Wednesday, September 28, 2016

সমকামীদের ভ্রান্ত দাবি ও নাস্তিকদের মিথ্যাচার (প্রথম পর্ব)




বিসমিল্লাহির রহমানীর রহীম ।
সত্যের একটা বৈশিষ্ট্য হল যে সত্য সবসময় উৎকৃষ্ট ও সঠিক বিষয়ের পক্ষেই থাকে , সত্য কখনোই কোন ভুল ও নিকৃষ্টের পক্ষ নেয় না। এইজন্যই মূলত যারা সমাজে নিকৃষ্ট কর্মকান্ডের প্রচার করতে যায় তখন তারা মূলত মিথ্যার আশ্ৰয়ই নেয়। ইতিহাস তারই সাক্ষী |
তাই স্বাভাবিকভাবেই সমকামী ও নাস্তিকরা তাদের হীন স্বাৰ্থ চরিতার্থ করার জন্য অনেক মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে মুক্তমনার প্রতিষ্ঠাতা নাস্তিক ব্লগার অভিজিত রায় তার সমকামিতা একটি বৈজ্ঞানিক এবং সমাজ-মনস্তাত্ত্বিক অনুসন্ধান বইয়ে বিজ্ঞান নিয়ে অনেক মিথ্যাচার করেছেন । এই বইয়ে তিনি সমকামিতা সম্পর্কিত পুরনো কিছু বৈজ্ঞানিক গবেষণার কথা উল্লেখ করেছেন যা কিনা পরবর্তীতে বিজ্ঞানীরা ভুল প্রমাণ করেছেন। আমি এখানে সমকামীদের প্রচারিত প্রধান কিছু ভ্রান্ত বৈজ্ঞানিক দাবির কথা তুলে ধরব, ইনশাআল্লাহ |




ভ্রান্ত দাবি-০১: "একজন মানুষ সমকামী হয়ে জন্মাতে পারে"
সমকামীরা তাদের হীন দাবি বাস্তবায়ন করার জন্য কয়েকজন বিজ্ঞানীর ভুল রিসার্চের আশ্রয় নিয়েছিল এবং এখনো নিচ্ছে। যেমন নাস্তিকদের ব্লগ মুক্তমনার প্রতিষ্ঠাতা অভিজিত রায় তার সমকামিতা একটি বৈজ্ঞানিক এবং সমাজ-মনস্তাত্ত্বিক অনুসন্ধান বইয়ে বিজ্ঞান নিয়ে উল্টা-পাল্টা ও ভুল কথা বলেছেন। জন্মগতভাবে সমকামী হবার সম্ভাবনার কথা বলতে গিয়ে অভিজিত রায় বলেছেন--
" আরেকটি ইঙ্গিত পাওয়া গেছে Dean Hamer এর সাম্প্রতিক গবেষণা থেকে ডিন হ্যামার তার গবেষণায় আমাদের ক্রোমোজোমের যে অংশটি (Xq28) সমকামিতা ত্বরান্বিত করে তা শনাক্ত করতে সমর্থ হয়েছেন” । [১]


তিনি শুরুতেই মিথ্যা বলেছেন। কারণ Dean Hamer এর এই ভুল গবেষণা সাম্প্রতিক না । এটা প্রায় ২১ বছরের পুরনো গবেষণা উনি কি উনার বই কপি-পেস্ট করে লিখেছেন নাকি? সাম্প্রতিক গবেষণা বলে আসলে তিনি পাঠককে আকর্ষণই করতে চেয়েছেন।


কেউ জন্মগতভাবে সমকামী হতে পারে না:


জন্মগতভাবে সমকামী হওয়া যায়- এই দাবির পক্ষে যার গবেষণাকে শক্তিশালী প্রমাণ হিসেবে পেশ করার চেষ্টা করা হয় তিনি হলেন Dr. Dean Hamer  |
১৯৯৩ সালে বিখ্যাত সায়েন্টিফিক ম্যাগাজিন'Science Dr. Dean Hamer এর সমকামীতা নিয়ে স্টাডির বিষয়ে এক আর্টিকেল  প্রকাশ করে । সে আর্টিকেলে বলা হয় যে সমকামীতা বৈশিষ্ট্যের জন্য হয়তো কোন জিন দায়ী হতে পারে। ব্যাস,  সমকামীরা তো খুশিতে পাগল হয়ে গেল এই স্টাডি পড়ে।আর সমকামীদের পক্ষের মিডিয়া মাধ্যমগুলো এটা প্রমোট করা শুরু করল।


প্রথমে শুরু করলো  National Public Radio, এরপর Newsweek আরো রঙচং মেখে ‘Gay Gene’'  শিরোনামে  লিখা  প্রকাশ করল,এরপর দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল আরো রংচং লাগিয়ে খবরটা ছড়িয়ে দিল । অসৎ মিডিয়ার মত খারাপ জিনিস কমই আছে | Dr. Dean Hamer সাহেবকে মিডিয়া'Gay gene এর জনক বানিয়ে ফেলেছিল এরা । আসলে Dr. Dean Hamer এর গবেষণাকে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।


অবশ্য পরে Dr. Dean Hamer এই বলে তার অবস্থান পরিস্কার করেছেন-----
" আমরা (গবেষণার) বংশবিবরণ থেকে যে simple Mendelian inheritence পাব বলে ভেবেছিলাম তা পাইনি। আসলে, আমরা একটাও সিঙ্গেল ফ্যামিলিতে হোমোসেক্সুয়ালিটি সুস্পষ্টভাবে কখনোও পাইনি যা কিনা মেন্ডেল তার peaplant এর গবেষণায় পেয়েছিলেন” | [২]


Dr. Dean Hamer এর গবেষণাকে অনেক বিজ্ঞানী ভুল প্রমাণ করেছেন।আমি কয়েকটা সফল রিসার্চের কথা বলছি---


১) মানবজাতি জেনেটিক্সের ফিল্ডে এক বিরাট বড় অর্জন করে যখন তারা"The Human Genome প্রজেক্ট কমপ্লিট করে|এই প্রজেক্ট শুরু হয়েছিল ১৯৯০ সালে এবং শেষ হয় ২০০৩ সালে। এই প্রজেক্টের মাধ্যমে মানুষের জেনেটিক কোডের সিকুয়েন্সগুলোকে ম্যাপিং করার উদ্দেশ্যে এটি তৈরী করা হয় | [৩]  কিন্তু এই প্রজেক্ট দিয়ে তথাকথিত "Gay gene কে আইডেন্টিফাই করা সম্ভব হয়নি।


২) X ও Y হল মানুষের সেক্স ক্রোমোসোম | X ক্রোমোসোম ১৫৩ মিলিয়ন base pairs এবং ১১৬৮টি জিন ধারণ করে I X ক্রোমোসোমের থেকে ছোট ক্রোমোসোম Y তে আছে ৫০ মিলিয়ন base pairs এবং ২৫১টি জিন | এই ক্রোমোসোমগুলোকে নিয়ে গবেষণা করেছে Baylor University,The Max Planck University The Sanger Institue, Washington University fift:RiffTRUCTE & 25 of TI-55 & 3 & WICW; foil.5 WBi Gay gene এর অস্তিত্ব X ক্রোমোসোমেও পায়নি, Y ক্রোমোসোমেও পায়নি। [৪]


৩) Gay gene এর স্রষ্টা বলা হয় যাকে সেই Dean Hamer ‘Gay gene’  এর কথা অস্বীকার করেছেন ।  Scientific American Magazine তাকে যখন জিজ্ঞেস করে যে সমকামীতা কি বায়োলজিতে solely rooted? তখন তিনি বলেছিলেন---
"Absolutely not.From twin studies, we already know that half or more of the variability in sexual orientation is not inherited.Our studies try to pinpoint the genetic factors ... not negate the psychosocial factors." [৫]


৪) Dr. George Rice নামের আরেকজন বিজ্ঞানী পরবতীতে ডিন হ্যামারের মত একই গবেষণা করেছিল।কিন্তু Dr. George এই গবেষণা থেকে কোন পজিটিভ ফলাফল লাভ করতে পারেননি। Dr. George Rice তার গবেষণার ফলাফল সম্পর্কে বলেন---


" আমাদের গবেষণার তথ্য উপাত্ত এমন কোন জীনের উপস্থিতিকে সমর্থন করে না যা কিনা Xq28 পজিশন দ্বারা sexual orientation কে শক্তিশালীভাবে প্রভাবিত করতে পারে|" [৬]
৫) Dr. Neil Whitehead বায়োকেমেস্ট্রির পি এইচ ডি প্রাপ্ত একজন অধ্যাপক। উনি এই বিষয় নিয়ে প্রচুর গবেষণা করেছেন যা বিজ্ঞান মহলে সমাদৃত হয়েছে। উনি জন্মগতভাবে সমকামী হওয়ার সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়ে বলেন,
"সমকামিতা জন্মগত নয়, জিনেটিক দ্বারা নির্ধারিতও নয় এবং সমকামিতা অপরিবর্তনশীলও নয়। "  [৭]


এছাড়া সমকামীরা Drs. J Michael Bailey, Richard C. Pillard এর পুরোনো Twin Studies রিসার্চকেও দাবি প্রমানে ব্যবহার করে । অথচ এই  স্টাডি উল্টো আরো প্রমাণ করে যে সমকামিতা জন্মগত নয়। আসলে শুধু জীন দ্বারা মানুষের যৌনতার ভূৎপত্তি নির্ধারত হয় না। কেউ জন্মগতভাবে Heterosexual ও না আবার কেউ জন্মগতভাবে Homosexualও না|বরং মানুষ যৌন আচরণ করতে শিখে পরিবেশ থেকে, বায়োলজিরও ভূমিকা আছে এইক্ষেত্রে |” [৭]


[পরে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে ইনশা আল্লাহ্‌ । তবে এই কথা সত্য যে সেক্সুয়াল ওরিয়েন্টেশন কিভাবে নির্ধারিত হয় তা নিয়ে এখনোবিজ্ঞানীরা একমত হতে পারেননি। তারা মনে করেন যে জেনিটিক্যাল এবং এনভাইরনমেন্টাল ফ্যাক্টর উভয়ই এইক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করে I Epigenetics এর দ্বারা এখন সমকামিতার ব্যাখ্যাটা আমার পছন্দের সময়ের অভাবে এটা নিয়ে আলোচনা করতে পারলাম না|এতটুকু বলা যায় যে,Epigenetics এ এনভাইরনমেন্টাল ফ্যাক্টরগুলোর কথা আসবে। আমি মনে করি কেউ জন্মগত সমকামী হলেও আগুমেন্টটা সমকামিতার পক্ষে যায় নাকারণ অনেকে ফিজিক্যাল সাইকোলজিক্যাল ডিসঅর্ডার নিয়ে
জন্মাতে পারে ফিজিক্যাল সাইকোলজিক্যাল ডিসঅর্ডার নিয়ে কারো জন্ম হতে পারলে সেক্সুয়াল ডিসঅর্ডার নিয়েও অনেকের জন্ম হতে পারে ডিসঅর্ডারকে ডিসঅর্ডার হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়াটাই সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে]


লিখেছেন-  Farhad Hossain
লেখক Faridpur Medical College এ অধ্যয়নরত

চলবে ইনশা আল্লাহ্‌ ......


#stand_aggainst_Lgbt_propaganda
#মিথ্যায়_বসত 
রেফারেন্স-
১) www.narth.org/docs/istheregene.html
২) Hamer and copeland page-104
৩) How it works, issue 49
৪) www.trueorigin.org/gaygene01.asp
৫) New Evidence of a gay gene by Anastasia Touefexis, Time, November 13, 1995, vol. 146, issue 20,p.95
95
৬) George Rice, et al., “Male Homosexuality: Absence of Linkage to Microsatellite Markers at Xq28,” Science, Vol. 284, p. 667.
৭) Neil and Briar Whitehead,My Genes Made me Do it!,page 9

Friday, September 23, 2016

“ফ্যান্টাসি কিংডম ” (প্রথম কিস্তি)

বিসমিল্লাহির রহমানীর রহীম

-ভাই , বলেন তো কিশোর পাশা বলে বাস্তবে কেউ আছে কিনা ?
পাশের বাসার ছাদ থেকে প্রশ্নটা ভেসে আসলো সঙ্গে একরাশ উদ্বিগ্নতা ছাদের চিপায় নিরিবিলিতে  বসে একটু  আতলামী করছিলাম অচমকা এমন প্রশ্নে ভসকাইয়া  গেলাম
উফফ! অসহ্য - শান্তি মতো  একটু পড়তেও পারবো না   খুবই বিরক্তি নিয়ে বহু কষ্টে বই থেকে মুখ উঠিয়ে তাকালাম  প্রশ্নকর্তার দিকে (আঁতেল বলে একটু সুনাম ছিল এককালে ) প্রশ্নকর্তা পাশের বাসার তূর্য যে সময়কার কথা বলছি, তখন  ক্লাস সিক্সে পড়ে  সে আমি তখন তার চেয়ে দুই বছরের বড়   একই স্কুলে ক্লাস এইটে পড়ি আমাকে  ওস্তাদ মানে সে
চোখে মুখে রাজ্যের টেনশান নিয়ে  তূর্য আমার উত্তরের অপেক্ষা করছেযেন এই প্রশ্নের উত্তরে আমি কি বলি সেটার  ওপর তার বাঁচা মরা নির্ভর করছে

তখনো তিন গোয়েন্দা ধরিনি , এক ফেলুদাতেই মজে ছিলাম  তাই মূর্খতা ঢাকার জন্য পাল্টা প্রশ্ন করলামকোন কিশোর পাশা ?
সাগরেদ , ওস্তাদের মূর্খতায় একটু দমে গেল
-ঐ যে ভাই , ঐ কিশোর পাশা!!! রকিব হাসানের লিখাতিন গোয়েন্দাসিরিজের প্রধান গোয়েন্দা আমেরিকায় থাকে
- হুম ,তো কি হইছে ?
- আর বইলেন না ,ভাই ! আমাদের ক্লাসের মুন আছে না, মেয়েদের ক্যাপ্টেন?
-হুঁ ...তো ?
-তারে প্রপোজ করছিলাম আজকে ...
- তুই প্রপোজ করছিলি !!! এই পিচ্চি বয়সে !!!
- হ্যাঁ ভাই তারপর কি হইছে শোনেন না ,মুন আমাকে বলছে সে আমাকে ভালবাসতে পারবে না (অভিমানী কন্ঠস্বরে) সে অন্য একজনকে ভালোবাসে তার নাম কিশোর পাশা আমেরিকায় থাকে   ‘ধলা’  রবিন মিলফোর্ড আর  ‘কাউলা’  মুসা আমানের সঙ্গে মিলে গোয়েন্দাগিরি করে বেশ নামডাক অ্যাঁ গোয়েন্দা  হইছে আমার......  যতসব  লেজকাটা টিকটিকি !!!


 তিন গোয়েন্দা সিরিজের লেখক  রকিব হাসানকে  একসময় বেশ সমালোচনা সহ্য  করতে হয়েছিল সমালোচকদের অবশ্য দোষ ছিল নাতিন গোয়েন্দার বই পড়ে  মাথা বিগড়ে যাওয়া পোলাপান যদি এডভেঞ্চারের লোভে বাড়ী থেকে নিরুদ্দেশ হয়ে যায় তাহলে সেটা সিরিয়াসলি নেওয়াই উচিত   দুষ্টু ছেলেপিলেদের যেমন কান দুটো মলে দিয়ে বাসায় ফেরত পাঠানো দরকার তেমনি লেখকে একটু বকে দেওয়াওতো  দরকার

একসময় ফেলুদার ভূত আমার ঘাড়ে বেশ ভালোমতোই চেপেছিল ফেলুদার মতো চিত হয়ে শুয়ে সিলিং এর দিকে তাকিয়ে থাকতাম, আঙ্গুল মটকাতে মটকাতে ঘরময় পায়চারী করে বেড়াতাম, ভ্রূ কুঁচকে চিন্তা করার ভান করতে  করতে তো আমার চেহারায় পার্মানেন্ট একটা ভাব চলে আসলো ভ্রূ কুঁচকে থাকার , এখন চেষ্টা করেও ঠিক করতে পারিনা (ফেলুদার মতো হাতের আড়ালে কায়দা করে চারমিনার ধরিয়ে তাতে দুটান দেওয়ার চেষ্টা অবশ্য কখনো করিনি! আমি বরাবরই ভালো ছেলে!)

ফেলু মিত্তির , কিশোর পাশাদের দিন শেষ মুভি /সিরিয়াল/পর্ন/আইটেম সং/ চটিগল্পের রমরমা অবস্থা এখন এখনকার কিশোর কিশোরীরা এগুলোতেই বুঁদ হয়ে থাকে রাতদিন ইউরোপ আমেরিকার কথা ছেড়েই দিলাম , খোদ আমাদের দেশের পর্নস্ট্যাটস দেখলে মাথা ঘুরে যায় মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন পরিচালিত সমীক্ষায় দেখা গেছে, রাজধানীতে ৭৭ শতাংশ কিশোর পর্ন মুভিতে আসক্ত    বাস্তব অবস্থা যে কতটা ভয়াবহ সেটা আমিও যেমন জানি তেমন আপনিও জানেন   বিস্তারিত জানার জন্য  পড়ে দেখা যেতে পারে [বাংলাদেশে পর্ন-http://bit.ly/2ccXGnF ] দেখুন যমুনা টিভির এই অনুসন্ধানী প্রতিবেদন - http://bit.ly/2c0TR1p
এই আসক্তি আমাদের জেনারেশানের ছেলেমেয়েদের  যে কতটা ক্ষতি করে চলেছে তা আমরা বুঝি না বোঝার চেষ্টাও করি না

জীবনের দশ বারোটা বসন্ত পার হয়ে যাবার পর দেহ ও মনে অন্যরকম একটা পরিবর্তন আসে মন কি জানি চায় ফ্রক পড়া পাশের বাসার মেয়েটার চোখদুটো একটু বেশী কালো মনে হয়  ছেলেটার কাছে সদ্য গোফের রেখা গজানো , শার্টের বোতাম খোলা কোঁকড়া চুলের ছেলেটাকে মাঝে মধ্যেই আড়  চোখে দেখে ফ্রক পড়া মেয়েটাও বিপরীত লিঙ্গের প্রতি, নারী পুরুষের শরীরটার প্রতি অদম্য একটা কৌতূহল জেগে ওঠে কিছুদিন আগেও এই  কৌতূহল মেটানো কঠিন ছিল   থ্রিজি, ফোরজির  যুগে আজ সেটা  পানির মতো সোজা এখনকার ছেলেমেয়েরা দুধের দাঁত পড়ার আগেই সব কিছু জেনে ফেলছে এটা খুব বেশী খারাপ কিছু হত না ,যদি বাবা মা বা অভিজ্ঞ কারো  নিকট থেকে তারা  কৌতূহল গুলো মেটাতো কিন্তু দুঃখের বিষয় , সেক্স এডুকেশানের জন্য তারা ঢুঁ মারছে ইন্টারনেটের অন্ধকার গলিতে বা পর্ন/চটি গল্প গুলে খাওয়া কোন ইঁচড়ে পাকা বন্ধুর কাছে আর তখনোই জ্বলে উঠছে বিশাল এক  দাবানলের প্রথম অঙ্গারটা......  

জীবনের বেড়ে ওঠার এই সময়টাতে ছেলেমেয়েরা যা দেখে বা পড়ে সেটা তাদের মনোজগতে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে , বিষয়গুলো তারা সেরকম কোন চিন্তাভাবনা ছাড়াই   ধ্রুব সত্য বলে গ্রহন করে  নেয় এবং সেগুলো অনুসরন করার চেষ্টাও করে  (লিখার শুরুতে এ নিয়ে বহুত প্যাচাল পেড়েছি) পর্ন মুভি বা আইটেম  সং বা চটিগল্পে   নারী পুরুষের সম্পর্কটাকে খুবই বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে বিশেষ করে নারীকে তো একেবারে পন্য (আইটেম বললে ব্যাপারটা ভালো বোঝা যায়বানিয়ে ফেলা হয়েছে আমাদের ছেলেরা পর্ন/ আইটেম সং দেখে, চটিগল্প পড়ে শিখছে - মেয়েরা তোমার সঙ্গে বিছানায় যেতে উদগ্রীব তুমি  তার সঙ্গে  যেভাবে , যখন যা মন চাই করতে পারবে , সে কখনো না করবে না , কোন আপত্তি করবে না , তুমি যদি তাকে বেধড়ক মারধোর কর, এমনকি ধর্ষণও করো তাহলেও সে তোমাকে কিছুই বলবে না , বরং সে ব্যাপারটা উপভোগ করবে মেয়েরা শিখছে - তোমার সম্পদ এই শরীরটা এটা তোমার  হাতিয়ার   তুমি একে  প্রয়োজন মতো ব্যবহার করে পুরুষের ওপর ছড়ি ঘুরাবে সিড়িতে, গাড়ীতে, চিপায় চাপায়, রিকশায় একে ব্যবহার করবে , দরকার হলে লিটনের ফ্ল্যাটেও যাবে
        
আমাদের ছেলেমেয়েরা  ঐসব শিখে তো বসে নেই   পর্দায় দেখা জিনিসগুলো বাস্তবেও করার চেষ্টা করছে ১২-১৩ বছর বা আরো কম বয়সী ছেলেদেরকে আমরা মনে  করি নাদান , অবুঝ শিশু , কদিন আগেও ফীডার খেত কিন্তু এরা যে কি চীজ আমরা যদি  বুঝতাম ! আশেপাশের কোন মেয়েকেই এরা রেহাই দেয় নাহোক সে কোন নিকটাত্মীয় যেমন কাজিন , মামী, চাচী  বা পাড়াতো আপু , ক্লাসমেট , টিচার [ http://bit.ly/2c3OC2Y] , কাজের মেয়ে, পাশের বাসার আন্টি সবাইকে নিয়ে ফ্যান্টাসীতে ভোগে ,মাস্টারবেট করে , চটিগল্প পড়ে , বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা করে , সুযোগ খোঁজে বা প্ল্যান করে এটা সেটা এবং ঐইটাও করে ফেলার এরা কাউকে ছাড় দেয়না, কাউকে  না
আল্লাহ্র কসম! আমি একটুকুও বাড়িয়ে বলিনি এই  ছেলেমেয়েরা  যে অশ্লীলতার কতটা গভীরে নিমজ্জিত হয়ে গিয়েছে তা আমি আপনি কল্পনাও করতে পারবো না   কল্পনাও করতে পারবো না
চলবে ইনশা আল্লাহ্‌ ......
 


Monday, September 19, 2016

‘অনিবার্য যত ক্ষয়’ (দ্বিতীয় পর্ব)

                   
বিসমিল্লাহির রহমানীর রহীম



একেবারেই একাডেমিক ধাঁচের লিখা এটি । রসকষহীন । ধৈর্য ধরে পুরোটা পড়ার অনুরোধ রইলো পাঠকদের নিকট ।
অনেকেই একটা  ভুল ধারণা নিয়ে থাকেন  আমি তো শুধু পর্ণমুভি দেখছি ,ওইগুলো করছি না । কারো কোন   ক্ষতি করছিনা । পর্ণ দেখা  দোষের তো কিছু না । এই ভুল ধারণাটা ভেঙ্গে দেবার জন্য এই লিখাটাই (সিরিজের প্রথম লিখাটা পড়ুন এখানে- http://lostmodesty.blogspot.com/2016/08/blog-post_30.html)  যথেষ্ট ইনশা আল্লাহ্‌ ।


প্রাপ্তবয়স্ক ও বাচ্চাদের ওপর পর্নোগ্রাফির প্রভাব-ডঃ ভিক্টর বি. ক্লাইন

একজন ক্লিনিকাল সাইকোলজিস্ট হিসেবে আমি দীর্ঘকাল ধরে ট্রিটমেন্ট করে আসছি সেক্স অফেন্ডার, সেক্স অ্যাডিক্ট ও যৌন রোগধারী ব্যাক্তিদের যাদের সংখ্যা প্রায় ৩০০ এর মত।তাদের সমস্যাগুলোর মধ্যে রয়েছে অপ্রত্যাশিত ও অদম্য যৌন আচরণ, child molestation, exhibitionism, voyeurism, sadomasochism, fetishism and rape.


নিঃসন্দেহে বলার আর অপেক্ষা রাখে না যে এদের একমাত্র প্রেরণাদায়ক শক্তি পর্ণ,দু চারটে ব্যাতিক্রম বাদে।এদের প্রাইমারি স্টেজে একটা সিন্ড্রোম কাজ করে যাকে আমি বলি ফোর ফ্যাক্টর সিনড্রোম।মানে প্রথমে আসক্তি, তারপর তীব্রতা বৃদ্ধি, এরপর ঘটে সংবেদনশীলতার অভাব আর শেষটায় এসে বর্বর আচরণ।

     
এক্ষেত্রে পুরোটাই আস্তে আস্তে ঘটে।প্রথমে ব্যাক্তি পর্ণের লোভ সামলাতে না পেরে তার যে ক্যাটাগরি পছন্দ সেই ক্যাটাগরির পর্ণে নিমজ্জিত হয়।পর্যায়ক্রমে তার পরিমাণ বাড়তে থাকেএই  ভয়ংকর চোরাবালি একসময় তাকে নেশাগ্রস্ত করে।অবশেষে বিবেবকে শূন্যে ভাসিয়ে ও ফলাফলের কথা না ভেবে জীবনের অন্যতম ভুল করে বসে যার জন্য পরবর্তীতে মানসিকভাবে পস্তাতে হয়কাউকে কাউকে পর্ণ মুহূর্তের মধ্যে গরম করে আবার মুহূর্তের মধ্যেই স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে আসে।কিন্তু কারো কারো ভিতর ক্যান্সারের মত এঁটে যায় সারাজীবন।মানসিক থেরাপির শরণাপন্ন হতে হয় তখন।

 
যৌন অপরাধের সাথে পর্নোগ্রাফির ঘনিষ্ঠতা –ররি রিড

পর্ণের প্রতি অতিরিক্ত মাদকতা মানুষের বৈধ যৌন আচরণে বিকৃত পরিবর্তন আনে ঠিক যেভাবে মানুষের জীবনকে তিলে তিলে ক্ষয় করে অ্যালকোহলঅনেকে হয়তো স্বাভাবিক যৌন আচরণের ওপর পর্ণের প্রভাবটা মেনে নিবে না।তাদেরকে যদি একবার আমার চেয়ারে বসিয়ে শোনাতে পারতাম পর্ণাসক্তদের সঙ্গীদের তিক্ত ও তীব্র অভিজ্ঞতার কথা যা আমাকে হরহামেশাই শুনতে হয়, তাহলে বোধয় তাদের ধারণা পাল্টে যেত।এদের বাধ্য করা হয় অসুস্থ যৌন আচরণে লিপ্ত হতে।মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার এরাকিন্তু এসব ঘটনা কেবল চার দেয়ালের মাঝেই আটকা থাকে।বিচারের জন্য কোর্টরুম পর্যন্ত আর পৌঁছায় নাযারা এই ধরণের অস্বাভাবিক ও জোরপূর্বক যৌন আচরণে তাদের সঙ্গীদের নিমজ্জিত করে তারা এটাকে খুব স্বাভাবিক বলে ধরে নেয়।অনেক সময় অচেনা কারো দ্বারা ধর্ষিত হওয়ার চেয়েও মারাত্মক হতে পারে এসব অভিজ্ঞতা।

ভিক্টিম ধর্ষণের কারণ হিসেবে নিজেকে দোষারোপ করে না কারণ এখানে নিশ্চিতভাবে তার কোন দোষ নেই।কিন্তু যেসব বৈবাহিক সম্পর্কে সেক্সুয়াল ইন্টিমেসির নামে একপাক্ষিক বিনোদন আর লাম্পট্য চলে সেসব ক্ষেত্রে অনেক সময় অভিযোগকারী নিজেকে দায়ী করতে থাকে।মনে করে যে তাদের সঙ্গীর এই বাড়াবাড়িই বোধয় ঠিক।হয়তো এমনই হওয়া উচিৎ স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্ক।সেক্স সম্বন্ধে নিজেদের ধারণাকে তখন রক্ষণশীল বা সেকেলে ধাঁচের ভাবতে শুরু করে।যখন সঙ্গীর ওপর অন্ধভাবে ভরসা করা শুরু করে তখন তারা ভাবে যে আমি হয়তো ওর চোখে যথেষ্ট সেক্সি হতে পারছি না,তাই ও পর্ণ দেখে।কাজেই এইটা আমার দোষএকবার তো এক মহিলা আমাকে বলেই ফেলেছিলো যে অচেনা কারো হাতে একবার  নির্যাতিত হওয়া আর ১০ বছর ধরে পর্ণাসক্ত স্বামীর বেহাল্লাপনায় জড়িত থাকার মধ্যে বেছে নিতে বললে আমি প্রথমটাকেই বেছে নিবো।এইবার বুঝুন তাহলে ক্ষতিটা কোন পর্যায়ে নেমে এসেছে!


পর্নোগ্রাফির সাথে ধর্ষণের যোগসূত্র-ডঃ জুডিথ রিসম্যান  

 F.B.I এর সিরিয়াল রেইপ প্রোফাইলার জন ডুগলাস তার বই "Journey Into Darkness" (1997) এ লিখেছেন, সিরিয়াল রেইপ কিলারদের আস্তানা তল্লাশি করে পাওয়া যায় পর্ণের ভাণ্ডার হয় স্টোর করা না হয় হোমমেইড।"The Evil That Men Do" (1998) বইতে রয় হেজেলউড বলেছেন,একবার এক সেক্স কিলারের সন্ধান পাই যে কিনা মেয়েদের বিভিন্ন পজিশনে বেঁধে রাখত ও টর্চার করত যা সে কোন এক পর্ণ ম্যাগাজিনে দেখেছিলোআরেক রিপোর্টে এসেছে যে কিলারদের মধ্যে ৮১% তাদের অপরাধের জন্য প্রাথমিক মদতদাতা হিসেবে চিহ্নিত করেছে পর্ণকে।পর্ণের ভোক্তা বাড়ার সাথে সাথে দিন দিন এসব অপরাধের সংখ্যাও বাড়ছে।সরকারের কোন সোচ্চার পদক্ষেপ নেই এ খাতে।অর্ধ শতক ধরে তামাকের ব্যবসা একসময় আমেরিকা মাত করেছিল আর আজ সে জায়গা নিয়েছে পর্ণ।


# ৬০% পুরুষ এ মত পোষণ করেছেন যে, যদি ধরা পড়ার সম্ভাবনা না থাকতো তাহলে তারা হয়তো কোন নারীকে দিয়ে জোরপূর্বক কিছু করাতেন যা তার পছন্দ হতো না বা পারলে ধর্ষণই করতেন।

-
Briere, J. &Malamuth, N. (1983). Self-reported likelihood of sexually aggressive behavior: Attitudinal versus sexual explanations. Journal of Research in Personality, 17,315-323.

# অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে বেশ ঢিলেঢালাভাবে পর্নোগ্রাফি সংশ্লিষ্ট আইন মোতায়েন করা হয়।ফলস্বরূপ, ধর্ষণের হার বাড়ে ২৮৪%।কিন্তু একই সময়ে অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডে এ ব্যাপারে কঠোর আইন প্রয়োগ করে দেখা যায়, ধর্ষণের হার বেড়েছে মাত্র ২৩%।

আবার, হাওয়াইতে প্রথমে দুর্বল আইন প্রয়োগ করা হয়, এরপর তা মজবুত করা হয় এবং তারপর আবার পূর্বের অবস্থায় ফেরত নেয়া হয়।ধর্ষণের ফলাফলও আসে অনুরূপ।প্রথমে বাড়ে, এরপর কমে তারপর আবার মাত্রা ছাড়িয়ে যায়।
   -
Court, J. (1984). Sex and violence a ripple effect. In Malamuth, N &Donnerstein, E (Eds), Pornography and sexual aggression. San Diego, Academic Press.

# একদল পুরুষকে একটা ভিডিও দেখানো হল যেটাতে একজন নারী সেক্সুয়াল ভায়োলেন্সের মাধ্যমে উত্তেজিত ও কামুকী হয়ে ওঠে।আরেক দলকেও একই ধাঁচের কিছু একটা দেখানো হয় তবে তাতে সেক্সুয়াল ভায়োলেন্স থাকে না।এইবার দুই দলকেই দেখানো হল পর্ণ যাতে রয়েছে ধর্ষণ।এরপর প্রথম দলের অধিকাংশ জানালো, তাদের চোখে পর্ণের মহিলাটির যেন ভোগান্তি কম আর তৃপ্তিই বেশি।কাজেই মহিলারা ধর্ষণ উপভোগ করে আর এমনই তাদের মতামত।
   -
Check, J. &Malamuth, N. (1985). An empirical assessment of some feminist hypotheses about rape. International Journal of Women’s Studies, 8, 414-423.



# এইবার মহিলাদের ব্যাপারটা দেখা যাক।অনেকে যারা বাচ্চাকাল থেকেই পর্ণের দুনিয়ায় ঢুকেছে, তাদের কাছে ধর্ষণের ভয়াবহতা হালকা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে এবং তারা যেসব সেক্সুয়াল ফ্যান্টাসিতে নিমজ্জিত হয় সেগুলোর মাঝে ধর্ষণও থাকে।

-
Corne, S., Briere, J. &Esses, L. (1992). Women’s attitudes and fantasies about rape as a function of early exposure to pornography. Journal of Interpersonal Violence, Vol 7 No 4, pp 454-461.


#অনিবার্য_যত_ক্ষয়
চলবে ইনশা আল্লাহ্‌ ......
(লস্ট মডেস্টি অনুবাদ টীম কর্তৃক অনূদিত)  


প্রথম পর্ব পড়ুন এখানে –
পড়তে পারেন –
রেফারেন্স-

Saturday, September 10, 2016

একেই বলে সভ্যতা!!! (দ্বিতীয় পর্ব)

বিসমিল্লাহির রহমানীর রহীম ।



অসহায়, বিপর্যস্ত, দুর্দশাগ্রস্থ মানুষের উপর জাতিসংঘের "শান্তিরক্ষীদের" চরম বিকৃত যৌন নির্যাতনের খবর আসছেই। ২০১৩ সাল থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে (CAR) একশোরও বেশি নারী, কিশোর-কিশোরী ও শিশু “শান্তিরক্ষীদের” দ্বারা নির্যাতিত হবার কথা ডকুমেন্টেড হয়েছে। গত ২৬ মার্চ জাতিসংঘেরই একজন মানবাধিকার বিষয়ক কর্মকর্তার সফরের সময় ভয়ঙ্কর একটি ঘটনার কথা উঠে এসেছে, যা একজন সুস্থ মানুষের জন্য পড়াটাও কষ্টকর। ফ্রেঞ্চ “শান্তিরক্ষী”-দের দ্বারা সংঘটিত এ ঘটনাটির বর্ণনা সম্প্রতি প্রকাশ করা হয়েছে আমি তার অনুবাদ তুলে ধরছি। পাঠকের কাছে মাফ চেয়ে নিচ্ছি, কোন সুস্থ মানুষের একরকম অসুস্থতার মুখোমুখি হওয়া উচিত না, বাস্তবে তো না-ই, অনলাইনেও না। কিন্তু মানবতা আর শান্তির পতাকাধারীরা গালভরা বুলির আড়ালে, শান্তির ধোঁয়া তুলে আসলে কি করছে তা তুলে ধরা দরকার মনে করছি। এই হল এদের সভ্যতা আর মানবতার রূপ, এই হল শান্তিরক্ষী বাহিনীর আনা শান্তির নমুনা-
তিনজন মেয়ে জানিয়েছেন, চতুর্থ আরেকজন ভিকটিম সহ তাদের চারজনকে সাঙ্গারিস বাহিনীর ক্যাম্পে বন্দী করা হয়। সাঙ্গারিস বাহিনীর মিলিটারি কম্যান্ডার তাদেরকে ক্যাম্পের ভেতর বেঁধে ফেলেন এবং বিবস্ত্র করেন। তারপর তাদেরকে বাধ্য করেন একটি কুকুরের সাথে সঙ্গম করতে। ঘটনার পর প্রতিজনকে ৫০০০ ফ্র্যাঙ্ক [স্থানীয় মুদ্রা - প্রায় ৭০০ টাকা] দেওয়া হয়। ভিকটিমদের একজন ঘটনার কিছুদিন পর অজানা রোগে মৃত্যুবরণ করেন। আরেকজন ভিকটিম জানান এই ঘটনার পর থেকে তাকে “সাঙ্গারিস কুত্তি” বলে ডাকা হয়। সাঙ্গারিস হলো মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে অবস্থিত ফ্রেঞ্চ সামরিক বাহিনীর নাম।”

সূত্রঃ
 http://tinyurl.com/zfoeug8


যদি কেউ মনে করেন জাতিসংঘ শান্তিবাহিনীর দ্বারা নির্যাতনে এবং পাশবিকতার এটাই প্রথম ঘটনা, তবে ভুল করবেন। বিপর্যস্ত, অসহায় মানুষ, যাদের “সাহায্য” করার অজুহাতে জাতিসংঘ বিভিন্ন অঞ্চলে তাদের সাম্রাজ্যবাদী-ক্রুসেইডার সেনাবাহিনি প্রেরণ করে, তাদেরকে নির্যাতন করা জাতিসংঘের জন্য নতুন কিছু না। প্রায় দুই দশক ধরে তারা এরকম করে আসছে, এবং অপরাধীদের দায়মুক্তির ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। কিন্তু বার বার, ধারাবাহিক ও নিয়মিতভাবে এ ঘটনাগুলো ঘটার পরেও জাতিসংঘ তেমন কোন ব্যবস্থাই গ্রহণ করে নি বরং পাশবিকতার মাত্রা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। “রক্ষকই যখন ভক্ষক” - এ কথাটা “শান্তি ও মানবতার” ধারক-বাহক জাতিসংঘের সাথে যেভাবে খাপে খাপে মিলে যায়, বর্তমান বিশ্বে আর কারো সাথে মনে হয় না অতোটা মেলে। নিচে গত বিষ বছরে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের নারী-শিশুদের উপর চালানো যৌন নির্যাতনের সংক্ষিপ্ত টাইম লাইন দেওয়া হলঃ


অগাস্ট ১৯৯৬ – মো্যাম্বিকের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী এবং জাতিসংঘর মহাসচিবের কার্যালয়ের অধীনস্ত বিষেশজ্ঞ গ্রাসা মিশেল জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে একটি রিপোর্ট উপস্থাপন করেন। “শান্তিরক্ষী” বাহিনীর দ্বারা ছেলে ও মেয়ে শিশুদের উপর চালানো যৌন নির্যাতনের বিষয়টি প্রথমবারের মতো এই রিপোর্টে উঠে আসে।


১৯৯৯ – বসনিয়াতে জাতিসংঘের “আন্তর্জাতিক পুলিশ বাহিনীর” কার্যক্রম পর্যবেক্ষনের দায়িত্ব থাকা ক্যাথেরিন বলকোভ্যাচ, বসনিয়াতে এই বাহিনী আসলে কি করছিল তা প্রকাশ করে দেন। জাতিসংঘের পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা নিয়মিত পতিতা গমনে অভ্যস্ত ছিল। তার চেয়েও ভয়ঙ্কর তথ্য হল, যুদ্ধ বিধ্বস্ত বসনিয়ার মেয়ে ও কিশোরীদের পূর্ব ইউরোপে যৌনদাসী হিসেবে বিক্রি ও পাচারের সাথে সরাসরি যুক্ত ছিল জাতিসঙ্ঘের পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে তাদের কারো কোন শাস্তি হয় নি। ক্যাথেরিনকে বরখাস্ত করা হয়।


ফেব্রুয়ারী ২০০২ – খোদ জাতিসংঘের অঙ্গসংস্থা UNHCR এবং Save The Children এর উপদেষ্টাদের তৈরি একটি রিপোর্টের মাধ্যমেই গিনি, লাইবেরিয়া, সিয়েরা লিওন এবং সার্বিকভাবে পশ্চিম আফ্রিকায় জাতিসংঘের “শান্তিরক্ষীদের” দ্বারা উদ্বাস্তু নারী ও শিশুদের যৌন নির্যাতনের ভয়াবহ চিত্র ফুটে ওঠে। রিপোর্ট থেকে জানা যায় UNHCR এর অধীনে থাকা ক্যাম্প গুলোতেই সর্বাধিক যৌন নির্যাতন ও জোরপূর্বক পতিতাবৃত্তির ঘটনা ঘটে।


অক্টোবর ২০০২ – পশ্চিম আফ্রিকাতে উদ্বাস্তু নারী ও শিশুদের উপর জাতিসংঘের “মানবাধিকার” কর্মী, “ত্রানকর্মী” এবং “শান্তিরক্ষীদের” দ্বারা সংঘটিত যৌন নির্যাতনের ব্যাপারে জাতিসংঘের অভ্যন্তরীণ তত্ত্বাবধান পরিষদ (OIOS) একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে।


অক্টোবর ২০০৩ - এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে জাতিসংঘ বাধ্য হয় নারী- ও শিশুদের যৌন নির্যাতন করা থেকে বিরত থাকার জন্য বিশেষ ভাবে তাদের “শান্তিরক্ষীদের” আহবান জানাতে।


ফেব্রুয়ারী ২০০৪ – কঙ্গোতে উদ্বাস্তু নারী ও শিশুদের উপর চালানো “শান্তিরক্ষীদের” পাশবিকতার অফিশিয়াল তদন্ত শুরু। সমস্ত কঙ্গো জুড়েই, এবং উত্তর-পশ্চিম কঙ্গোর বুনিয়া শহরে বিশেষভাবে, জাতিসংঘের ক্যাম্পের ভেতরে নারী ও শিশুদের ধর্ষন ও জোর পূর্বক পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করা হয়। সামরিক এবং সিভিলিয়ান, জাতিসংঘের উভয় ধরনের কর্মী এবং অফিসাররা এ অপরাধের সাথে যুক্ত ছিল।


মার্চ ২০০৫ - জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের যৌন নির্যাতন সম্পর্কে প্রথম বিশ্লেষনর্মী রিপোর্ট “যাইদ রিপোর্ট” – এর প্রকাশ। জাতিসংঘের বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে অসহায়দের উপর যৌন নির্যাতনের এই ধারার ব্যাপক প্রচলন এবং জাতিসংঘের ভেতরে একে “সাধারণ ঘটনা” হিসেবে মেনে নেওয়ার মনোভাবের কথা উঠে আসে।


২০০৬ – বিবিসির অনুসন্ধানী রিপোর্টে উঠে আসে কিভাবে হাইতি এবং লাইবেরিয়াতে “শান্তিরক্ষীরা” শিশুদের নিয়মিত ধর্ষন ও জোরপূর্বক পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করে। ছোট মেয়েরা বিবিসির সাংবাদিকদের জানায় কিভাবে খাবার ও টাকার জন্য শান্তিরক্ষীরা নিয়মিত তাদেরকে যৌনকর্মে বাঁধ্য করতো।


জানুয়ারী ২০০৭ – ২০০৫ সালে দক্ষিণ সুদানে শান্তিরক্ষীদের দ্বারা শিশু ও কিশোরীদের সিস্টেমেটিক ধর্ষন ও যৌন নির্যাতনের খবর প্রায় দুই বছর পর মিডিয়াতে প্রকাশ পায়। ১২ বছরের মেয়েরাও শান্তিরক্ষীদের লালসার শিকার হয়।


২০০৮ – জাতিসংঘের ত্রানকর্মী ও শান্তিরক্ষীদের বিরুদ্ধে আইভরি কোস্ট, দক্ষিণ সুদান এবং হাইতিতে শিশুদের যৌন নির্যাতনের অভিযোগ। জাতিন্সঘের শান্তি ও মানবাধিকারের ধারক-বাহকদের দ্বারা ধর্ষিত হয় ৬ বছরে শিশুও। শুধুমাত্র Save The Children অভিযোগ প্রমাণিত হবার প্রেক্ষিতে তিনজন কর্মীকে বরখাস্ত করে দায় সারে।


সেপ্টেম্বর ২০১৩ – দক্ষিণ মালীতে শান্তিরক্ষীদের দ্বারা গণধর্ষন। কোন বিচার নেই।


নভেম্বর ২০১৩ – একদল স্বাধীন বিশেষজ্ঞ দলের অধীনে করা রিপোর্ট জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে জমা দেওয়া হয়। নিজেদের সদস্যদের দ্বারা দক্ষিণ সুদান ও লাইবেরিয়াতে ব্যাপকভাবে সঙ্ঘটিত ধর্ষন ও নারী ও শিশুদের পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করার ঘটনার বিচারের ক্ষেত্রে জাতিসংঘের উদাসীনতা নিয়ে এই রিপোর্টে কড়া ভাষায় সমালোচনা করা হয়। ২০১৫ পর্যন্ত এ রিপোর্ট ধামাচাঁপা দিয়ে রাখা হয়। ২০১৫ সালে “এইডস মুক্ত পৃথিবী” (AIDS Free World) নামে একটি আন্তর্জাতিক অ্যাডভোকেসি গ্রুপ স্বউদ্যেগে মিডিয়ার কাছে গোপনে এই রিপোর্ট পৌছে দেওয়ার পর, রিপোর্টটি আলোর মুখ দেখে।


এপ্রিল ২০১৫ – জাতিসংঘের অভ্যন্তরীন একটি রিপোর্ট AIDS Free World গোপনে সংগ্রহ করার পর মীডিয়াতে প্রকাশ করে। রিপোর্টে থেকে জানা যায় মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রের রাজধানী বাঙ্গুই-এ “শান্তিরক্ষীরা” খাবার এবং টাকার জন্য ৮ থেকে ১৫ বছর বয়েসী দশ থেকে বারো জন ছেলেকে নিয়মিত ধর্ষন করে। ধর্ষন সংঘটিত হয় অভ্যন্তরীণ উদ্ভাস্তুদের জন্য তৈরি জাতিসংঘের নিজস্ব সেন্টারের ভেতরে।


মে ২০১৫ – জাতিসংঘের বিরুদ্ধে তাদের সদস্য কতৃক নারী-শিশু ধর্ষন ও নির্যাতনের তথ্য গোপন করা এবং অপরাধীদের বাঁচিয়ে দেওয়ার অভিযোগ।


জানুয়ারী ২০১৫ – মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে “শান্তিরক্ষীদের” দ্বারা মেয়েদের ধর্শনের আরও প্রমাণ।


মার্চ ২০১৬ – জাতিসংঘের একটি প্রকাশিত রিপোর্ট অনুয়ায়ী ২০১৫ সালে দশটি জাতিসংঘ মিশনে মোট ৬৯ টি ধর্ষনের অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে।

সূত্রঃ
 http://tinyurl.com/z3bwr8q


এই হল জাতিসংঘের মানবতা আর সভ্যতার নমুনা। এভাবেই তারা শান্তি প্রতিষ্ঠা করে আসছে। সবচেয়ে গরীব, সবচেয়ে অসহায়, সবচেয়ে দুর্দশাগ্রস্থ মানুষদের এভাবে তারা “সাহায্য” করছে। প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা খরচ করে চালু করা এনজিও আর অ্যাডভোকেসি গ্রুপগুলো, সুশীলদের মুখ দিয়ে এই জাতিসংঘের আদর্শই আমাদের শেখাতে চাচ্ছেন, আমাদের স্কুলের পাঠ্যবইয়ের মাধ্যমে এই জাতিসংঘের আদর্শ আমাদের শিশুদের মাথায় ঢুকিয়ে দিচ্ছেন। প্রথম আলো-ডেইলি স্টার-একাত্তরের মতো মিডিয়াগুলো জাতিসংঘের সিলেবাস অনুযায়ী আমাদের নারী অধিকার, শিশু অধিকার আর শান্তি-সভ্যতা সংজ্ঞা শেখাতে চাচ্ছে। আমাদের সামনে এসব ধর্ষক-নির্যাতক, পিশাচকে হিরো হিসেবে উপস্থাপন করছে, তাদের নৈতিকতাকে (!) উৎকৃষ্ট হিসেবে উপস্থাপন করছে আর আমাদের বোঝাচ্ছে ইসলাম কতো মধ্যযুগীয়, কতো বর্বর, কতো পাশবিক! আর তাই তো নাসির বাচ্চু-খুশি কবীররা এদেশে সমকামীতার লাইসেন্স চায়, ৭১ বিকৃতাচারের পক্ষে নাটক বানায়, শাহবাগীরা পহেলে বৈশাখে "সমকামী প্যারেড" করেন।


তাই পরের বার যখন শারীয়াহ নিয়ে এসব মিডিয়া কিংবা সুলতানা কামালদের “আসক”-এর মতো সংস্থাগুলোর কথা চোখে পরবে, যখন এরা তনু ধর্ষন নিয়ে তোলপাড় করবে কিন্তু কৃষ্ণকলির স্বামীর মুখের আঁচড়ের দাগ, গৃহ পরিচারিকার মৃত্যু, ময়না তদন্ত রিপোর্ট নিয়ে রহস্যজনক নীরবতা পালন করবে - তখন মাথায় রাখবেন ঠিক কোন মানবতার সংজ্ঞা, কোন ধরণের স্বাধীনতা, কোন ধরনের সভ্যতা, কোন ধরনের শান্তি, কোন ধরনের ইনসাফের নমুনা তাদের ফিরিঙ্গি আন্তর্জাতিক প্রভুরা উপস্থাপন করেছেন, আর তারা অনুসরণ করছে। হয়তোবা অসহায় মানুষকে কুকুরের সাথে সঙ্গমে বাধ্য করাটাই তাদের কাছে সভ্যতা ও স্বাধীনতা, হয়তো বা পশুকাম, শিশুকাম, ধর্ষন আর পতিবৃত্তির অধিকারই তাদের কাছে মানবাধিকার, হয়তো তাদের এই বিশ্বব্যবস্থায় এটাই নৈতিকতা, এটাই এ বিশ্বব্যবস্থার ধর্ম - কিন্তু নিশ্চয় সৃষ্টিকর্তার নাযিলকৃত শারীয়াহর মাপকাঁঠিতে এরা জঘন্য অপরাধী। আর নিঃসন্দেহে এই জঘন্য অপরাধ ততোদিন বন্ধ হবে না, যতোদিন আল্লাহর আইন দুনিয়াতে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে,। ততোদিন এসব অপরাধীর বিচার হবে না, যতোদিন আল্লাহ্‌র শারীয়াহর অধীনে এসব জন্তুর বিচার করা হচ্ছে।


আর যখন তাদেরকে বলা হয় যে, দুনিয়ার বুকে ফাসাদ সৃষ্টি করো না, তখন তারা বলে, আমরা তো শান্তির পথ অবলম্বন করেছি।“ [আল-বাক্বারাহ, ১১]

Collected From
Brother
Asif Adnan

পড়ুন প্রথম পর্ব - http://lostmodesty.blogspot.com/2016/08/blog-post_34.html