Wednesday, August 31, 2016

‘ফাঁদ’ (তৃতীয় পর্ব)

        

      
 

       

ঘুম থেকে উঠে দরজা খুলে হলের বারান্দায় আসতেই দিলটা “খুশ” হয়ে গেল নিলয়ের। চমৎকার ঝকঝকে রোদ ধুয়ে দিচ্ছে চারপাশটাকে। আকাশটা ভীষণ নীল। মনে হচ্ছে কেউ যেন নীল রং ঢেলে দিয়েছে সমস্ত আকাশজুড়ে। কী অসহ্য সুন্দর! 

জোড়া শালিক হলুদ হলুদ পা ফেলে ঘাসের মধ্যে পোকা ধরছে। ঘাসগুলো যেন সবুজ গালিচা বিছিয়ে রেখেছে। মৃদু বাতাসে তির তির করে কাঁপছে সাদা ঘাসফুলগুলো। নারিকেল, আম, জাম আর কাঁঠালের বনে দীর্ঘশ্বাসের মতো একটা বাতাস উঠল হুট করে। আমের শাখাগুলো দুলছে, হাতছানি দিয়ে ডাকছে যেন নিলয়কে; আয় নিলয়, আয়...

নাস্তা করে এসে কী করবে ঠিক বুঝতে পারল না নিলয়। ছুটির দিন আজকে। ক্লাস কিংবা ল্যাবের কোনো ঝামেলা নেই। আরেকবার সেঁটে ঘুম দেবে কি না ভাবছে, এমন সময় মনে হলো “ধুর! ঘুম দিয়ে লাভ নেই। তারচেয়ে একটা মুভি দেখি। কী জানি একটা নতুন বাংলা মুভি এসেছে শোভন বলছিল... উমম... মনে পড়ছে... ওটাই দেখি।”

ইউটিউবে গিয়ে মুভি দেখা শুরু করল নিলয়। গতানুগতিক কাহিনি। একটু পরেই একটা গান শুরু হয়ে গেল। আইটেম সং। নিলয় ভদ্র ছেলে। শুক্রবার ছাড়াও মাঝে মাঝে মসজিদে যায়। আইটেম সংয়ের কাণ্ডকারখানা দেখে লজ্জা পেয়ে গেল। স্কিপ করে গেল পুরোটা। একটু পর শুরু হলো আরেকটা গান। আইটেম সং না হলেও যথেষ্টই অশ্লীল। এবার কিছুক্ষণ, কিছুক্ষণ না পুরোটাই দেখল সে। ভেতর থেকে কে যেন তাকে বলল, আরে ব্যাটা দেখ, একবার দেখলে কিছুই হয় না।

পুরোটা মুভি যখন সে দেখে শেষ করল তখন ওর অবস্থা বেশ খারাপ। কান গরম হয়ে গেছে। হার্টবিট খুব বেড়ে গেছে। জোরে জোরে নিশ্বাস পড়ছে। বাইশটা বসন্ত পার করে দেয়া তৃষ্ণার্ত শরীর জেগে উঠেছে। নিলয় ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে সেই আইটেম সংটা (প্রথম বার এটা দেখেই সে লজ্জায় চোখ নামিয়ে ফেলেছিল) বেশ কয়েকবার দেখল। তারপর একটা-দুইটা করে বেশ কয়েকটা দেখে ফেলল। ভেতর থেকে ওর ভালো মানুষের সত্তাটা বার বার নিষেধ করছিল। সেটাকে পাত্তা দিলো না সে একবারেই। উত্তেজনা বাড়তে থাকল। একসময় জঘন্য কাজটা করে ফেলল নিলয়। ঠান্ডা হবার পর হুঁশ ফিরল। গভীর অবসাদ তাকে গ্রাস করল। একটু আগেও যে সোনালি রোদ্দুরে ভরা পৃথিবীটাকে অনেক সুন্দর মনে হচ্ছিল, আল্লাহ্‌কে (সুবঃ) বার বার ধন্যবাদ দিতে ইচ্ছে করছিল সে পৃথিবীটাকেই এখন ভীষণ স্যাঁতস্যাঁতে, অন্ধকারাচ্ছন্ন মনে হচ্ছে।

মরে যেতে ইচ্ছে করছে। কতবার এভাবে নিজের নফস আর শয়তানের কাছে পরাজিত হতে হবে জানে না নিলয়। 

এভাবেই উদ্দেশ্য গোপন করে কালে কালে, যুগে যুগে, আদম (আঃ) আর হাওয়া (আঃ) থেকে শুরু করে তাঁদের সন্তানদের ধোঁকা দিয়ে চলেছে ইবলিস। সে কখনোই সরাসরি আপনাকে বলবে না, “যা পর্ন দেখ” বা “হস্তমৈথুন কর”। ধাপে ধাপে অত্যন্ত ধৈর্য ধরে আগাবে সে। প্রথম ধাপটা সে আপনার কাছে খুব আকর্ষণীয় করে রাখবে। সে কাজটা করার জন্য আপনার সামনে অনেক লজিক নিয়ে আসবে। আদম (আঃ) আর হাওয়াকে (আঃ) যেভাবে ধোঁকা দিয়েছিল ঠিক সেভাবেই। ঘটনাটা আমরা সবাই জানি। আল্লাহ্‌ (সুবঃ) আদম (আঃ) আর হাওয়াকে (আঃ) একটা গাছের ফল খেতে নিষেধ করেছিলেন। এমনকি সে গাছের কাছে যেতেও নিষেধ করেছিলেন। কিন্তু শয়তান তাদের সেই গাছের ফল খাইয়েই ছেড়েছিল। শয়তান প্রথমেই উনাদের বলেনি, “তোমরা এই নিষিদ্ধ গাছের ফল খাও।” শয়তান প্রথমে আদম (আঃ) আর হাওয়া (আঃ) গিয়ে বলল, “দেখো! আমি তোমাদের বন্ধু, আমি তোমাদের উপকার করতে চাই। তোমরা যদি এই গাছের ফল খাও, তাহলে তোমরা চিরযৌবন পেয়ে যাবে। চিরকাল এই জান্নাতে থাকতে পারবে।”

তাঁরা শয়তানের ধোঁকায় পড়ে আল্লাহ্‌র (সুবঃ) আদেশ অমান্য করে ফল খেলেন, শাস্তিস্বরূপ আল্লাহ্‌ (সুবঃ) তাঁদের চিরসুখের জান্নাত থেকে বের করে পাঠিয়ে দিলেন এই দুঃখ-কষ্টে ভরা দুনিয়াতে।
বনি ইসরাইলের বারসিসার ঘটনাটাও শয়তানের স্টেপ বাই স্টেপ ধোঁকার আরেকটি ক্ল্যাসিক উদাহরণ। অত্যন্ত ইবাদতগুজার বারসিসাকে শয়তান ধীরে ধীরে ধোঁকায় ফেলে এক তরুণীর প্রেমে মশগুল করে দেয়। তারপর তার সঙ্গে যিনা করিয়ে নেয়। মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হলে ইবলিস বারসিসাকে প্ররোচনা দেয় তাকে মেরে ফেলতে। সবশেষে বারসিসাকে বাধ্য করে শয়তানের উদ্দেশে সিজদাহ করতে।

আপনাকে কাবু করার জন্য সে একই রকম ফাঁদ পাতবে। প্রথম স্টেপটা হবে আপাতদৃষ্টিতে খুবই সাধারণ, নিরীহ একটা বিষয়। রাস্তাঘাটে মেয়েদের দিকে তাকিয়ে থাকা, মাঝেমধ্যে মুভি দেখা, ইউটিউবে একটু ভিডিও দেখা, কোনো মেয়েকে ফেইসবুকে ফলো করা, প্রোফাইল পিকচারে লাইক দেয়া, মাঝেমধ্যে চ্যাট করা, বা “বোনের মতো”/ “জাস্ট ফ্রেন্ড” মেয়েবন্ধুদের সাথে একটু আড্ডা দেয়া, হ্যাং আউট করা ইত্যাদি। এ কাজগুলো করতে আপনার মন খুঁত খুঁত করলে হাজারটা যুক্তি খাড়া করবে সে আপনার সামনে; আরে একদিনই তো..., মাঝেমধ্যে বিনোদনেরও তো একটু দরকার আছে নাকি! ইসলাম কি এতই কঠোর? আমি তো শুধু চ্যাটই করছি, প্রেম তো আর করছি না..., মেয়ে দেখলে কী আর এমন হবে; আল্লাহ্‌র (সুবঃ) এত সুন্দর সৃষ্টি, মা শা আল্লাহ্‌ দেখব না কেন? আমরা ও রকম না, একসাথে বসে আড্ডা দিলেও, একই রিকশায় ঠাসাঠাসি করে বসলেও আমাদের মনে খারাপ কিছু আসে না—আমরা জাস্ট ফ্রেন্ডস... এ রকম হাজার হাজার যুক্তি।

যদি শয়তানের পাতা এই ফাঁদে একবার পা দেন, তাহলেই ফেঁসেছেন। বেশ ভালো সম্ভাবনা আছে শয়তানের হাতে নাকানি-চুবানি খেয়ে নিজের জন্য জাহান্নামের গর্ত বুকিং করার। নিজের ওপর অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের কারণে ভাবতে পারেন, আরে ধুর! অযথায় ভয় দেখাচ্ছেন আপনি... আমাকে কখনো শয়তান নাকানি-চুবানি খাওয়াতে পারবে না, উল্টো আমিই তাকে দৌড়ানি দেবো। ওই প্রথম স্টেপই কেবল, তারপর তো আর আগাচ্ছি না। আপনার মতোই বারসিসাও ভেবেছিল যে, “ওই প্রথম স্টেপ পর্যন্তই। তারপর তো আর আগাচ্ছি না।” কিন্তু একসময় হাঁটি হাঁটি পা পা করে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় সবগুলো স্টেপস পার করে শয়তানকে সিজদাহ করার মতো জঘন্য পাপ করে বসেছিল। আপনার ক্ষেত্রেও যে এমনটা হবে না, তার গ্যারান্টি কী। বারসিসা ছিল খুবই বড় একজন ইবাদাত-বন্দেগী করনেওয়ালা (আবিদ)। কিন্তু শেষমেষ তারই এমন করুণ পরিণতি হয়েছিল—আমি, আপনি কোনো ছার।[1]

তা ছাড়া, আল্লাহ্‌ (সুবঃ) নিজেকে নিজেই ফিতনাহতে ফেলতে নিষেধ করেছেন। তিনি কিন্তু বলেননি তোমরা যিনা কোরো না, তিনি বলেছেন যিনার কাছেও যেয়ো না।[2]

কাজেই আত্মবিশ্বাসী হয়ে ড্যাম কেয়ার ভাব নিয়ে নিজেকে এই সব ফিতনাহর মধ্যে ফেলার কোনো মানেই হয় না। আত্মবিশ্বাস ভালো, তবে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস কেবল বোকাদেরই থাকে। রংবাজি করার আরও অনেক জায়গা পাবেন, এখানে না করাই ভালো। জান্নাত-জাহান্নামের প্রশ্ন এটা। বাস্তবতাটা বোঝার চেষ্টা করুন। আপনি খুব ভালো করেই জানেন কোন কোন বিষয়গুলো আপনাকে ফিতনাহর মধ্যে ফেলে। কোন ট্রিগারগুলো একটু একটু করে আপনাকে পর্ন দেখতে, হস্তমৈথুন করতে বা আসল যিনা করে ফেলতে ধাবিত করে। সে বিষয়গুলোর তালিকা করুন। ট্রাকের পেছনে লেখা থাকে, দেখেছেন না—১০০ হাত দূরে থাকুন? সেভাবেই যিনার দিকে ধাবিত করা সেই বিষয়গুলো থেকে ১০০ হাত দূরে থাকুন। ধারেকাছেও ঘেঁষবেন না। শয়তানকে কোনো সুযোগই দেবেন না। কোনো যুক্তিই মানবেন না।



[1] বারসিসার কাহিনিটা পড়ে আসুন এই লিংক থেকে -http://bit.ly/2nabgeZ
[2] সূরা বনি ইসরাইল; ১৭ : ৩২

এরই নাম স্বাধীনতা!! (দ্বিতীয় পর্ব)

বিসমিল্লাহির রহমানীর রহীম।

সুনসান রাত ।
অফিস থেকে একাকী বাসায় ফিরছে মারিয়া।
ল্যামপোস্টের ফিকে হলুদ আলোতে তার ছায়া অস্বাভাবিক লম্বা হয়ে পুরো ফুটপাত দখল করেছে ।সেদিকে তাকিয়ে হাঁটছিল সে । আজ অফিসে প্রচুর খাটাখাটনি হয়েছে শরীর বিধ্বস্ত।কোনমতে বিছানায় যেতে পারলে বাঁচে ।বাসায় প্রায় চলে এসেছে অবশ্য।এই গলিটার শেষমাথায় পৌঁছে বামে মোড় নিয়ে পঞ্চাশ গজের মতো আগালেই তাঁর এপার্টমেন্টহটাৎ তাঁর ছায়ার ওপর পেছন থেকে  আরেকটা ছায়া পড়াতে ঘুরে দাঁড়ালো মারিয়া । সেই টেকো লোকটাকে দেখলো সেমারিয়া ঘুরে  দাঁড়াতেই লোকটা তাঁকে একটা হাসি উপহার দিল ।

হাসিটা প্রচন্ড অশ্লীল ।

মারিয়ার কলিজা শুকিয়ে গেল ।এই লোকটা অনেকক্ষন থেকেই তাঁকে অনুসরণ করছে । মতলব খারাপ ।
‘মরার কপাল’! ভাবলো মারিয়া । একটা লোকও নেই এই গলিতে, কিছু হয়ে গেলে তাঁকে সাহায্য করবে । ভাগ্যের বাপ মা তুলে  কষে একটা গালি দিয়ে  মারিয়া হাঁটার গতি বাড়িয়ে দিল । পেছন থেকে লোকটা এক দৌড়ে এসে ধরে ফেলল মারিয়াকে । বুনো দাঁতালো শুয়োরের মতো হাসছে লোকটা । মারিয়ার অন্তরাত্মা কেঁপে উঠলো ।
পাঠককে সাস্পেন্সের মধ্যে রেখে দিয়ে কিছু কথা বলে নেই ।

মনে করুন ঘটনাস্থল জার্মানি । টেকো লোকটা যদি মারিয়াকে রেপ না করে, কিন্তু অন্য সম্ভাব্য সব উপায়ে অপমান করে,(লিখতে খুবই অস্বস্তি লাগছে। গ্রাফিক বর্ণনা দেবার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী) তাহলে জার্মানির আইন অনুসারে টেকো লোকটার কোন শাস্তিই হবেনা ।উলটো মারিয়াকেই বিচারের সম্মুখীন হতে হবে যদি লোকটা থেমে যাবার পরেও মারিয়া লোকটার ওপর চড়াও হয় , চড় থাপ্পড় মারে । মারিয়া শুধু ততক্ষণই প্রতিরোধ করতে পারবে যতক্ষন লোকটা তাকে অপমান করবে ।    

কি অবিশ্বাস্য ব্যাপার ! ভাবা যায় !

নারী স্বাধীনতা, বাকস্বাধীনতা, সকলের সমানাধিকার নিশ্চিত করতে যারা রোজ রোজ চিৎকার করে গলা ফাটায় তাদের দেশেই এ কোন অদ্ভুত আইন! শুন্য হাড়ি বেশি বাজে প্রবাদটা আসলেই সত্যি ।  

[অবশ্য  এবছর (২০১৬) সালে যৌন নির্যাতনের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রণয়ন করতে যাচ্ছে জার্মানি সরকার]

প্রিয় পাঠক, পাশ্চাত্যে এবং তাদের দেওয়া ফর্মুলা অনুসরণ করে যে সব দেশ চলছে তার কোনটিতেই নারীরা নিরাপদ নন । অফিস আদালত (http://tinyurl.com/hkaugzs ), স্কুল কলেজ (http://tinyurl.com/jagb8ky), রাস্তাঘাট (http://tinyurl.com/j8cnl6z)সবখানেই নারীরা অপমান, লাঞ্ছনা , প্রতারনা আর বৈষ্যমের শিকার হন ।

        
গত পর্বে (http://tinyurl.com/hkaugzs ) আমরা আলোচনা করছিলাম বিশ্বজুড়ে কর্মক্ষেত্রগুলোতে নারীরা কত ব্যাপকহারে যৌন নির্যাতনের স্বীকার হচ্ছেন সে বিষয় নিয়েএই পর্বেও আমাদের সে আলোচনা অব্যাহত থাকবে । এই পর্বে মূলত বিশ্বের অর্থনীতিতে যেসব দেশগুলো গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে মোটামুটি সে সব দেশের কর্মক্ষেত্রে নারীদের উপর চালানো সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট এর চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে । এই ছোট্ট পরিসরে বিস্তারিত আলোচনা করার সুযোগ যেমন নেই তেমনি সব দেশ কাভার করাও সম্ভব না । ধৈর্য ধরে পড়ার অনুরোধ থাকলো ।   

ইতালীঃ
৫১.৮ শতাংশ নারীরা অভিযোগ করেছেন তারা তাদের জীবনে একবার হলেও কর্মক্ষেত্রে  যৌন নির্যাতনের স্বীকার হয়েছেন। ISTAT এর তথ্য অনুসারে গত তিনবছরেই কর্মক্ষেত্রে প্রায় ৪ মিলিয়ন যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে । সবচেয়ে বেশী ঝুঁকির মধ্যে থাকেন দেশের দক্ষিণাংশে বসবাস করা সদ্য গ্র্যাজুয়েটরা ।

জার্মানিঃ
শতকরা ৪৮ জন নারী কর্মক্ষেত্রে তাদের জীবনে একবার হলেও যৌন নির্যাতনের শিকার হন । শতকরা ৭ জন নারী প্রতিনিয়তই যৌন নির্যাতনের শিকার হন ।

দুঃখজনক ব্যাপার হলো জার্মানিতে যৌন নির্যাতন, বিচারের আওতায় পড়ে না ।অবস্থা খুবই গুরুতর হলে এটাকে ইনসাল্ট হিসেবে চার্জ করা হয়!  

অস্ট্রেলিয়াঃ
2012 Sexual Harassment National Telephone Survey  এর জরিপ অনুসারে কর্মক্ষেত্রে প্রতি ১০ জন নারীর মধ্যে ১ জন যৌন নির্যাতনের স্বীকার হয়ে থাকেন । 


কানাডাঃ নব্বই শতাংশের কিছু বেশী কানাডিয়ান নারীরা বলেছেন তাঁরা তাদের কর্মক্ষেত্রে অন্তত একবার কর্মক্ষেত্রে নির্যাতনের স্বীকার হয়েছেন । নব্বই শতাংশ পুরুষও স্বীকার করেছেন তাঁরা অন্তত একটি কর্মক্ষেত্রে সংঘটিত যৌন নির্যাতনের কথা জানেন বা নিজে সাক্ষী ছিলেন । কর্মক্ষেত্রের এই যৌন হয়রানীই বোধহয় সেই প্রভাবকগুলোর একটা , যেগুলোর কারণে কানাডিয়ান নারীরা খুব ঘন ঘন চাকুরী পরিবর্তন করেন  

ইংল্যান্ডঃ
Trades Union এবং Everyday Sexism Project এর জরিপ অনুসারে অর্ধেকেরও বেশী (শতকরা ৫২ জন) নারী কর্মক্ষেত্রে যৌন নির্যাতনের (ধর্ষণ,কুইঙ্গিত,বাজে মন্তব্য,স্পর্শ) শিকার হন । ১৬-২৪ বছর বয়সী নারীদের ক্ষেত্রে এই হার বেড়ে দাড়ায় শতকরা ৬৩ জনে। 
প্রতি পাঁচজন নারীর মধ্যে একজন বলেছেন তাঁরা তাঁদের বস বা ঊর্ধ্বতন কোন কর্মকর্তা দ্বারা যৌন নির্যাতনের স্বীকার হয়েছেন । অভিযোগ করলে তাঁদের ক্যারিয়ারে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বা তাঁদের অভিযোগ হয়তো সিরিয়াসলি নেওয়া হবে না , এই ভয়েই প্রতি চার জন মহিলার মধ্যে একজন যৌন নির্যাতনের ব্যাপারে চুপ করে থাকেন ।

Angela Rayner, Labour’s equalities  এর মুখপাত্র বলেছেন, এই জরিপের ফলাফল দেখে তিনি বিস্মিত”,এটা মজার কিছু না যে প্রতি তিনজন মহিলার মধ্যে একজন কাজ করার সময় তার শরীর নিয়ে সহকর্মীদের বিকৃত রসিকতার শিকার হবেন”।   

ইন্ডিয়াঃ

Sisters for Change  এর জরিপ অনুসারে  বেঙ্গালেরু শহরের প্রতি সাত জন গার্মেন্টস নারী কর্মীর মধ্যে একজন ধর্ষণ বা অন্য ধরণের যৌন নির্যাতনের শিকার হন । ৬০ শতাংশ নারীকে প্রতিকূল কর্মক্ষেত্রে টিকে থাকার জন্য লড়াই করতে হয় ।
কুইংগিত,কুপ্রস্তাব, জোরপূর্বক পর্ণমুভি দেখতে বাধ্য হওয়া, মারধোরের স্বীকার হওয়া  বেঙ্গালেরু শহরের ১২০০ গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির অসংখ্য নারী শ্রমিকের প্রতিদিনকার রুটিনের অবিচ্ছেদ্য অংশ ।

খুবই কম ক্ষেত্রেই নির্যাতনের কথা কর্তৃপক্ষের কানে পৌঁছায় । নির্যাতনের স্বীকার হওয়া নারীশ্রমিকদের ৮২ শতাংশই পুলিশ বা কর্তৃপক্ষের কাছে কোন অভিযোগ পেশ করেন না , কারণ তারা বিশ্বাস করেন এর বিচার তারা কখনোই পাবেন না ।
Alison Gordon (Executive director of the UK-based Sisters for Change)   মন্তব্য করেন , “ আমরা জরিপ চালানোর সময় নারী কর্মীদের ওপর চালানো যৌন নির্যাতনের বিভৎসতার মাত্রা দেখে হতবাক  হয়ে গেছি” ।


জাপানঃ

জাপান সরকারের  চালানো একটা জরিপ অনুযায়ী প্রায় একতৃতীয়াংশ নারী কর্মক্ষেত্রে যৌন নির্যাতনের (বাজে মন্তব্য, অনাকাঙ্ক্ষিত স্পর্শ ,ধর্ষণ) স্বীকার হন তাদেরই পুরুষ সহকর্মী বা বস’এর হাতে । এদের মধ্যে ৬৩ শতাংশ নারী মুখ বুজে সব সহ্য করেন । প্রতি ১০ জনের মধ্যে ১ জন রিপোর্ট করলেও সেটা আমলেই নেওয়া হয়না ।
অফিসের উঁচু পদগুলোতেও  নারীদেরকে খুব একটা দেখা যায়না । [http://tinyurl.com/hgvs6ct ]

জাহেলিয়ায়েত যুগে যখন সমাজের চোখে নারী আর পশুর মধ্যে কোন পার্থক্য ছিলনা, নারীরা ছিলই কেবলি ভোগ্যপন্য ,তখন ইসলাম এসে নারীকে দিয়েছিল প্রকৃত মুক্তির স্বাদ ।মুসলিমরা নারীকে দিয়েছিল রাণীর মর্যাদা ।আর স্বাধীনতার মুলো ঝুলিয়ে  পাশ্চাত্য নারীদেরকে ঘর থেকে বের করে এনে  বানিয়েছে যৌন দাসী এরপরেও পাশ্চাত্য আর তাদের চামচারাই নাকি  নারীদের মুক্তিদাতা ! এরাই নাকি নারীকে দিয়েছে প্রকৃত মর্যাদা !
#নারীস্বাধীনতা
#একেই_বলে_সভ্যতা

চলবে ইনশাআল্লাহ্‌......
(লস্ট মডেস্টি অনুবাদ টিম কর্তৃক অনূদিত)




Tuesday, August 30, 2016

অনিবার্য যত ক্ষয় (প্রথম পর্ব)


বিসমিল্লাহির রহমানীর রহীম
বাকের ভাইকে (এইসব দিনরাত্রি নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্র)   নিয়ে নব্বইয়ের দশকে অবিশ্বাস্য রকমের মাতামাতি করা হয়েছে  এদেশে । সেই সময়ের উঠতি তরুণেরা বাকের ভাইয়ের মতো দাঁড়ি রেখে, ব্যাকব্রাশ করে চুল আঁচড়িয়ে  সানগ্লাস চোখে ঘুরে বেড়াতো , মিছিলে শ্লোগান দিত – আমরা সবাই বাকের হবো , এত মোনা কোথায় পাব’?  
বাকের ভাইয়ের ফাঁসি আটকানোর জন্য রাস্তায় মিছিল করা হয়েছে, লেখককে হুমকি ধামকিও দেওয়া হয়েছে – বাকের ভাইয়ের ফাঁসি হলে দেখে নেওয়া হবে, অভিনেতা কাদেরেরে ( নাটকে বাকের ভাইয়ের শাগরেদ) বাসায় নাকি ঠিল ছোঁড়া হয়েছেএরকম একটা কথা শুনেছিলাম বাকের ভাইয়ের ফাঁসির পর তার কুলখানির আয়োজনও নাকি করা হয়েছিল ।


বর্তমান সময়ে দেশে   কিরনমালা সিরিয়াল নিয়ে যা হচ্ছে তা মিডিয়া কিভাবে মানুষের আবেগ নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে পারে তার একটা ক্ল্যাসিক উদাহরণ হয়ে থাকবে । পুরো চিত্রটা পাওয়ার জন্য  নিচে কিছু  খবরের লিংক দেওয়া হলে, পড়ে দেখা যেতে পারে –
"কিরনমালা নিয়ে দুই বোনের ঝগড়া। একজনের আত্মহত্যা"
.
"কিরনমালা নিয়ে স্বামির সাথে ঝগড়া, এক গৃহবধুর আত্মহত্যা"
.
"কিরনমালা নিয়ে দুই গ্রামে সংঘর্ষ। পুলিশের ১০ রাউন্ড গুলি। আড়াইশতাধিক আহত।" [ http://bit.ly/2btqtF2 ]
.
"কিরনমালা দেখতে না দেয়ায় ৭ বছরের ছেলের আত্মহত্যা"
.
"কিরনমালা দেখতে না দেয়ায় মোহাম্মদপুরে আরেক ১৪ বছরের মেয়ের আত্মহত্যা" [ http://bit.ly/2btqE3s ]
.
"মা কিরনমালা দেখার সময় দুই ভাই-বোনের পানিতে ডুবে মৃত্যু"
.
‘কিরণমালা’ দেখছেন মা, পুড়ে মরল মেয়ে


[ সংকলনে - Muhammad Tafazzul ]


নাটক, সিনেমা,মিডিয়া, গল্প, উপন্যাস এগুলো মানুষের মনোজগতকে নিয়ন্ত্রণ করার খুবই শক্তিশালী মাধ্যম ।  এই মিডিয়াই ঠিক করে দেয় আমরা কাকে নিয়ে চিন্তা করব, কিভাবে চিন্তা করব, কার দুঃখে কেঁদে বুক ভাসাবো, কার আনন্দে আনন্দিত হব , কি পোশাক পড়বো, কি খাবার খাব  সবকিছু । মানুষ হিমুর মতো পাগল সেজে খালি পায়ে হেঁটে বেড়ায় রাস্তায়,  ফুটবলারদের মতো  হেয়ারকাট দেয়,  শাহরুখ, রনবীরদের  মতো প্রেম করে ,  বিজ্ঞাপনের মডেলদের মতো  পোশাক আশাক পড়ে ।
‘আমি তো শুধু দেখছি কিছু করছি না , কারো ক্ষতি তো করছি না’ এই টাইপের একটা কথা প্রায়ই শোনা যায় অনেক পর্ণ আসক্তদের  থেকে । অনেকে নিছক অজ্ঞতাবশত এই কথা বলে, আবার অনেকে নিজেদের পর্ণদেখাকে জাস্টিফাই করার জন্য এরকম একটা অন্তঃসারশূন্য ,ফাঁপা দাবী করে ।
আপনি যদি বিশ্বাস করেন যে পর্ণমুভি/ আইটেম সং বা  মিউজিক ভিডিও (সফটকোর পর্ণ)  দেখা ধর্ষণ, যৌন বিকৃতি , শিশুনির্যাতন এর প্রভাবক হিসেবে কাজ করে , অনেক সময় প্রধান চালকের ভূমিকা পালন করে তাহলে এই লিখা পড়ে আপনার লাভ নেই । আপনি সত্যটা জানেন ।  শুধু শুধু সময় নষ্ট  হবে ।    
এই লিখাটা তাদের জন্য যারা কোনরকম তথ্য-প্রমাণ ছাড়া , কোন একাডেমিক গবেষণা ছাড়া গায়ের জোরে প্রমাণ করতে চান , “পর্ণমুভি  ক্ষতিকর নয় , ধর্ষণ বা যৌন বিকৃতির জন্য এটা দায়ী নয়”, “আমি তো শুধু দেখছি, কিছু করছি না”।    
লিখার আসল অংশে প্রবেশ করার পূর্বে কিছু কথা বলে নিতে চাই ।  আমরা এই আর্টিকেলের প্রথমেই বাকের ভাই এবং কিরনমালা’র উদাহরণ দিয়ে দেখিয়েছি মানুষ যা দেখে , মিডিয়া যেটা তার সামনে হাইলাইট করে দেখায় সেটা তার ওপর কতোটা প্রভাব বিস্তার করে । মিছিল থেকে শুরু করে খুন !
তাহলে একটা মানুষ যদি রেগুলার  পর্ণমুভি দেখে সেটা তার আচার আচরনে প্রভাব ফেলবে এটাও তো অস্বাভাবিক কিছু না ।



খুব সুচতুরভাবে   আমাদের  পৃথিবীতে পর্ণমুভিকে  স্বাভাবিক একটা ব্যাপার বানিয়ে ফেলা হচ্ছে (নরমালাইজড) । আসল পর্ণ তো আছেই [ http://tinyurl.com/9ys2k],  বিজ্ঞাপন , বিলবোর্ড আইটেম সং, মিউজিক ভিডিওতে পর্ণস্টারদের অনুকরণ করা হচ্ছে । মুভি, সিরিয়াল গুলোর মাধ্যমে  বিকৃত যৌনাচার কে (এনাল সেক্স, ওরাল সেক্স ) যেমন  প্রমোট  করা হচ্ছে , তেমনি সমকামীদের জন্যেও একটা শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হচ্ছে  । পর্ণমুভি অতিসহজলভ্য করে ফেলা হয়েছে । বাংলাদেশের ১৩-১৭ বছর বয়সীদের শতকরা ৭৭ জন  নিয়মিত পর্ণমুভি দেখছে [http://tinyurl.com/z8mzjqs ]   
এগুলোর ফলাফল তো আমরা হাতে নাতেই পাচ্ছি ।   
গত কয়েক বছরে খুব দ্রুত  আমাদের সমাজে অশ্লীলতাকে বরন করে নেওয়ার একটা সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে । আমাদের দেশে  ফেসবুকে গ্রুপ খুলে লাখ লাখ ছেলে মেয়ে  নির্লজ্জ রসিকতায় মেতে উঠছে । আমাদের তরুণ তরুণীরা  কাম তাড়নায় পাগল হয়ে ভাদ্র মাসের কুত্তাদের মতো রাস্তাঘাটে, লিটনের ফ্ল্যাটে , ক্লাসরুমে শরীরের উত্তাপ মেপে নিচ্ছে । বিছানায়   পর্ণস্টারদের অনুকরণ করছে, পশুর মতো  একে অপরকে ব্যবহার করছে । ।  দশ  বছর আগেও টিভিতে যে দৃশ্য  একাকী দেখলেও আমরা লজ্জায় লাল হয়ে যেতাম, তারচেয়েও অশ্লীল দৃশ্য আমরা ফ্যামিলি শুদ্ধ বসে দেখছি  ।    


আর কথা বাড়াতে চাই না ।  ধৈর্য ধরে পড়ে ফেলুন , ধর্ষণ, বিকৃত যৌনাচার বা শিশুনির্যাতনের সঙ্গে পর্ণমুভির কি সম্পর্ক তা নিয়ে লিখা একাডেমিক , রসকষহীন ,খুবই বিরক্তিকর এই আর্টিকেলটি ।

ধন্যবাদ ।  


যৌন নিপীড়ন,লাঞ্ছনা,অবমাননা,ধর্ষণ,অজাচার,উৎপীড়ন ও অন্যান্য যৌন অপরাধ যেমন নারী পাচার ও যৌন দাসত্বের সাথে পর্নোগ্রাফির সম্পর্ক:

“পর্নোগ্রাফি হল থিওরি আর রেপ হল তার বাস্তবায়ন।”
-রবিন মরগান (Going Too Far: The Personal Chronicle of a Feminist)

“পুরুষরা পর্নোগ্রাফির পেছনে পয়সা ঢালে আর ধকল যায় নারীদের ওপর ধর্ষণ আর নিপীড়নের আকারে এমন এক সমাজের কাছে যা তাদের তুচ্ছ সেক্সুয়াল অবজেক্ট হিসেবে গ্রহণ করে।” -রোসালি ম্যাগিও (The Dictionary of Bias-Free Usage)
“আমি জেলে লম্বা সময় কাটিয়েছি এবং অনেকের সাথেই কথা হয়েছে যাদের অপরাধের মূল উৎস হল পর্ণ।তাদের প্রত্যেকেই ছিল এতে বাজেভাবে আসক্ত।F.B.I. এর নিজস্ব সিরিয়াল হোমোসাইড এর গবেষণায় এসেছে, সিরিয়াল কিলারদের মধ্যে সবচেয়ে কমোন ইন্টারেস্ট হল পর্ণ যা একেবারে সত্য।”
-টেড বান্ডি (Serial Killer & Rapist of at least 28 Women & Girls)
পড়তে পারেন এই তিনটি লিখা -
http://bit.ly/2coKlub 
http://bit.ly/2bztRsK 
http://bit.ly/2by3Kc0 
পর্নোগ্রাফি ও উদ্দামতা:


    ২০১০ সালের একটি রিসার্চ নিয়ে আলোচনা করা যাক যা সম্পন্ন করেন ম্যারি অ্যানি লেইডেন (PhD, Director of the Sexual Trauma and Psychopathology Program Center for Cognitive Therapy, Department of Psychiatry, University of Pennsylvania)
পর্ণের উত্তেজনা ব্যাক্তিকে ফ্যান্টাসির সীমানা ডিঙ্গিয়ে ভয়াবহ বাস্তবতার মুখে ঠেলতে পারে।একটা এক্সপেরিমেন্টে একদল পুরুষকে দেখানো হয় রেইপ পর্ণ এবং আরেক দলকে নন-রেইপ পর্ণ।এরপর কোন রকম হাতের স্পর্শ ছাড়া নিজেদের সর্বোচ্চ মাত্রায় উত্তেজিত করতে বলা হল।এতে দেখা যায়, যাদের রেইপ পর্ণ দেখানো হয়েছে তাদের ফ্যান্টাসিগুলো ছিল অধিক বর্বর বাকিদের তুলনায়।আরেক গবেষণায় এসেছে, যেকোন ধাঁচের পর্ণই হোক না কেনো তার সাথে সরাসরি সম্পর্ক আছে অকথ্য গালাগালি, ড্রাগস আর অ্যালকোহলের।আর এসবই একজনকে দিয়ে ধর্ষণ করানোর জন্য যথেষ্ট।তাই যারা উগ্র লেভেলের পর্ণ দেখে, তাদের দ্বারা ধর্ষণের সম্ভাবনাও বিপুল থাকে।যাদের ডেইট রেইপ করার কলঙ্ক আছে তাদের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে প্লেবয় টাইপের  কিছু ম্যাগাজিন বেশ ভূমিকা রেখেছে ।  দেখা গিয়েছে যে,যেসব স্টেইটে এইসব ম্যাগাজিনের সার্কুলেশনের হার বেশি সেসব স্টেইটে ধর্ষণের হারও বেশি।

      যেসব কিশোর এই সব পর্ণ দেখে অভ্যস্ত তাদের ৪২% হল সেক্স অফেন্ডার।সাধারণ কিশোরদের তুলনায় এদের পর্ণে জড়িয়ে পড়াটা খুবই স্বাভাবিক।৫-৮ বছর বয়সের মধ্যেই তা সম্ভব।এদের খুব কম সংখ্যক নিশ্চিত করেছে যে নিজেদের এই কুকর্মের পেছনে পর্ণ দায়ী নয়।তবে বাকিদের ক্ষেত্রে পর্ণই প্রধান কারণ।
   
  এখন কিছু পরিসংখ্যান দেখা যাক।হার্ডকোর পর্নোগ্রাফি লেলিয়ে দিয়েছে বিভিন্ন ধাঁচের অপরাধীকে তাদের অপরাধ সংঘটনের জন্য।যেমন,চাইল্ড মলেস্টার(৬৭%),ইনসেস্ট অফেন্ডার(৫৩%) ও রেইপিস্ট(৮৯%)।এদের সবাই যে শুধু পর্ণ দেখার পরই ভিক্টিমদের উপর হামলা করত তা নয়,এদের অনেকেই রেগুলার পর্ণ দেখায় আসক্ত ছিল যা তাদের বর্বর হতে রসদ জুগিয়েছে এবং ওগুলো যে হার্ডকোর লেভেলের ছিল তাও কিন্তু নয়।তাই একজন পুরুষের পুরুষত্বের অপব্যবহার তার পর্ণ দেখার হারের ওপরও নির্ভর করে।যারা তাদের দৈহিক সামর্থ্যকে বাজেভাবে কাজে লাগায় বা যারা নারীদের কেবল আমোদের উপাদান হিসেবে উপভোগ করে আসছে তাদের দ্বারা শঙ্কিত হবার শঙ্কা অনেক বেশি থাকে।
      এবার কিছু ভিক্টিমের বক্তব্য শোনা যাক।১০০ জন ভিক্টিমের মধ্যে ২৮% বলেছে যে তাদের ওপর হামলাকারী ব্যাক্তি পর্ণ দেখেছিল আর বাকিদের মধ্যে ৫৮% এ ব্যাপারে ঠিক নিশ্চিত নয়।আবার প্রথম শ্রেণির ভিক্টিমদের ৪০% বলেছে যে তাদের ওপর যে নির্যাতন করা হয়েছিল তার একটি অংশ ছিল পর্ণ।বাকি ৪৩% বলেছে যে নির্যাতনের প্রকৃতি পর্ণে যা দেখানো হচ্ছিল তার মতোই ছিল অনেকটা।১৮% এর ধারণা অনুযায়ী,পর্ণ ব্যবহারের মাধ্যমে নির্যাতনকারী আরও ধর্ষকামী হয়ে উঠেছিল।১০০ জনের মধ্যে ১২% জানিয়েছে যে নির্যাতনকারী হুবুহু তার দেখা পর্ণের অনুরুপ ঘটিয়েছে তাদের সাথে আর ১৪% জানিয়েছে যে তাদের দিয়ে জোরপূর্বক কিছু বর্বর কাজ করানো হয়েছিল।
সবশেষে মূল কথা হল,পর্নোগ্রাফির জগৎ আপনাকে অস্বাভাবিক ব্যবহারে অভ্যস্ত করাবে।ধীরে ধীরে আপনার জীবনের নিত্যনৈমিত্তিক অংশে পরিণত হবে এবং আপনার বিকৃত মস্তিষ্ক এক সময় আপনার কাছে স্বাভাবিক হয়ে উঠবে।এই বিষের সংক্রমণ থেকে কেউই নিরাপদ নয়।হতে পারে সে পুরুষ বা নারী, যুবক বা যুবতী, বাচ্চা বা বুড়ো, বিবাহিত কিংবা অবিবাহিত।

#অনিবার্য_যত_ক্ষয়
চলবে ইনশা আল্লাহ্‌ ......
(লস্ট মডেস্টি অনুবাদ টীম কর্তৃক অনূদিত)   
পড়তে পারেন –
১) http://bit.ly/2coKsWp
২) http://bit.ly/2bOIqtA 
রেফারেন্সঃ http://bit.ly/2c8x0li