপরও রহম করা হয়। [১]
কবরস্থানে গিয়ে আপনার প্রিয় মানুষদের কবরের পাশে দাঁড়ান। সেই সময়গুলোর কথা স্মরণ করুন যখন তারা ছিলেন সুস্থ-সবল। অবস্থান করছিলেন জীবিতদের মাঝেই। সেই কবরবাসীদের জায়গায় নিজেকে কল্পনা করুন। কল্পনা করুন আপনি কবরে শায়িত,কল্পনা করুন একবার , দুনিয়ায় থাকতে পর্ন মাস্টারবেশনে যে ক্ষনিকের মজা নিয়েছিলেন এখন তার প্রতিদান দেওয়া হচ্ছে, আপনার কবরে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে,আপনার পরিধানে জাহান্নাম থেকে আনা আগুনের পোশাক…
অবসরে ঘুরে আসুন গোরস্থান থেকে। আল্লাহর কাছে কবরবাসীদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন এবং তাদের উপর রহমত বর্ষণের আকুল আবেদন জানান। দুয়া করুন যেন আল্লাহ তাদের কবরসমূহকে প্রশস্ত করে দেন ও আলো দ্বারা উদ্ভাসিত করে দেন। আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ জানান যেন আপনি নিজে যখন তাদের মাঝে অবস্থান করবেন তখন আপনার উপরও রহম করা হয়। [১]
চলবে ইনশা আল্লাহ্ ……
পড়ুন বাকি পর্ব গুলোঃ
তবু হেমন্ত এলে অবসর পাওয়া যাবে(প্রথম পর্ব) - https://goo.gl/t8l1mO
তবু হেমন্ত এলে অবসর পাওয়া যাবে(দ্বিতীয় পর্ব) - http://bit.ly/2oNbHPs
[১] শায়খ ইউনুস কাথরাদা’র বাংলা ফেইসবুক পেইজ থেকে এই লিখাটির অধিকাংশ নেওয়া হয়েছে। মূল লিখার লিংক - http://bit.ly/2oiTvfq
woow..best.
ReplyDelete