Saturday, March 26, 2016

“ও যখন পর্ন আসক্ত” (প্রথম পর্ব)

বিসমিল্লাহির  রহমানীর রহীম ।


কতটা বিপদজনক ?

প্রত্যেকবারই দেখি,  দিনের বেলা  ট্রেন যখন ঠিক যমুনা সেতুর ওপর  দিয়ে যায়, নিতান্তই কাঠখোট্টা , নীরস লোক ছাড়া প্রায় সবাই জানালা দিয়ে উঁকি ঝুঁকি মারে বাহিরের  যমুনার রূপ দেখার জন্য ।   জিনিস যেন পুরোনো হবার নয় । একবার দেখলে বার বার দেখতে ইচ্ছে করে । হল থেকে বাসায় যাচ্ছি ।  ট্রেন যখন  যমুনা সেতুর ওপরে উঠেছে ,  আমি করিডোরে হাঁটাহাঁটি করছি ।   যথারীতি প্রায়  সবাই দাঁড়িয়ে , বসে জানালা দিয়ে উঁকি ঝুঁকি মেরে  তাদের প্রকৃতি প্রেমের পরিচয় দিচ্ছে , এক মধ্যবয়স্ক  লোক দেখি মোবাইলের স্ক্রিনে বুঁদ হয়ে  আছে । আশে পাশে কী হচ্ছে  তার কোন হুঁশ জ্ঞান নেই ।   পাশ দিয়ে যাবার সময়  চোখের কোন দিয়ে তাকালাম একটু,  কি এত মজার জিনিস দেখছে ব্যাটা তা দেখার জন্য ।  আস্তাগফিরুল্লাহ...... আস্তাগফিরুল্লাহ ...  
আমরা অনেকেই  যে ভুল ধারনাটা করে বসি সেটা হল  পর্নআসক্তি শুধুমাত্র অবিবাহিত ছেলে /মেয়েদের আছে । কিন্তু  আমাদের খোলা চোখে  কখনোই ধরা পড়ে না যে মধ্যবয়স্ক বিবাহিত শিক্ষিত অশিক্ষিত দুই ধরণের  লোকদের মধ্যেও এই সমস্যা  প্রবল ।  আমাদের সমাজে বিশেষ করে মফস্বল এবং   গ্রামের দিকগুলোতে একশ্রেনীর মধ্যবয়স্ক পুরুষ আছে যারা  ইন্টারনেট মানে  বোঝে পর্নমুভি , চটিগল্প এই সব । একটু খেয়াল করলেই দেখবেন রিকশাওয়ালা, বাস /ট্রাকের  ড্রাইভার, হেল্পার মানে এই ক্যাটাগরির লোকগুলো  ইন্টারনেট, মোবাইল এবং স্যাটেলাইট চ্যানেলের কল্যানে খুব মারাত্বক রকমের অশ্লীলতার মধ্যে ডুবে আছে ।  পর্নমুভি বলুন, আইটেম সং বলুন আর চটিগল্প সবখানেই তাদের অবাধ বিচরণ ।    বিবাহিত মধ্যবয়স্কদের এই পর্ন/ আইটেম সং আসক্তি খুবই  ভয়ংকর রূপ ধারন করতে পারে । 


পর্ন মুভি দেখার ফলে অনেকেই  যৌন সক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন বা বিছানায় ঠিক স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না  সংসারে শুরু হয় অশান্তি । 
ডাক্তারি অভিজ্ঞতায়ও দেখেছি, পর্নোগ্রাফি দর্শকের যৌন-কর্মক্ষমতার ক্ষতি করে। পর্ন-দর্শকদের প্রিম্যাচিউর ইজ্যাকুলেশন (দ্রুত বীর্যপাত) এবং ইরেকটাইল ডিসফাংশনে (পুরুষাঙ্গ শৈথিল্য) ভোগার প্রবণতা থাকে।
কাগজ, সেলুলয়েড ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে অপ্রাকৃতিক যৌন অভিজ্ঞতায় এত বেশি সময় খরচ করায় তাদের জন্য সত্যিকারের মানুষের সাথে সেক্স করাটা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। পর্নোগ্রাফি তাদের যৌন অভিজ্ঞতার ধরণ ও পরিমাণ নিয়ে প্রত্যাশা ও চাহিদা বাড়িয়ে দিচ্ছে, একই সময়ে সেক্স উপভোগ করার ক্ষমতা কমিয়ে দিচ্ছে।
 ড. ম্যারিঅ্যান ল্যাডেন 


একবার পর্ন আসক্ত হয়ে গেলে    সঙ্গীর মাঝে  আর  প্রশান্তি খুঁজে পাওয়া না , তাকে শুধু ভোগ্য দ্রব্য মনে হয়     অনেক স্বামী/স্ত্রী তাদের সঙ্গীদেরকে বাধ্য করেন বিছানায়  পর্নস্টারদের অনুকরণ করতে । অনেক স্বামীই স্ত্রীকে তো রেপ পর্যন্ত করে ফেলেনভালোবাসা হারিয়ে    যায় , মধ্যরাতে   স্বামীর স্পর্শ স্ত্রীর শরীরে আর শিহরণ জাগায় না , মনে হয় একটা পশু তাকে ছিড়ে ছিবড়ে ফেলছে ।   ঝড়  থেমে গেলে স্বামী পাশ ফিরে ঘুমিয়ে যান , স্ত্রী বেচারী জেগে থাকেন একজোড়া সিক্ত চোখ আর একদলা ঘৃণা নিয়ে ।  একসময় ভেঙ্গে যায় সংসার ।

তার কাছে আমি রক্ত মাংসের একজন মানুষ ছিলাম না , ছিলাম একটা ভোগ্য পণ্য ।  বিছানায় সে আমার সঙ্গে ঠিক মতো প্রেম করতো না ,   যেন  বিছানায় শুধু তার শরীরটাই উপস্থিত , মন থাকতো অন্য কোথাওহয়তোবা সেই পর্ন অভিনেত্রীদের কাছে ; যাদের কথা চিন্তা করে সে উত্তেজিত হতো এবং আমার শরীরের ওপরে  ঝাল মিটাতো ...... 
একজন পর্ন আসক্ত স্বামীর হতভাগ্য  স্ত্রী  এভাবেই বর্ণনা করেন কীভাবে পর্ন আসক্তি তাঁর স্বামীকে পশু বানিয়ে ফেলেছিল   (Bergner & Bridges )      

একবার পর্ন আসক্ত হয়ে গেলে  নিজেদের বঊ/স্বামীর শরীর দিয়ে তাদের আর  পোষায় না ।  পর্ন   স্টার / আইটেম গার্ল এর   কাছে  নিজেদের বউ/স্বামীকে  তখন খুব পানসে মনে হয় ।  তাদের  দরকার হয় নতুন শরীরের । তাছাড়া একটা আর কয়দিন চলেএরকম মানসিকতা পোষণ করে এমন পাবলিকেরও অভাব এই দেশে নাই ।   

বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থায়  যেহেতু একের অধিক বিয়ে করাকে খুবই বাঁকা চোখে দেখা হয় । কাজেই তাদের বিকৃত লালসা  চরিতার্থ করার জন্য তারা বেছে নেয়  অন্য রাস্তা । শুরু করে পরকীয়া , ব্যাভিচার । অনেক  সময় কোপ পড়ে বাসার কাজের মেয়ে ,  ছাত্রী,  অফিসের  অধস্তন নারী কর্মচারী  এই শ্রেণীর মহিলাদের উপর ।   পর্নমুভির গল্পগুলোও এমন ভাবে সাজানো হয় যেন   অফিসের  অধস্তন নারী কর্মচারীরা বস্‌দের সঙ্গে শুতে খুবই উদগ্রীব ।  আর এখনকার দিনের মুভি , নাটকের কাহিনীও এই  কামের আগুনে কেরোসিন ঢেলে দিচ্ছে । 
সবচেয়ে জঘন্য ব্যাপার হলো  অনেক অনেক মানুষ আজকাল ইন্সেস্ট চটিগল্প পড়ে  বা এই কন্সেপ্ট নিয়ে বানানো পর্নমুভি গুলো  গোগ্রাসে গিলে । বিবাহিত, অবিবাহিত সবাই । বাঙ্গালী গর্ব করে তার ভাষা নিয়ে , কোটি কোটি টাকার ফুল নষ্ট করে শহীদ মিনারে , দেশ টা মা না বলে আবেগে "কাইন্দালসে" টাইপ অবস্থা   অথচ এই বাঙ্গালীই ইন্টার নেটের এমন অবস্থা করে ছেড়েছে যে গুগলে মা বা বোন লিখলেই যে অটোসাজেশান গুলো আসে তা স্বাভাবিক মস্তিষ্কের কোন মানুষের পক্ষে হজম করা সম্ভব না । গাঞ্জার কল্কিতে দুটান মেরে আসলে অবশ্য ভিন্ন কথা ।       
এইসব বিকৃত লোকদের  লালসার শিকারে পরিণত হয় তাদেরই কোন নিকটাত্মীয়। বিশেষ করে খালু, ফুফা,দুলাভাই ,দেবর এরকম আত্মীয়ের দ্বারা অনেকই যৌন নিপীড়নের শিকার হয় ।  বিশ্বাস করতে কষ্ট হলেও একটু খোঁজ খবর করে দেখেনঅবস্থা টের পাবেন  
......... চলবে ইনশা আল্লাহ

অবশ্যই পড়ুনঃ
১০৮ টি নীলপদ্ম সিরিজের সবকয়টি পর্ব-
প্রথম পর্ব-https://goo.gl/4oSpTV
দ্বিতীয় পর্ব- https://goo.gl/98xQZV
শেষ পর্ব - http://bit.ly/2rsdkEv

Tuesday, March 22, 2016

নীল রঙের অন্ধকার (পঞ্চম কিস্তি)

বিসমিল্লাহির রহমানীর রহীম  



বিশোর্ধ্ব এক পর্ন-আসক্ত তরুণের জীবনের একটি দিন











আমি পর্নে আসক্ত।
আমি সবসময় এরকম না, কিন্তু অনেক দিন থাকে যেদিন ঘুম থেকে উঠে কোন কিছুই করতে ইচ্ছা
হয় না। বরং ঠিক করি, দিনটা যাবে পর্ন দেখে, হস্তমৈথুন করে, খাওয়া-দাওয়া করে এবং ঘুমিয়ে। হয়তো আমি এটা আগে থেকেই ঠিক করে রাখি না, তাও কীভাবে যেন হয়ে যায়। সত্যি কথা বলতে, মোটামুটি  ১০ম বারের বেলায় যথাসম্ভব চেষ্টা করি একদমই না ভাবতে, যে আমি বেশ ভাল পরিমাণ সময়ই সম্পূর্ণ অচেতনতায় কাটাচ্ছি। পোষায় না যদিও। শুধু কয়েক মুহুর্তের যৌন-আনন্দ। এমনকি কখনো তাও না, শুধু শ্বাস-প্রশ্বাস একটু দ্রুত হওয়া। (পর্নের) চেহারাগুলোর কথা চিন্তা করি, নিজেকে ওদের জায়গায় কল্পনা করি। আমার পছন্দের পর্নের টাইপ হল যেগুলোতে গ্রুপ-সেক্স থাকে। কিছু বন্ধু-বান্ধব একত্র হওয়া শুধুমাত্র যৌনতার খাতিরে। তেমন কোন ব্যাপার না। তাদের লজ্জা করে না, নাই অপরাধবোধ, নাই খেদ। শুধু মেনে নেওয়া। শুধু সেক্স। শুধু নগ্ন হওয়া, একে অপরের দিকে মুচকি হাসা। ভাল।
আমার ভাল লাগে।
প্রায়ই চিন্তা করি, আমি ওরকম করতে পারতাম কি না- নিজের কাছে নিজের যৌনতার স্বীকৃতি পাওয়া এবং যতটা চাই ততটা মুক্ত আর উদার হওয়া।

আমি সবসময় বুঝতে পারি কোনটা মেকি, আসল না। আমি ঐ ভিডিওগুলো একদমই সহ্য করতে পারি না, যেগুলো দেখেই বুঝা যায় মানুষগুলো অভিনয় করছে, অথবা যা-ই করুক, বাধ্য হয়ে করছে। মাঝেমাঝে আমি হয়তো ওটাও দেখবো এবং হস্তমৈথুনও করব। কোন সীমা নেই, শুধু হস্তমৈথুন  করতে চাই। নিজেকে অচেতনতায় ফেলে দিয়ে অনুভূতিহীন হতে চাই। ভাবা শুরু করি, কতটা সেক্স আমি মিস করছি এবং আমি সত্যিকারের রিলেশনশিপকে কতটা ভয় পাই। এমনকি যে সব “রিলেশনশিপে” আমি ছিলাম, সবগুলোই পর্ন দ্বারা এত বেশি প্রভাবিত হয়ে গিয়েছিল যে একটা স্ক্রিনের সামনে বসে থাকার সাথে ওগুলোর আর কোন পার্থক্য ছিল না। কোন ভালবাসা বা সম্মান ছিল না। খালি উত্তেজনা আর জটিলতা।

এখন রাত ৯টা বাজে, মনে হয় সকাল ৯টায় শুরু করেছিলাম, আজকে ক্লাসেও যাইনি, বাসার বাইরেও যাইনি (একবার বাদে। ম্যাকডোনাল্ড থেকে খাবার আনতে গিয়েছিলাম, কারণ ম্যাকডোনাল্ড আর পর্ন কেন জানি একসাথে ভালই যায়)। সারাদিনের মধ্যে আমার খুব বাজে সময় যায় যখন চিন্তা করি আমার জীবনে কখনো পরিবর্তন হবে না এবং আমি সবসময়ই আমার ভীতি ও সমস্যাগুলোকে মোকাবেলা করতে ভয় পাবো। তার চেয়ে বরং কম্পিউটারে বা সেল-ফোনে পর্ন দেখতে থাকি, অথবা মাথার মধ্যে কল্পনা করতে থাকি ওগুলো। এতে ভাল কিছু হয় না এবং ফলাফলটাও আসলে পোষায় না। আমি বেশ ক্লান্ত আর আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ি। মাঝেমাঝে কষ্ট হয়। গতকাল থেকে গোসল করিনি। সম্প্রতি আমার একটা “রিলেশনশিপ” ব্রেক আপ হয়ে গেছে, আমি এখনো তা নিয়ে বিষণ্ণ। আমি পর্ন ছেড়ে দিতে পারছি না কারণ আমার মনে হচ্ছে এটা তাকে (এক্স-গার্লফ্রেন্ড) আমার সাথে কোনভাবে যুক্ত রাখছে। জগাখিচুড়ি টাইপ বিকৃত মানসিকতা আর কি!

ব্যাপার হল, আমি বেশ স্বাভাবিক একটা মানুষ, স্নাতক শ্রেণীর ছাত্র। আমি চমৎকার বৈজ্ঞানিক জিনিস-পত্র পড়াশোনা করি এবং ক্লাস নিই। কিন্তু তাও, আমার ভাল লাগে না এগুলোর কোনটিই। যখন এই মানসিকতায় প্রবেশ করি, কোন কিছুরই পরোয়া করি না তখন। কোন কিছু চিন্তা করতে চাই না, সব ছুঁড়ে ফেলে দিতে ইচ্ছা করে। মনে হতে থাকে সবকিছুই আমার অধিকারসূত্রে পাওয়া। কোন কিছুর জন্যই আমি কৃতজ্ঞ না। লজ্জা, অপরাধবোধ আর আশাহীনতার সবচেয়ে গভীর গর্তে পড়ে আছি আমি। আত্মসম্মান জানালা দিয়ে পালায়, শুধু চিন্তা করি কতটা ঘৃণা করি নিজের জীবনকে এবং কতটা চাই মারা যেতে। পর্নে আসক্তির মাত্র দশ বছরের মাথায় জিনিসগুলো বিবর্তিত হয়ে পরোক্ষভাবে আত্মঘাতী চিন্তায় পরিণত হয়েছে।

মজার ব্যাপার হল, হয়তো আগামীকাল সকালে ঘুম থেকে উঠে সব ঠিক হয়ে যাবে এবং আমি আরো একবার নিজেকে বুঝাতে সক্ষম হব যে পর্ন-আসক্তিকে চিরতরে দূর করে ফেলব। পৃথিবী আমার হাতের মুঠোয় থাকবে, আমি চমৎকার সব কাজ করব। কিন্তু যে মুহূর্তে মনে হবে ব্যাপারগুলো আমার মন মত হচ্ছে না, আবার আমি যৌনতার সেই অন্ধকার গর্তে পড়ে যাব। যৌনতা খারাপ না। এটা স্বাভাবিক এবং সুন্দর। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, পর্ন আমার জন্য এটাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। নারীর প্রতি আমার দৃষ্টিভঙ্গীকে নষ্ট করেছে পর্ন, যেটাকে কি না আমি ভালবাসি ও কদর করি বলে দাবী করি। পর্ন হয়তো সবার জন্য এরকম না, কিন্তু আমাকে এটা ধ্বংস করে ফেলছে। আমাকে ধসিয়ে দেয় প্রতিটিবার। তাহলে কেন আমি বারবার এখানে আসি? কারণ এটা পরিচিত, এবং আমি নিরাশ হয়ে এমন একটা পর্যায়ে পৌঁছাই যে তখন আর কোন কিছুর পরোয়া করি না। আমি এর আদ্যোপান্ত জানি, জানি কীভাবে এতে ঢুকতে হয় এবং কীভাবে এটা থেকে বের হতে হয়।

এই সময়টায় আমার সামনের যৌনদ্দীপক ছবি এবং “যৌন তৃপ্তি” ছাড়া অন্য আর কিছু থাকে না। অনেকবার চেষ্টা করেছি এটা দূর করার। খুব বেশি হলে কয়েক মাস যাওয়ার পর এই অভ্যাস মাথা-চাড়া দিয়ে উঠে আমাকে বুঝায় যে আমি সর্বোচ্চ এই পর্যন্তই আসতে পারব এবং এটাই আমার যৌনতা আর পুরুষত্বকে সংজ্ঞায়িত করে। আমি ভবিষ্যতে নিজেকে ঠিক করার চেষ্টা করব, কিন্তু এখন আমি বিষণ্ণ ও ভীত যে সারা জীবন এভাবেই চলতে থাকবে।

নিজের উপর ক্ষুব্ধ আমি, ক্ষুব্ধ নিজের অতীতের উপর, শৈশব আর সংস্কৃতির উপর, যা কিছু আমাকে নারী ও যৌনতার মাঝের সম্পর্ক শিখিয়েছে। আমি তাদেরকে দুষতে চাই, যারা আমাকে শিখিয়েছে নিজের অনুভূতি আর উদ্বেগকে চেপে রেখে সবকিছু ঠিক আছে ভান করতে।

আমি ঠিক নেই।
আমি একলা, আমি ভীত।
মনে হচ্ছে যা-ই করছি, আমাকে জোর করে করানো হচ্ছে এবং আমি যা চাই, তা থেকে আমাকে আটকে রাখা হচ্ছে। আমি কি চাই, তাও জানি না। কাউন্সেলিং ও গ্রুপ-থেরাপি নিচ্ছি। দেখা যাক কি হয়। এতদিনে সামান্য উন্নতি হলেও নিজের উপর খুব বেশি নিয়ন্ত্রণ আনতে পারিনি। যখন পা পিছলে যায়, এখানে এসে পড়ি, মনের একদম অস্পষ্ট একটা জায়গায়, যেখানে কোন কিছুরই মানে নেই, যে জায়গাটা আমার জীবনের সব ভালকে ঢেকে দেয়। আমি খুব ক্লান্ত হয়ে পড়ি। ক্লান্ত লাগে, অনেক ক্লান্ত... এবং আসক্তি চলতেই থাকে।

আমি একজন পর্ন-অ্যাডিক্ট।

----------------------------------------------------------------

দুর্ভাগ্যবশত উপরের এই ব্যক্তিগত কাহিনীটি মানুষ যতটা মনে করে তার চেয়েও কমন। এখন অসংখ্য তরুণ পর্ন দেখার খারাপ ফলগুলো উপলব্ধি করছে এবং মুক্ত হতে চাইছে। কিন্তু পর্ন অত্যন্ত আসক্তিকর প্রকৃতির হওয়ায় তারা নিজেদেরকে বিষণ্ণতা, (পর্নের উপর) নির্ভরশীলতা, এবং স্ব-চিকিৎসার এক চক্রে আটক অবস্থায় আবিষ্কার করছে। রিলেশনশিপ এবং আত্মমর্যাদাবোধ ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে, আসক্তির শেকলে আটকা পড়ে।


“আপনি” কী করতে পারেন
পর্ন খুবই আকর্ষণীয় আর উত্তেজনাময় মনে হতে পারে, কিন্তু আসলে এটা যা করে তা হল, দর্শককে আসক্ত করা এবং তার সম্পর্কগুলোর ক্ষতি করা। আর্টিকেলটা শেয়ার করে পর্ন দেখার ক্ষতি এবং ফলাফল বিষয়ক এই আসল কাহিনীর প্রতি আলোকপাত করতে পারেন।

(মূল লিখাটি- www.fightthenewdrug.comসাইট থেকে সংগৃহীত)
(লস্ট মডেস্টি অনুবাদ টিম কর্তৃক অনূদিত)



পড়ুন প্রথম চার কিস্তি –