Friday, July 29, 2016

“চোরাবালি” (দ্বিতীয় পর্ব)

বিসমিল্লাহির রহমানীর রহীম ।


তিন.
সেদিন সকালে ভীষণ চমকে গিয়েছিলাম ঘুম থেকে উঠে  আয়নার সামনে দাঁড়িয়েছি অনেকটা মনের খেয়ালেই অবাক হয়ে দেখি একটা ৬০ বছরের বুড়ো আমার দিকে তাকিয়ে আছে চেহারার এই হাল দেখে মন খুব  খারাপ হয়ে গেল৩১ চলছে আমার, যৌবনের মধ্যগগণে, কিন্তু আমার চেহারায় বার্ধক্যের ছাপ স্পষ্ট আমার বড় দুভাই আছে একজনের বয়স ৩৯ অন্যজনের ৪৫কিন্তু আজকাল অপরিচিত যে কেউ আমাকে তাদের আংকেল ভেবে বসে! অবশ্য আমার এ অবস্থার জন্য আমি কাউকে দোষারোপ করতে চাই না দোষী আমি নিজেই আমি নিজেই কি নিজেকে তিলে তিলে ধ্বংস করার মাতাল নেশায় নামিনি গত ১৭ বছর ধরে?
১৪ বছর বয়স থেকে হস্তমৈথুন করা শুরু করেছিলাম  এখন আমার বয়স ৩১ ১৭ বছর! নিজেকে ধ্বংস করার  ১৭ বছর! একদিন সব ছিল আমার; ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রী, মোটা বেতনের চাকরি, সুন্দরী স্ত্রী এখন আমি  নিঃস্ব! চোখে খুবই কম দেখি, টাইপিং এ প্রচুর ভুল হয়স্মৃতিশক্তি একেবারেই কমে গেছে, কিছুই মনে থাকে না; সম্পূর্ণ আনপ্রোডাক্টিভ গত বছর অফিস থেকে ছাঁটাই করে দিয়েছে  বউটাও ছেড়ে গেছে ভালো থাকুক সে, এই কামনা করি আমি আর কতটুকুই বা সুখী করতে পারতাম তাকে! আমি শেষ হয়ে গেছি বেঁচে থাকার ইচ্ছে মরে গেছে
হস্তমৈথুন আসক্তি  আপনার কী ক্ষতি করছে আপনি টেরও পাবেন না, কিন্তু যখন বুঝবেন আসক্তির লাগাম টেনে ধরা দরকার, তখন অনেক দেরী হয়ে যাবে কিছু করার থাকবে না পায়ে পড়ি আপনাদের, দয়া করে নিজেকে বাঁচান হস্তমৈথুন থেকে নিজেই নিজেকে শেষ করে ফেলবেন না


চার.
হস্তমৈথুন আমার চিন্তাশক্তি কমিয়ে দিয়েছে,সৃজনশীলতার বারোটা বাজিয়ে ছেড়েছে । আমার স্মৃতিশক্তি একেবারেই দুর্বল হয়ে গেছে । বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে ১০-১১ বছর বয়স থেকেই আমি পর্নমুভি দেখতাম ।অবশ্য হস্তমৈথুন  করা শুরু করি তার কিছুটা পরে; ১৩ বছর বয়স থেকে ।আর এখন আমার বয়স ১৭ ।
হস্তমৈথুনে আসক্ত হবার পূর্বে আমার স্মৃতিশক্তি ছিল খুবই ধারালো । স্রেফ দুই তিনবার রিডিং পড়েই বইয়ের পুরো একপৃষ্ঠা আয়ত্ত করে ফেলতে পারতাম, আর  এখন ৬-৭ লাইন মুখস্ত করতেই ঘাম ছুটে যায় । গণিত এবং বিজ্ঞানে আমার অসাধারণ দক্ষতা ছিল । একা একা পড়েই বুঝে ফেলতাম বিজ্ঞানের সব  প্যাঁচানো বিষয় গুলো , কঠিন কঠিন অঙ্কেরর সমাধান করে ফেলতাম অতি সহজেই । সেই দিনগুলো আমার কাছে এখন  স্বপ্নের মতো। ইলেভেন ক্লাসের গণিত আমার নাকের জল আর চোখের জল এক করে ছেড়েছে । কোথায় হারিয়ে গেল আমার সেই প্রতিভাগুলো ?

পাঁচ.
বন্ধুরা , আমার নাম ম্যাক্স । আমি জানি তোমরা কি পরিমাণ চিন্তিত তোমাদের নিজেদের শরীরটা নিয়ে যেটা তোমরা হস্তমৈথুন করে করে শেষ করে ফেলেছ। আমিও অবশ্য তোমাদের মতোই ক্ষতিগ্রস্থদের দলে । আমার বয়স ১৯ আর আমি গত দুই বছর ধরে হস্তমৈথুন  করছি । আমি ক্লাসের সেরা ছাত্রদের একজন ছিলাম কিন্তু বন্ধুদের খপ্পরে পড়ে হস্তমৈথুনে আসক্ত হবার পর,  পাশ মার্ক জুটাতেই হিমশিম খাচ্ছি । আমার ব্রেইনের কার্যক্ষমতা একেবারেই কমে গেছে ।  তোমরা ভুলেও হস্তমৈথুন  করবে না , এটা খুব ক্ষতিকর ।

ছয়.
আমি বাংলাদেশ থেকে বলছি । আট বছর হতে চললো আমি হস্তমৈথুনে  আসক্ত । অনেক চেষ্টা করেছি, নোংরা এই কাজ থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখার, কিন্তু পারিনি  মুসলিম হিসেবে  সবসময় মনে হয়েছে অন্যদেরকে ইসলামের দাওয়াত দেওয়া উচিত আমার। কিন্তু কখনো করা হয়ে ওঠেনি সেটা; নিজে তো জানি  আমি কতটা খারাপ  
আমি নিজের উপর ঠিকমতো ভরসা করতে পারি না,আত্মবিশ্বাস শুন্যের কোঠায় । আমি সবসময়  হীনমন্যতায় ভুগি । মানুষজনের সামনে সহজ হতে পারিনা ।
প্রথম প্রথম হস্তমৈথুনে  খুব মজা পেতাম । এখন আর পাই না । মাত্র ২০ সেকেন্ড...... তারপরেই সব শেষ ।
অনেকেই আমাকে বেশ পছন্দ করে । তাদের কাছে চমৎকার একজন মানুষ আমি   তারা শুধু আমার বাহিরের রূপটাই জানে;  সৎ,ভদ্র, বিশ্বস্ত ।  আমার অন্ধকার জগতটা সম্পর্কে যদি তারা জানতো !
আমি খুব শুকনা, দুর্বল আর ভুলোমনা । মাঝে মধ্যেই অসুখ-বিসুখে পড়ি । বন্ধুরা আমাকে এগুলো নিয়ে খুব করে ‘পচিয়ে’ দেয়।
সামনের দিনগুলো নিয়ে আমি  চিন্তিত  বিয়ে নিয়ে  সবসময় আমার মধ্যে একটা ভয় কাজ করে । যে আসবে সে কেমন হবে ! আমাকে কি পছন্দ করবে ! আমি কি তাকে সুখী করতে পারবো...... !

চলবে ইনশা আল্লাহ ......
[লস্ট মডেস্টি অনুবাদ টিম কর্তৃক অনূদিত]

পড়ুনঃ
পড়ুন- ব্রেক দ্যা সার্কেলঃ হস্তমৈথুন থেকে মুক্তি সিরিজ  
প্রথম কিস্তি  http://bit.ly/2i5hJEu  
দ্বিতীয় কিস্তি   http://bit.ly/2hg90mi
তৃতীয় কিস্তি - http://bit.ly/2huVR4I 

চোরাবালি সিরিজের বাকি পর্ব গুলো 
চোরাবালি প্রথম পর্ব - http://bit.ly/2dzgf4I
চোরাবালি তৃতীয় পর্ব  - http://bit.ly/2h4sMAb
চোরাবালি চতুর্থ পর্ব - http://bit.ly/2hePUes
চোরাবালি পঞ্চম পর্ব- https://goo.gl/pJtnxg  
চোরাবালি ষষ্ঠ পর্ব- https://goo.gl/jlHULY

রেফারেন্সঃ
http://bit.ly/2oop5ZH 











Friday, July 22, 2016

“চোরাবালি” (প্রথম পর্ব)

বিসমিল্লাহির রহমানীর রহীম ।





খুবই অবাক লাগে যখন দেখি একদল মানুষ মাস্টারবেশনের পক্ষে প্রচারণা চালায়; ধর্মে নিষেধ করেছে তো কি হয়েছে, বিজ্ঞান আমাদের বলছে এটা শরীরের জন্য উপকারী , এর কোন ক্ষতিকর দিক নেই, মাঝে মাঝে মাস্টারবেট করলে শরীর ভালো থাকে, টেনশান মুক্ত থাকা যায় ব্লা ব্লা ...... । পাশ্চাত্যের কিছু দেশে তো রীতিমতো স্কুলের বাচ্চাদের সেক্স এডুকেশানের নামে এই জঘন্য ব্যাপারটাতে উৎসাহী করে তোলা হয় । খুবই দুঃখ লাগে যখন দেখি আমাদের দেশেও মুসলিম নামধারী  আল্লাহর  কিছু অবুঝ বান্দা এর পক্ষে ফেসবুক , ব্লগে লিখালিখি করছে , ভিডিও বানাচ্ছে ।
বুকের ভেতর  খুব কষ্ট নিয়ে এই সিরিজটা শুরু করলাম আল্লাহর ইচ্ছায় । এই সিরিজে ইনশা আল্লাহ আমরা সবাইকে একটা ধারনা দেওয়ার চেষ্টা করব আপাতদৃষ্টিতে মাস্টারবেশন আসক্তি খুব নিরীহ মনে হলেও কি ভয়ঙ্কর বিষে বিষাক্ত এই আসক্তি । প্রথম  দুই টা পর্বে আমরা এমন কিছু হতভাগ্য ভাইদের কথা আপনাদের জানাবো মাস্টারবেশন আসক্তি যাদেরকে ধ্বংসের গভীর এক খাদের কিনারায় দাঁড় করিয়ে দিয়েছে । পরের কয়েকটি পর্বে আমরা আলোচনা করব  বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে মাস্টারবেশনের ভয়াবহতা । সবশেষে ইনশা আল্লাহ , ইসলাম এবং বিজ্ঞানের পয়েন্ট অফ ভিউ থেকে মাস্টারবেশনের ওপর একটা তুলনামূলক পর্যালোচনা করা হবে ।
আপনি আমন্ত্রিত ।   


এক.
আমার বয়স ২৩ বছর আর আমি থাকি হন্ডুরাসে । ১০ বছর ধরে আমি মাস্টারবেট করে আসছি । এতে  আমি পুরোপুরি আসক্ত ।
প্রত্যকেদিনই আমাকে মাস্টারবেট করতে হয় ।  দুইবার , একটানা চার দিন ছিলাম  মাস্টারবেট না করে ।
মাস্টারবেশন আসক্তি আমার স্বাস্থ্য,আমার প্রজনন অংগ আর সামাজিক জীবনের খুব ক্ষতিসাধন করেছে ।
 মাস্টারবেশন আসক্তি আমার যে ক্ষতিগুলো করেছেঃ

১) কোন গার্লফ্রেন্ড জুটাতে পারিনি । (https://www.youtube.com/watch?v=rXfDmL7iig4) 
২) সারাদিন দুর্বল দুর্বল লাগে । চোখে সবসময় ঘুম লেগে থাকে ।
৩) শরীরে একটু শক্তি সঞ্চয় হলে আবার মাস্টারবেট করতে ইচ্ছে করে ।   
৪) তেমন কোন প্রোডাক্টিভ কাজই করা হয়না । সৃষ্টিকর্তার দেওয়া চমৎকার এই জীবনটা নষ্ট করে ফেললাম । 
৫) শরীর তীব্র জ্বালাপোড়া করে ।
৬) আমাকে খুবই বয়স্ক দেখায় । একটানা চারদিন মাস্টারবেশন থেকে দূরে ছিলাম,দুইবার  সেই সময় আমার চেহারায় সতেজ একটা ভাব ছিল । আহা! সেই দিনগুলো কত ভালো ছিল !
৭) পিঠ ব্যাথা করে ।  
৮) মাস্টারবেশনের পরে  পুরো শরীর ব্যাথা করে , হাড়গুলো ঝনঝন করে ।
৯) সবসময় নিজেকে দোষী মনে হয় ।
১০) আমার প্রজনন অঙ্গ অস্বাভাবিক হয়ে গেছে ।


মাস্টারবেট না করার উপকারিতাঃ
(চার দিন মাস্টারবেট না করেই যে পরিবর্তন গুলো আমি লক্ষ্য করেছিলাম)

১) শরীরের দুর্বলতা, ক্লান্তি দূর হয়ে গিয়েছিল । দিল ‘খুশ’ ছিল ।
২) কাজ কর্মে ব্যাপক ফুর্তি ছিল ।মনযোগ বেড়ে গিয়েছিল ।যে কাজ ধরতাম সেটা শেষ করেই ছাড়তাম আর অনেক কাজ করতে পারতাম ।
৩) একটু বেশী  স্মার্ট হয়ে গিয়েছিলাম, মনেহয়  বন্ধুদের সঙ্গে বেশ ভালো রসিকতা করতাম, পার্ট নিতাম 
৪) সেক্সুয়ালি প্রোএক্টিভ ছিলাম ।
৫) সকালে ঘুম থেকে ওঠে ভাবতাম , এইবার এক্সারসাইজ করে শরীরটা ফিট বানিয়ে ফেলব ।


আমি এখন তীব্র সংকল্পবদ্ধ; মাস্টারবেট করা ছাড়বোই । শক্তিশালী একজন মানুষ হব , হব একজন ভালো স্বামী ,ভালো বাবা  
আমি চাই  পরিবারের সদস্য আর বাচ্চাদের সঙ্গে চমৎকার কিছু সময় কাটাতে। জ্যোৎস্না আর জোনাকি দেখে আমি মুগ্ধ হতে চাই , বসন্তের উদাসী বাতাস গায়ে মেখে নিতে চাই , চাই পাখির কাছে ,ফুলের কাছে যেয়ে তাদের কথা গুলো বুঝতে ; সৃষ্টিকর্তার উপহার দেওয়া এই জীবনটা চুটিয়ে উপভোগ করতে ।

দুই.
আমি ভারত থেকে বলছি । বয়স যখন ১৩ তখন প্রথম মাস্টারবেশনের সঙ্গে পরিচয় ঘটে । তারপর কোন বিরতি ছাড়াই একটানা আড়াই বছর ধরে মাস্টারবেট করেছি । শুরুর দিনগুলোতে দিনে একবার করে মাস্টারবেট করতাম কিন্তু পরের দিকে এই সংখ্যা বেড়ে যায়; ২-৩ বার এমনকি ৫ বারের বেশীও মাস্টারবেট করতাম প্রতিদিন ।গলায় এবং মুখে প্রচুর ব্রোন বের হবার কারণে  আমাকে  খুবই বিচ্ছিরি দেখাতো ।  

স্কুল বা কোচিং ছাড়া অন্য কোথায় যেতাম না । বাড়িতে বসে থাকতাম সবসময়। মানুষজনের সামনে যেতে খুবই অস্বস্তিবোধ করতাম । লজ্জা ,হতাশা ,দুশ্চিন্তা,পিঠব্যাথা,তীব্র মাইগ্রেনের ব্যাথায় আমার তখন ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা ।পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছিল , কিন্তু আমি বেশ মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলাম; পড়াশোনা চালিয়ে নিয়েছি ভালোমতো ।  একটানা আড়াই বছর ধরে মাস্টারবেট করার পর আমি এটা থেকে মুক্তি পেয়েছিলাম যদিও  সেই মুক্তির স্বাদ খুব বেশী দিন ধরে উপভোগ করতে পারিনি । ক্লাসে একটা মেয়ে ছিল , ও’কে আমি মনে মনে ভালবাসতাম [বিবাহ বহির্ভূত প্রেম হারাম -https://www.youtube.com/watch?v=rXfDmL7iig4 , https://www.ummaland.com/blog/1740/বিবাহ-বহির্ভূত-সম্পর্ক-প্রেম-ইসলামে-সম্প/ ]  ভালোবাসার জন্য আমি প্রতীজ্ঞা করলাম যে করেই হোক না কেন মাস্টারবেশন  ছাড়তে হবে । এত লজ্জা নিয়ে , পিম্পলে ভরা বিদিকিচ্ছিরি এই চেহারা নিয়ে ও’র  সামনে আমি দাঁড়াবো কীভাবে !

কঠোর সাধনার মাধ্যমে মাস্টারবেট করা ছাড়লাম । মুখের সব পিম্পল আর দাগগুলোও ভ্যানিশ হয়ে গেল । রেজাল্ট খুবই ভালো হতে লাগলো , বাড়িয়ে বলছি না স্কুলের সেরা  হ্যান্ডসাম   ছাত্রদের একজন হয়ে গেলাম । দুশ্চিন্তা, হতাশা সব রাতারাতি দূর হয়ে গেল। কিন্তু স্কুল শেষ করার পর আমাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে গেল ।দুজন আলাদা আলাদা কলেজে ভর্তি হলাম । চোখের সামনে থেকে মূর্তিমান ‘অনুপ্রেরণা’ চলে যাওয়াতে আবার মাস্টারবেশনে আসক্ত হয়ে গেলাম; আগের চেয়ে আরো ভয়ংকর ভাবে ।

পুরোনো সব সমস্যারা ফিরে এলো  দলবেঁধে। মুখের পিম্পল, দুশ্চিন্তা , হতাশা , মাথাব্যাথা । একটানা দুই-তিন দিন ধরে প্রচন্ড মাথা ব্যাথা করত , মনে হত মাথার ভেতরে কেউ হাতুড়ি দিয়ে পেটাচ্ছে ।
ক্লাসটেস্টগুলোতে খুব বাজে রেজাল্ট করতে থাকলাম । বেধড়ক মার খেলাম এক  টিচারের হাতে একদিন । হতাশা আরো বাড়লো । ক্লাসটাস করা বাদ দিলাম , সারাদিন রুমের দরজা লাগিয়ে শুধু পর্ন দেখতাম । হতাশা কাটানোর জন্য মনোবিদদের কাছে গেলাম । কিন্তু লাভ হলোনা [আমি অবশ্য উনাকে কখনো বলিনি যে আমি মাস্টারবেশনে আসক্ত । এখবর , উনার মাধ্যমে বাবা মা বা আমার কোন আত্মীয় জানলে আমার পিণ্ডি চটকাতো না ?]

 প্রিপারেশানের অভাবে ফাইনাল পরীক্ষা দিতে পারলাম না । একটা বছর লস হয়ে গেল । এখন আবার সেই পরীক্ষার জন্য প্রিপারেশান নিচ্ছি । আমার পেছনে  লাখ  রুপি  খরচ করছে আমার পরিবার , কিন্তু আমি সব জলে ফেলে দিচ্ছি । দুর্বিষহ একটা জীবন পার করছি । হতাশা, আত্মবিশ্বাসের অভাব, সংকোচ, ক্যারিয়ার নিয়ে দুশ্চিন্তা , স্বাস্থ্য সমস্যা ...আরো অনেক কিছু যেগুলো আমি এখানে বললাম না । মাস্টারবেশনের ভয়ংকর এই ফাঁদ থেকে কবে মুক্তি পাব,  আদৌ পাব কিনা তা আমি জানি না । চূড়ান্ত একটা  যুদ্ধে নামবো আমি । মাস্টারবেশনের বিরুদ্ধে । আমার নিজের জন্য ,আমার বাবা-মা’র জন্য,পরিবার,যারা আমাকে ভালোবাসে , আমাকে বিশ্বাস করে তাদের জন্য । আমি কখনোই হেরে যেতে পারিনা , জিততে আমাকে হবেই......

[প্রেম মাস্টারবেশন ছাড়ার  মহা ঔষোধ মনে করার কোন দরকার নেই। প্রেম আপনাকে খুব অল্প সময়ের জন্য মাস্টারবেশন থেকে দূরে রাখতে পারবে, কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদী কোন সমাধান দিতে পারবে না ।  সে প্রেম যতই পবিত্র হোক না কেন। অনেক মানুষকে চিনি যারা প্রেমও করে আবার ধুমায়ে মাস্টারবেট করে, পর্ন দেখে । এই হারাম সম্পর্কটি হুডতোলা রিকশা, কেএফসি, আলো আধারির রেস্টুরেন্ট,স্টার সিনেপ্লেক্স পর্ব শেষে আপনাকে লিটনের ফ্ল্যাটে নিয়ে যেতে পারে।   আর সেটা নিশ্চয়ই মাস্টারেশনের চেয়ে জঘন্য একটা ব্যাপার ।]
চলবে ইনশা আল্লাহ ......

[লস্ট মডেস্টি অনুবাদ টিম কর্তৃক অনূদিত]
পড়ুনঃ
চোরাবালি সিরিজের বাকি পর্ব গুলো 
চোরাবালি দ্বিতীয় পর্ব - http://bit.ly/2diRZBJ
 চোরাবালি তৃতীয় পর্ব  - http://bit.ly/2h4sMAb
চোরাবালি চতুর্থ পর্ব - http://bit.ly/2hePUes
চোরাবালি পঞ্চম পর্ব- https://goo.gl/pJtnxg  

চোরাবালি ষষ্ঠ পর্ব- https://goo.gl/jlHULY 

পড়ুন- ব্রেক দ্যা সার্কেলঃমাস্টারবেশন থেকে মুক্তি সিরিজ  
প্রথম কিস্তি  http://bit.ly/2i5hJEu  
দ্বিতীয় কিস্তি   http://bit.ly/2hg90mi
তৃতীয় কিস্তি - http://bit.ly/2huVR4I 

রেফারেন্সঃ
১) https://goo.gl/kkmqYh
২)https://goo.gl/NU5KRo 



Friday, July 15, 2016

ব্রেক দ্যা সার্কেলঃ মাস্টারবেশন থেকে মুক্তি (শেষ কিস্তি)


বিসমিল্লাহির রহমানীর রহীম। 

হস্তমৈথুন ও Diet Meal Plans: -
 কিছু কিছু খাদ্য দ্বারা আমাদের Libido (desire for sexual activity ) নিয়ন্ত্রিত হয় । এই বিষয়ে Cynthia Sass (author of S.A.S.S Yourself Slim) বলেন -- "Studies show that certain foods or nutrients do play a role in boosting libido and supporting a healthy sex life." [1]

যেসব খাবার Libido বাড়ায় তাদের বলা হয় Aphrodisiac Foods বলে। Aphrodisiac Foods মানুষের Libido বাড়াতে সাহায্য করে, এই জন্য একে Foods of Love ও বলা হয় । অপরদিকে Anti-aphrodisiac বা Anaphrodisiac Foods মানুষের Libido কমাতে সাহায্য করে । তাই আপনার ফুড প্ল্যানে যদি Aphrodisiac Foods বেশি থাকে তাহলে আপনার Sexual Urge ঘন ঘন হতে পারে এবং পাওয়ারফুলও হতে পারে। তাই হস্তমৈথুন রোধে আপনাকে একটা ব্যালেন্সড ডায়েট মেনে চলতে হবে যেখানে Aphrodisiac Foods এর পরিমাণ অতিরিক্ত হবে না । Anti-aphrodisiac foods গুলো আমি খেতে বলব না কারণ এইগুলোর খারাপ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে।তাই এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভাল হয় যদিAphrodisiac Foods খাওয়া কমিয়ে দেয়া হয় ।
আমি কিছু Aphrodisiac Foods এর নাম বলছি ব্যাখ্যাসহ এবং Anti-aphrodisiac এর সম্পর্কেও কিছু তথ্য দিব ।



Aphrodisiac Foods :-
Fruits:-
Watermelon (তরমুজ ) :- তরমুজের একটা টুকরো sweet libido-booster হিসেবে কাজ করতে সক্ষম । Texas A&M Fruit and Vegetable improvement Center এর রিসার্চাররা ২০০৮ সালে এক আর্টিকেলে বলেন যে, তরমুজের কিছু উপাদান আছে যা মানুষের শরীরে Viagra- like effects দিতে সক্ষম।

তরমুজ একধরণের Phytonutrient উপাদান ধারণ করে যার নাম হল Citruline । এই Citruline কে আমাদের শরীর arginine নামক অ্যামিনো এসিডে কনভার্ট করে । আর এই arginine আমাদের শরীরে নাইট্রিক এসিডের লেভেল বাড়ায় যার ফলে আমাদের Blood vessel গুলো relaxed হয় ।আর Viagra মেডিসিনও এই একই পদ্ধতিতে কাজ করে থাকে। তাই যখন এই ফলের সিজন আসবে তখন অবিবাহিতদের জন্য এই ফলটা একটু কম খাওয়াই ভাল হবে।


Mango (আম ) :- Vitamin E এর ভাল প্রাকৃতিক উৎস হল আম । এই Vitamin E কে বলা হয় sex vitamin । এইজন্য আম হল একটা Aphrodisiac Fruit

Banana (কলা ) :- কলা হল B-group Vitamin ও পটাশিয়ামের দারুণ উৎস। এই দুটি পুষ্টি উপাদান সেক্স হরমোন প্রোডাকশনে ব্যবহৃত হয় । এছাড়া কলা 'Bromelain ' নামক এনজাইম প্রডুস করে , ধারণা করা হয় এই এনজাইম male libido বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

Apple (আপেল) :- আপেলে 'Quercetin' নামক একধরনের antioxidant থাকে ।'Quercetin' এর কারণেই একে Aphrodisiac Fruit বলে গণ্য করা হয়। এছাড়া বেরি , কাল-আংগুর , চেরিতেও 'Quercetin' থাকে ।

Animal-Based Protein:-

Egg (ডিম) :- ডিম হল হাই প্রোটিনযুক্ত খাদ্য। আর প্রোটিন Aphrodisiac effect বাড়ায় । এছাড়া ডিম হল L-arginine নামক অ্যামিনো এসিডের ভাল উৎস । আর এই L-arginine যৌন রোগ erectile dysfunction এর চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় । তাই বিবাহিত ভাইয়েরা বেশি বেশি ডিম খান আর অবিবাহিতরা ডিম খাওয়া কমিয়ে দিন ।

Meat (মাংস ) :- বিফ ও চিকেনে Carnitine L-arginine নামক অ্যামিনো এসিড থাকে আর থাকে জিংক । Carnitine L-arginine রক্তপ্রবাহ ইম্প্রুভ করে এবং সেক্সুয়ালFunction এর জন্যও এরা গুরুত্বপূর্ণ । জিংকও সেক্সুয়াল Function এর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে।

 Vegetables:-

Tomato (টমেটো :- Love Apple নামে পরিচিত টমেটোতে প্রচুর ভিটামিন-এ থাকে । আর এই ভিটামিন-এ টেস্টোস্টেরন উৎপাদনে Vital Role পালন করে।
Carrot (গাজর):- গাজরকে ভায়াগ্রার ভেজিটেবিল ভার্সন বলা যায়।কারণ গাজরে ভিটামিন-এ ও ভিটামিন-ই দুইটাই থাকে যা সেক্স হরমোনকে পজিটিভলি ইফেক্ট করে থাকে ।
 Chilies (মরিচ ) :- মরিচে থাকা Capsaicin হার্টবিট বাড়ায় এবং endorphin রিলিজ করতে সাহায্য করে যা কিনা Libido বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে ।

Others:- Honey (মধু) :- মধুতে প্রচুর ভিটামিন-বি থাকে যা টেস্টোস্টেরন উৎপাদনের জন্য প্রয়োজন হয়।

Garlic (রসুন ) :- রসুনে ' Allicin ' নামক পদার্থ থাকে । ' Allicin ' সেক্সুয়াল অর্গানগুলোতে রক্তপ্রবাহ বাড়ায় যা কিনা Libido বৃদ্ধিতে সহায়ক । এছাড়া আরো Aphrodisiac Foods আছে। আমি শুধু যেগুলো সহজলভ্য সেগুলোর নামই উল্লেখ করেছি ।

Anti-Aphrodisiac Foods :-
প্রাচীন যুগ থেকেই Anti-Aphrodisiac এর খোঁজ শুরু হয়ে ছিল । মধ্যযুগে যৌন চাহিদা কমানোর জন্য সাধুরা Chaste Tree এর Berry খেত ।যদিও এখন Anti-Aphrodisiac হিসেবে এটা ব্যবহৃত হয় না। বেশির ভাগ Anti-Aphrodisiac এর ব্যাড ইফেক্টস আছে কিছু ।কারণ কিছু Anti-Aphrodisiac টেস্টোস্টেরনের লেভেল একেবারে কমিয়ে দেয় ।আর টেস্টোস্টেরন পুরুষের দেহ গঠনে ও রিপ্রোডাক্টিভ সিস্টেমে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে।

Anti-Aphrodisiac Drug এর কাজ হল ভায়াগ্রার বিপরীত যাকে Anti-Viagra বলা হয় । আর এই ড্রাগগুলো সাধারণত জেলে থাকা বন্দীদের দেয়া হয় যাতে বন্দীদের যৌন উত্তেজনা প্রশমিত হয় ।এছাড়া যাদের Over-active Sexual Drive আছে তারাও ডাক্তারের পরামর্শে এই ধরনের ড্রাগ নিয়ে থাকেন।

আমি শুধু দুইটা পয়েন্ট দিব Anti-Aphrodisiac সম্পর্কে –


১)Rice :- ভাত খাওয়ার মাধ্যমে টেস্টোস্টেরনের লেভেল কমানো যায় ।[2] কারণ ভাতে ফ্যাট কম থাকে । আর এর সাইড ইফেক্টসও নেই ।

২) Green and Yellow Vegetables :- সবুজ এবং হলুদ শাক-সবজিও ভাল Anti-Aphrodisiac হিসেবে কাজ করে ।


ডায়েট যেভাবে করবেন :-
Aphrodisiac Food গুলোর বড় লিস্ট দেখে হয়তো অনেকে ভাবছেন যে, "আরে ভাই সব খাবারের নামই তো দিয়ে দিলেন ? তাহলে আমরা খাব টা কি ? " আসলে আমি Aphrodisiac Food খেতে নিষেধ করি নি। আমি বলতে চাচ্ছি যে আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় যেন Aphrodisiac Food গুলো কম থাকে। যেমন ধরুন--কেউ সকালে পুরো অর্ধেক একটা তরমুজ খেয়ে নাস্তা করল, দুপুরে চিকেন খেল , বিকালের নাস্তায় কলা ও আম খেল , আবার রাত্রে বিফ ও ডিম খেল! তাহলে এটা হয়ে যাবে Aphrodisiac Based Diet Plan ।তাই আপনাকে যেটা করতে হবে সেটা হল প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এই ধরনের খাবার কমিয়ে রাখা ,একেরবারেই ছেড়ে দিতে হবে এমন কোন কথা নেই। কারণ Aphrodisiac খাদ্যগুলোর মধ্যে কিছু আছে যা স্বাস্থ্যের জন্য খুব ভাল ।
আর সবচেয়ে ভাল হয় Plant Based Diet করলে । কারণ গবেষণায় দেখা যায় যে , Plant Based Diet মানুষের আত্মনিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা বাড়ায় । তাই শাক-সবজি বেশি খাবেন আর Animal-Based খাদ্য যেমন - বিফ ,চিকেন এগুলো কম খাবেন।

আর আপনি যদি হস্তমৈথুন থেকে একেবারেই মুক্তি পেয়ে যান তাহলে এই ডায়েট Plan স্ট্রিকলি ফলো করার দরকার নেই । যদি আপনি ১ম  ও ২য় কিস্তির  সমাধানগুলোও স্ট্রিকলি মেনে চলেন তাহলে এই ডায়েট Plan আপনার জন্য Optional হবে।

আল্লাহ্‌ আমাদের হস্তমৈথুনের ফিতনা থেকে হিফাজত করুন । আমীন ।
প্রথম দুই কিস্তি পড়ুন এখানে-
  দ্বিতীয় কিস্তি http://lostmodesty.blogspot.com/2016/07/blog-post.html

লেখক-  ফরহাদ হোসেইন মিঠু ।  উনি ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে অধ্যয়নরত। আল্লাহ ভাইকে উত্তম প্রতিদান দান করুক। 

রেফারেন্স:-
[2] "Foods That Fight Pain: " by Dr. Neal Barnard
[3] পুষ্টিবিজ্ঞানের তথ্যগুলো নেয়া হয়েছে বিভিন্ন আর্টিকেল থেকে।