Tuesday, June 28, 2016

“নেশা যখন চটিগল্প পড়া” (শেষ পর্ব)

বিসমিল্লাহির রহমানীর রহীম । 


আগের কয়েকটা পূর্বে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে চটিগল্পের নেশার  ভয়াবহতা সম্পর্কে ।
ইনশা আল্লাহ্‌ এই পর্বে আমরা আলোচনা করব কীভাবে দূর করবেন চটিগল্পের নেশা ।

প্রথমেই যে পরামর্শটা থাকবে সেটা হল নিচের লিখাগুলো খুব মনযোগ দিয়ে পড়ে ফেলুন ।  এগুলোতে পর্ন আসক্তি বা মাস্টারবেশন আসক্তি দূর করার উপায় নিয়ে আলোচনা করা হলেও চটিগল্পের নেশা দূর করার কাজে টেকনিকগুলো চোখবন্ধ করে প্রয়োগ করতে পারেন ।

 কোনরকম চিন্তা ভাবনা ছাড়াই  আপনার কাছে থাকা সমস্ত চটিগল্পের বই (হার্ডকপি বা সফটকপি) ধ্বংস করে ফেলুন । প্লে স্টোর থেকে পর্ন সাইট ব্লকিং এপস নামিয়ে ইন্সটল করুন ,   পিসি বা ল্যাপটপের জন্য k9 web protection  software  নামিয়ে ইন্সটল দিন  (দেখুন এই ভিডিওটি - http://tinyurl.com/gqf3gh6 ) । ফেসবুকের সব বাজে পেইজ গুলো আনলাইক করে দিন। মোদ্দা কথা হল  এমন ব্যবস্থা করুন যেন মন চাইলেই চটিগল্পের নাগাল না পাওয়া যায় । চটি গল্পের নাগাল পাওয়া কষ্টকর হয়ে গেলে দেখবেন  আপনার চটিগল্প পড়ার পরিমাণ দিন দিন কমে যাচ্ছে ।  
এমন সব বন্ধুদের গুডবাই জানিয়ে দিন যারা চটিগল্প বা পর্ন মুভিতে আসক্ত । এদের সঙ্গে  ওঠা বসা করলে চটিগল্পের নেশা ছাড়া টাফ হয়ে যাবে ।  বসে আড্ডা দিচ্ছেন এদের সঙ্গে । হুট করে কেউ চটিগল্প বা পর্ন মুভির গল্প শুরু করে দিল ,  অশ্লীল কোন কিছু নিয়ে আলোচনা শুরু করে দিল । তাদের আলোচনায় আপনি যোগদান না করলেও অশ্লীল কিছু টার্ম , কিছু শব্দ গেঁথে যাবে আপনার মাথায় । পরে আপনার মস্তিষ্ক যখন অলস থাকবে  , আপনি  একা  থাকবেন বা  ঘুমাতে যাবেন  তখন আপনার মাথায় ঐ শব্দ গুলো ঘুরতে থাকবে । ক্রমাগত আপনাকে  জালাতে থাকবে । চটিগল্প না  পড়া পর্যন্ত আপনি নিস্তার পাবেন না ।

 ‘পিচ্চিকালের বন্ধু , ওদের  ছাড়া থাকবো ক্যামনে’  এইসব বলে ন্যাকামো করবেন না । ওরা আপনার জীবনটাকে  ধ্বংস করে ছাড়বে । আপনাকে জাহান্নামে টেনে নিয়ে যাবে ।

 "হায় আমার দূর্ভাগ্য, আমি যদি অমুককে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করতাম। আমার কাছে উপদেশ আসার পর সে আমাকে তা থেকে বিভ্রান্ত করেছিল। শয়তান মানুষকে বিপদকালে ধোঁকা দেয়।" (আল ফুরকানঃ ২৮-২৯)

"বন্ধুবর্গ সেদিন একে অপরের শত্রু হবে, তবে খোদাভীরুরা নয়।" (আয যুখরুফঃ ৪৭)   

প্র্যাক্টিসিং মুসলিম ভাইদের (সমাজের ভাষায় ‘হুজুর’ ) সঙ্গে ওঠাবসা করুন । ইনশা আল্লাহ্‌  তাঁদের সাহচর্য আপনাকে  সহায়তা করবে নেশা কাটানোর । 

 নন মাহরামদের সঙ্গে পর্দা করুন । নন মাহরাম হচ্ছে এমন একজন যাকে বিয়ে করা জায়েজ  যেমন ছেলেদের জন্য নিজের বোন (চাচাতো, মামাতো ,খালাতো বোন না )  খালা, ফুফু, ভাগ্নী, ভাতিজি, শ্বাশুড়ী, দাদী ,নানী  (কেউ ছাড়া পরলো কি ?)  ছাড়া বাকী সবাই নন মাহরাম । মানে এরা ছাড়া অন্য  যেকোন মহিলাদের বিয়ে  করা  জায়েজ  ।

 ভাবী, চাচী, মামী, শালী, কাজিন  (মামাতো বোন, চাচাতো বোন, খালাতো বোন) এরা সবাই নন মাহরাম । এদের সঙ্গে আপনার বিয়ে জায়েজ । [১, ২,৩]

এইসব নন মাহরামদের নিয়ে লিখা চটি গল্পের বাজার সেই রকম গরম । আপনি চটিগল্পের নেশা ছাড়তে চাইলে  অবশ্যই এদের সঙ্গে পর্দা করতে হবে । তা না হলে ওদের সঙ্গে আপনার কথোপকথন , চলাফেরা, ওঠা বসা আপনাকে সবসময় চটি গল্পগুলোর কথা মনে করিয়ে দেবে । চটিগল্পের নেশার বিরুদ্ধে আপনি যে প্রতিরোধ বুহ্য গড়ে তুলেছেন তা  ভেঙ্গে তছনছ হয়ে যাবে।  আপনি বারবার ফিরে যাবেন চটিগল্পের কাছে ।

শয়তান সবসময় এই সম্পর্কগুলো দিয়ে ধোঁকা দেয় মানুষকে । ভুল হয়ে যাবার  (আল্লাহ্‌ না করুক) ভালো একটা সম্ভাবনা থাকে । তাছাড়া চটিগল্পের নেশার  কারণে আপনার মনে ওদের নিয়ে বাজে একটা চিন্তা সব সময় ঘোরাফেরা করে , আপনি বহু কষ্টে সেটি চাপা দিয়ে রাখেন । তাদের সঙ্গে মেলামেশা কথাবার্তায় সেই চিন্তা ফুলে ফেঁপে উঠবে ,বিস্ফোরণ ঘটতে কতক্ষন ।       

বলা যত সহজ পর্দা করাটা ততো সহজ না ।  সরবোচ্চ চেষ্টা করতে হবে পর্দা মেনে চলার ।  একান্তই সম্ভব না হলে চেষ্টা করুন ওদের সঙ্গে ইন্টারএকশান  একেবারেই  কমিয়ে  ফেলতে ।
কাজিন ,শালী, ভাবী, মেয়ে ক্লাসমেট গল্প করতে আসলে গোমড়া মুখে থাকুন, হুঁ , হ্যাঁ তেই কাজ সেরে ফেলুন । দেখবেন আস্তে আস্তে ওরা দূরে সরে যাবে । আমার জানা সবচেয় ভালো টেকনিক হচ্ছে – হুজুর হয়ে যাওয়া । দাঁড়ি ছেড়ে দিন , মাথায় টুপি পড়তে শুরু করুন , ননমাহরাম মহিলা দেখলেই চোখ নামিয়ে ফেলার চেষ্টা করুন , দেখবেন কাজিন বা শালীরা আপনার সঙ্গে আড্ডা মারতে আসছে না , ভাবী আপনাকে দেখলেই মাথায় কাপড় দিয়ে আড়ালে চলে যাচ্ছেন ।    

 প্রথম প্রথম আপনার  মনে হতে পারে কাজিন ,ভাবী বা অন্য ননমাহরাম মহিলাদের থেকে এরকম দূরে দূরে সরে থাকলে ওরা আপনাকে  অসামাজিক ভাববে, ভাববে আপনি আলগা ভাব মারেন। পরে একসময় বুঝবেন ব্যাপারটা ঠিক উলটো – এই দূরে দূরে সরে থাকার কারনেই ওরা আপনাকে প্রচুর সম্মান করবে, শ্রদ্ধা করবে  । ভালো ছেলের উদাহরণ দিতে গেলে আপনার নামটাই প্রথমে মনে পড়বে ওদের ।

অবসর সময়গুলো বিভিন্ন প্রোডাক্টিভ কাজে ব্যস্ত রাখুন নিজেকে । চটিগল্প পড়ার নেশা কুরআন পড়ার নেশায় পরিবর্তন করে ফেলুন  । টিপসটা  কঠিন হয়ে গেল কি  ?
যখনই চটিগল্প পড়তে ইচ্ছে করবে তখনই ওজু করে কুরআন খুলে ফেলুন ।  কুরআনের  ভালো কোন বাংলা বা ইংরেজি   অনুবাদ  [ আল কোরআন একাডেমী লন্ডন কর্তৃক প্রকাশিত কুরআনের বাংলা অনুবাদটা বেশ প্রাঞ্জল] পড়তে শুরু করে দিন , আরবী পড়ার দরকার নেই । গল্পের বই পড়ার মতো করে পড়ে যান । দেখবেন কুরআনে মজা পাচ্ছেন , যে মজার কোন তুলনা চলে না ।     
চাইলে ইসলামী সাহিত্যের সুন্দর সুন্দর বইগুলো পড়তে পারেন । রুমীর অসাধারণ কিছু কবিতা আছে [ http://idream4life.blogspot.com/search/label/rumi ] , নাসীম হিজাসীর উপন্যাসগুলোও [ http://priyoboi.blogspot.com/2013/06/blog-post.html  , http://www.somewhereinblog.net/blog/srana28/29958825 ] বেশ চমৎকার ।
সাহাবীদের, আগের জামানার সালাফদের  জীবনী পড়তে পারেন । এই  [https://www.facebook.com/91miracle/posts/10204755908799403?hc_location=ufi ] লেকচারগুলো শুনতে পারেন । এগুলো আপনার মনে আল্লাহ্‌র ভয় ঢুকিয়ে দিবে । চটিগল্পের নেশা ইনশা আল্লাহ্‌ দূর হয়ে যাবে ।

ফেসবুকের হোমপেইজ পরিষ্কার রাখা খুব জরুরী । সবগুলো  বাজে পেইজ  আনলাইক করে দিতে হবে । উটকো মডেল, সেলিব্রেটি, নায়িকা নামের পতিতাদের ফলো করা থেকে নিজেকে সামলাতে হবে । ওদের বিভিন্ন রং ঢং  এর ছবি  দেখে  বহু কষ্টে দমিয়ে রাখা   চটিগল্প পড়ার   নেশা  বা মাস্টারবেট করার ইচ্ছে মাথা চাড়া দিতে  পারে ।  ।

আসল  জিনিসটা কি জানেন ? আসল জিনিসটা হল মনের জোর , আল্লাহ্‌’র (সুবঃ) ওপর ভরসা করা আর তাঁর কাছে সাহায্য চাওয়া । কোন বান্দা যখন আল্লাহ্‌’র (সুবঃ) দিকে এক হাত এগিয়ে যায় আল্লাহ্‌ (সুবঃ) তার দিকে কয়েকহাত এগিয়ে যান । আপনি ভয়ংকর একটা পাপ থেকে নিজেকে বাঁচাতে চাচ্ছেন , শয়তানের তাবু থেকে ইসলামের সুশীতল ছায়ায় আশ্রয় নিতে চাচ্ছেন । তাহলে কেন আল্লাহ্‌ (সুবঃ) আপনাকে সাহায্য করবেন না ? আল্লাহ্‌র ওপর ভরসা রাখুন । নাছোড়বান্দার মতো চাইতে থাকুন । আল্লাহ্‌ (সুবঃ) আপনাকে এই পাপ থেকে বাঁচাবেনই ।

পাওলো কোয়েলহোর একটা কথা খুব ভালো লেগেছিল – “আপনি যদি কোন কিছু অন্তর থেকে চান , তাহলে পুরো মহাবিশ্ব আপনাকে সেটি পেতে সাহায্য করবে” ।     

মনের সঙ্গে বোঝাপড়া করুন । হৃদয়ের কথা শুনুন ।  অন্তর থেকে চাইলে একদিন না একদিন  চটিগল্পের নেশা দূর হবেই হবে ।
ইনশা আল্লাহ্‌ । 

(শেষ)  

পড়ুন সিরিজের প্রথম তিনটি পর্ব –
প্রথম পর্ব- https://goo.gl/afEUuO
দ্বিতীয় পর্ব - https://goo.gl/UST8Jz
তৃতীয় পর্ব- https://goo.gl/DwXTFZ

রেফারেন্স –

Tuesday, June 21, 2016

কেন বিয়ে মাস্টারবেশনের সম্পূর্ণ সমাধান না



 


এই পোস্টটিতে মূলত কেন কলুষমুক্ত হওয়ার জন্য বিয়ে সম্পূর্ণ সমাধান না, তা নিয়ে আলোচনা করা হবে। কিন্তু কলুষমুক্ত হতে এটি একটি বড় ও শক্তিশালী প্রভাবক হতে পারে। আমি সাধারণত পুরুষের দৃষ্টিকোণ থেকে লিখে থাকি, তাই বেশির ভাগ সময় “আপনার স্ত্রী-” টাইপের ভাষা ব্যবহার করি, তবে আপনি নারী হলে স্বচ্ছন্দে শব্দটি “স্বামী”-র দ্বারা পরিবর্তন করে নিয়ে লেখাটি পড়তে পারেন।
·         বিয়ে বিষয়টাকে কিভাবে চিন্তা করেন, তার উপর ভিত্তি করে দু’জনই কলুষমুক্ত থাকতে অনেক বড় ভুমিকা রাখতে পারেন। যেমনঃ আপনি কি বিয়েকে শুধুমাত্র যৌন সম্পর্কের মাধ্যম হিসাবে দেখেন?

·         আপনি যদি মাস্টারবেশন ও পর্নে আসক্ত হন, ৯৯% সম্ভাবনা বিয়ের পাঁচ বছর পরেও আপনি এসবে আসক্ত থাকবেন।

·         কেন? কারণ, বিয়ের যৌন তৃপ্তি আর পর্ন ও মাস্টারবেশনের যৌন তৃপ্তি আলাদা।

§  অন্তরঙ্গতার পুরো ব্যাপারটিই দু’জন মানুষের অত্যন্ত চমৎকার ভাবে কাছে আসা, যা আসলেই আল্লাহ সুবহানাহুতা’আলার পক্ষ থেকে একটি আশীর্বাদ। ভালবাসা এবং মমতার কারণে আপনার স্ত্রী বা স্বামীকে তৃপ্তি দেওয়ানিজের চেয়ে নিজের স্ত্রীর তৃপ্তির ব্যাপারে বেশি চিন্তা করা; ত্যাগ নিশ্চিত করা যেন পুরো সময়টুকু তাঁর জন্য আরামদায়ক হয়, যেন তিনি কষ্ট না পান বা তাঁর সাথে বিবেচনাহীন আচরণ না করা হয়, যেন তাঁকে সম্মান দেওয়া হয়

§  মাস্টারবেশন ও পর্নের পুরো ব্যাপারটিই অন্তরঙ্গতার বিপরীতে যায় কারণ এখানে মুখ্য বিষয় হলঃ নেওয়াস্বার্থপরতানিজে তুষ্ট না হওয়া পর্যন্ত নিজেকে আনন্দ দেওয়া, নতুন কিছুর খোঁজে চলে যাওয়া। এজন্যই পর্ন দেখা ও মাস্টারবেশনের পরে এত শূন্য বোধ হয়। কারণ বিষয়টা হওয়া উচিত ছিল এমন, আপনি একজনের সাথে অভিজ্ঞতাটা ভাগাভাগি করবেন, যে আপনাকে ভালবাসে এবং আপনিও তাকে ভালবাসেন।

§  একটি সুস্থ বৈবাহিক সম্পর্কের জন্য যে মানসিকতা প্রয়োজন, পর্ন ও মাস্টারবেশন তার সম্পূর্ণ বিপরীত জিনিস শেখায় পর্নোগ্রাফি এমন সব বিষয় দিয়ে ভর্তি যেখানে নারীকে পুরুষের দাসত্বকারী পতিতার স্তরে নামানো হয়। এতে আরো দেখানো হয়- ক্ষমতা ও কর্তৃত্বএখানে অন্তরঙ্গতাকে ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের সাথে মিলানো হয় যা কি না কখনোই হওয়া উচিত না। স্বামী ও স্ত্রীর মাঝে অন্তরঙ্গতা হওয়া উচিত পারস্পরিক, স্বার্থহীন এবং ভারসাম্যপূর্ণ। পর্নোগ্রাফিতে অন্তরঙ্গতাকে দেখানো হয় অসভ্য, পাশবিক, স্বার্থপর এবং শরীর-কেন্দ্রিক শয়তানোচিত কর্ম-কাণ্ড হিসাবে। এবং এখান থেকেই ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের ব্যাপারটা আসে।

¨       সুতরাং আপনি যখন নিজেই নিজেকে আনন্দ-দানে অভ্যস্ত, আপনি শুধু চাইবেন আপনার স্ত্রী আপনাকে আনন্দ দিক, আপনি তার তৃপ্তির ব্যাপারে চিন্তাও করবেন না। আপনার যৌন জীবন ধ্বংস হয়ে যাবে এবং আপনি পর্ন ও মাস্টারবেশনে ফিরে যাবেন যেখানে সবসময় নিজেকে নিজেই আনন্দ দিয়ে এসেছেন।

§  কারণ পর্নের পাশবিক ব্যাপারগুলো আপনার স্ত্রীর জন্য আরামদায়ক হবে না

§  কারণ আপনার স্ত্রী পর্নের মত যৌন তুষ্টিতে অফুরান না

§  কারণ আপনার স্ত্রীর থাকবে সত্যিকারের মানুষের দেহ। পর্নে দেখানো শরীর এবং বিষয়গুলো প্লাস্টিক সার্জারি এবং কেমিক্যাল এনহ্যান্সমেন্ট দ্বারা অতিরঞ্জিত। পর্নে দেখানো নারীর তুলনায় আপনার স্ত্রীকে সাদামাটা মনে হবে।

§  বাস্তবতা হল, আল্লাহ সুবহানাহুতা’আলা আমাদের শরীরগুলো তৈরী করেছেন, এবং যদি আপনার কাছে পর্নস্টারের কৃত্রিম দেহটি আল্লাহ সুবহানাহুতা’আলার দ্বারা সৃষ্ট (আপনার স্ত্রীর) আসল শরীরের চেয়ে বেশি আকর্ষণীয় মনে হয়, তাহলে আপনি সৌন্দর্যের বদলে নোংরামী বেছে নিয়ে নিজেই নিজেকে ধোঁকা দিচ্ছেনতার উপর, অনেক চমৎকার নারী আছেন যাদের কোন বাজে মানসিকতা নেই এবং কখনো কোন কসমেটিক সার্জারি বা কেমিক্যাল ট্রিটমেন্ট না নিয়েই শারীরিক ভাবে আপনার স্ত্রীর চেয়ে সুন্দরী। ঠিক যেমন  অনেক ভাল এবং অভিজাত অনেক পুরুষ আছেন যারা আপনার চেয়ে শারীরিকভাবে বেশি সুদর্শন।

যাই হোক, আল্লাহ সুবহানাহুতা’আলার বিবেচনাই সর্বোত্তম- এবং কত ন্যায়পরায়ণ তিনি, শরীরের বা চেহারার সৌন্দর্য দেখে বিচার না করে আমাদের হৃদয়ের সৌন্দর্য দিয়ে বিচার করবেন! তিনি আমাদেরকে আমাদের কর্ম ও হৃদয়ের পরিশুদ্ধতা দিয়ে বিচার করবেন। তাহলে আমাদের কী অধিকার আছে মানুষকে, বিশেষত আমাদের (সম্ভাব্য) স্ত্রীদের তাদের চেহারা দ্বারা বিচার করার, যখন আল্লাহ সুবহানাহুতা’আলাই আমাদের সবার অবয়ব তৈরী করেছেন। ধার্মিক জ্ঞানের দ্বারা বোঝা যায়, মানুষের চেহারা দেখে তাদের সম্পর্কে ধারণা নেওয়া উচিত না, কারন তারা নিজেরা তা বেছে নেয় নি, আল্লাহ সুবহানাহুতা’আলা বেছে দিয়েছেন।

§  আপনি ভুলে যাবেন যে একটা সম্পর্কে শুধু যৌনতা ছাড়াও অনেক কিছু আছে
§  যখন আপনার স্ত্রী গর্ভবতী বা বয়স্ক হবেন, আপনি তাকে অবজ্ঞা করবেন, তার সাথে প্রতারণা করবেন পর্নে দেখা (আপনার কাছে) আকর্ষণীয় জিনিসগুলো দ্বারা

§  কারণ যখন আপনি বয়স্ক হবেন এবং আপনার বাচ্চা-কাচ্চা থাকবে, জীবন অত্যন্ত ব্যস্ত থাকবে এবং স্ত্রীর সাথে অন্তরঙ্গতার সময় পাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে, এবং আপনি পর্নে ফিরে যাবেন কারণ বিয়ের আগে আপনি এটা বাদ দেননি।

v  পরিশেষে, মাস্টারবেশন ও পর্ন ত্যাগ করুন বিয়ের আগেই। ব্যাপারটা এমন না যে আপনি বিবাহিত হলে ছাড়তে পারবেন না, কিন্তু যদি অবিবাহিত হয়ে থাকেন এখনো, কাউকে বিয়ে করার আগে নিজেকে কলুষমুক্ত নিশ্চিত করুন। কলুষতায় আসক্ত সঙ্গীর বোঝা কোন স্ত্রীরই প্রাপ্য না।

[লস্ট মডেস্টি অনুবাদ টিম কর্তৃক অনূদিত]



Monday, June 20, 2016

‘নেশা যখন চটিগল্প পড়া’ (তৃতীয় পর্ব)

বিসমিল্লাহির রহমানীর রহীম ।


.........সবই বুঝলাম চটিগল্পের কাহিনী পুরোটাই বানানো , আমি তো শুধুই  পড়ছি ওরকম  কিছু তো করছিনা ।

চটি গল্প পড়লেন আর নিজে  মজা নিলেন  ব্যাপারটা কিন্তু এখানেই শেষ নয় , পিকচার আভি বাকি হ্যায়  । চটি গল্পের নেশা আপনাকে  তিলে তিলে ধ্বংস করে ফেলবে ।   আপনার দৃষ্টি শক্তি কমে যাবে ,স্মৃতি শক্তি কমে যাবে । আপনার মস্তিষ্কে বড়সড় একটা পরিবর্তন আসবে  এবং এই পরিবর্তনটা ক্ষতিকর ।  চটি গল্প পড়ার সময় আপনার মস্তিষ্ক  কিছু রাসায়নিক পদার্থ (phenylethylamine এবং  adrenaline)  নিঃসরণ করবে , স্বাভাবিক  যৌনতার সময় যে রাসায়নিক পদার্থগুলো (oxytocin এবং dopamine) নিঃসরিত হয় তার চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা  এই রাসায়নিক গুলো মস্তিষ্কের সাইন্যাপস এ ঘুরে বেড়াবে  এবং কোকেন আপনার মস্তিষ্কের যেই ক্ষতিটা করবে ঠিক সেই ক্ষতিটাই করবে ।  
[পড়তে পারেনঃ মাদকের রাজ্যে- http://tinyurl.com/ht59spz ]

মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটি একটা এক্সপেরিমেন্ট চালিয়েছিল  চটিগল্প, যৌনতা সম্পর্কে মহিলাদের দৃষ্টিভঙ্গি কীভাবে বদলে দেয়  সেটার ওপর । দেখা গেল , যেসব মহিলারা চটিগল্প পড়ে তাদের  মদ্যপান করার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে । তাদের একাধিক যৌনসঙ্গী থাকে , অবাধ যৌনাচার, বেহায়াপনায় তারা গা ভাসিয়ে দেয় ।[১]           

অনেকেই বলেন যে , “ চটিগল্প বা পর্নমুভি হচ্ছে আমার সেক্স এডুকেশানের মাধ্যম”

 উদ্দেশ্য বেশ ভালো কিন্তু পদ্ধতিটা খুবই খারাপ । চটিগল্প বা পর্নমুভি  কখনোই সেক্স এডুকেশানের মাধ্যম হতে পারে না । আমরা প্রথম পর্বেই আলোচনা করেছিলাম চটিগল্প যৌনতা সম্পর্কে কি ভুরি ভুরি মিথ্যে পাঠকদের গলাধঃকরন করাচ্ছে । চটি গল্প নারীকে বানিয়েছে একটা সেক্স অবজেক্ট , যে কখনো না বলে না , যে যেকোন উপায়েই যেকোন সময়  যেকোন পুরুষের মনোরঞ্জনের জন্য প্রস্তুত । চটিগল্প  পুরুষকে বানিয়েছে একটা সেক্স মেশিন যে ঘন্টার পর ঘন্টা কর্মক্ষম ।  চটিগল্পে আসক্ত পাঠক পাঠিকা এই ভুল ধারনা গুলো নিয়ে  দিন পার করেন । বিয়ের পরে শুরু হয় ঝামেলা

চটিগল্প থেকে সেক্স এডুকেশান পাওয়া  স্ত্রী ভাবেন , “আরে  আমার স্বামীতো  ওরকম ম্যানলি না!  ওইদিকে স্বামী ভাবেন , “যা শালা! বউ দেখি অন্যরকম” । এভাবে একজন ,  অপরজনের ওপর অসুন্তুষ্ট হন ,  শারীরিক দুরত্ব থেকে মানসিক দুরত্ব বাড়ে । একসময় ডিভোর্সও হয়ে যায়। স্বামী স্ত্রীকে জোর করেন চটিগল্পের নায়িকাদের মতো আচরন করতে এমন ঘটনাও অনেক । স্ত্রী বেচারী নিজ স্বামীর হাতেই ধর্ষিত হয়  , নীরবে চোখের পানি ফেলা ছাড়া কিছু করার থাকে না  ।
বাবমার সম্পর্কের টানাপড়েনর  প্রভাব পড়ে সন্তানদের ওপরে । তাদের সুস্থ ভাবে বেড়ে ওঠা বাঁধাপ্রাপ্ত হয় ।
[স্বামী স্ত্রীর  সম্পর্কে পর্নমুভি কি ভয়ংকর জটিলতা সৃষ্টি করে তা নিয়ে খুব পছন্দের একটা লিখা ‘১০৮ টি নীল পদ্ম’ http://tinyurl.com/guupnfo   । পড়ার অনুরোধ রইলো । পর্নমুভির জায়গায় শুধু চটিগল্প বসিয়ে  নিয়ে পড়ে ফেলবেন ইনশা আল্লাহ্‌ স্বচ্ছ একটা ধারনা পাবেন কীভাবে চটিগল্প স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কে জটিলতা সৃষ্টি করে ]             

টেড বান্ডি নামে কুখ্যাত  একটা লোক থাকতো আমেরিকাতে । লোকটা সিরিয়াল কিলার ছিল , মেয়েদের কিডন্যাপ করত , তারপর  রেপ  করে মেরে ফেলত [পড়ুন ‘সিরিয়াল কিলার’ সিরিজি -  http://tinyurl.com/hr6hzrj , http://tinyurl.com/zgo4dm2 ]
ফাঁসিতে ঝোলার  পূর্বে দেওয়া এক ইন্টারভিউতে বান্ডি বলেছিল,  সে  ছোট বেলায়  বাড়ীর বাইরের ডাস্টবিনে  কিছু চটিগল্পের বই খুঁজে পায় । সেদিনই তার প্রথম পরিচয় ঘটে অশ্লীল এই জগতটার সঙ্গে । তারপর ধীরে ধীরে সে হার্ডকোর পর্নমুভিতে আসক্ত হয়ে যায় । এই আসক্তিই তার মানসিকতা নষ্ট করে দেয় , এই আসক্তিই তার মধ্যে কামের যে আগুন জ্বালিয়ে দেয় তাতে পুড়ে  ছারখার হয়ে যায় প্রায় শখানেক তরুনীর জীবন ।   

ছোট বাচ্চাদের খুব আগ্রহ থাকে ইলেক্ট্রনিক গ্যাজেটগুলোর প্রতি । সুযোগ পেলেই ঘেঁটে দেখে ।  আপনার বাসায় ছোট বাচ্চা আছে বা বেড়াতে এসেছে । সে আবদার  ধরলো  , “ তোমার ফোন দাও তো একটু , গেম খেলব’। আপনি ফোন দিয়ে দিলেন তার হাতেসে ঘাঁটতে ঘাঁটতে রাতের বেলা পড়ার জন্য আপনি যে চটিগল্পের পিডিএফ গুলো নামিয়ে ছিলেন সেগুলো পেয়ে গেল , অথবা আপনার ব্রাউজার  এর হিস্টোরি থেকে কোন চটি গল্পের সাইটে ঢুকে গেল আপনার কারণে সে পরিচিত হয়ে গেল চটিগল্পে ।  আপনি কি গ্যারান্টি দিতে পারবেন এই বাচ্চাটার চটিগল্পের নেশা হবে না? পর্ন মুভিতে সে আসক্ত হবে না ? বড় হয়ে সে আরেকটা   টেড বান্ডি হবে  না  ?
চটি গল্পের নেশা বা পর্ন আসক্তি তার নিজের জীবনতো ধ্বংস করবেই , তার স্ত্রীর জীবনও নষ্ট করবে ,  সংসার তছনছ করে দিবে , তার  ছেলেমেয়ের  ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে যাবে । তার এতবড় ক্ষতি করার কোন অধিকার নেই আপনার ।    

কীভাবে কাটিয়ে উঠবেন জীবন নষ্টকারী চটি গল্পের নেশা ? কিভাবেই’বা  ছোট ছোট বাচ্চাদের রক্ষা করবেন চটিগল্পের  বিষধর ছোবল  থেকে ?    
ইনশা আল্লাহ্‌  , সবকিছু আলোচনা করা হবে পরবর্তী  পর্বে   ।

প্রথম দুই পর্ব পড়ুন এখানে –

প্রথম পর্ব- http://tinyurl.com/ztlblr4 
 দ্বিতীয় পর্ব- http://tinyurl.com/hv8yfm5  

রেফারেন্সঃ


        





Friday, June 10, 2016

নেশা যখন চটিগল্প পড়া (দ্বিতীয় পর্ব)

বিসমিল্লাহির রহমানীর রহীম ।






.........সবই বুঝলাম চটিগল্পের কাহিনী পুরোটাই বানানো , গাঁজাখুরি কিন্তু আমার তো মজা লাগে ,  আর আমি তো শুধুই  পড়ছি ওরকম  কিছু তো করছিনা ।

ভাই দেখেন,  যেকোন  পাপ কাজেই কিন্তু একটা সাময়িক মজা আছে । পাপ কাজটাই এমন যে আপনি সাময়িক একটা মজা পাবেন ।  সিগারেট খাওয়া হারাম , মদ খাওয়া হারাম কিন্তু এগুলোতে  মজা আছে না ? চটিগুল্পের ব্যাপারটাও সেরকম আপনি পড়বেন আর সাময়িক মজাও পাবেন কিন্তু দিনশেষে এটা কিন্তু পাপই ।

আল্লাহ্‌ (সুবঃ) বলেছেন, “জেনার কাছেও যেয়ো না । এটি একটি লজ্জাজনক ও নিকৃষ্ট কর্ম যা আরো  নিকৃষ্ট কর্মের পথ খুলে দেয় ।
[সূরা ১৭,আয়াত ৩২ ]
তিনি কিন্তু বলেননি যে জেনা করো না , তিনি বলেছেন জেনার কাছেও যেয়ো না – এমন কিছু থেকে দূরে থাকো যা তোমাকে জেনার দিকে নিয়ে যেতে পারে ।
চটি গল্প পড়ার অভ্যাস আপনাকে জেনার দিকে নিয়ে যাবে কিনা  সেটা পরে আলোচনার ব্যাপার ,আসল পয়েন্টটা হচ্ছে চটিগল্প পড়া নিজেই জেনার অন্তর্ভুক্ত।


“আদম সন্তানের উপর জেনার যে অংশ লিপিবদ্ধ আছে তা সে পাবেই । চোখের জেনা হল নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি দৃষ্টিপাত করা , দু’কানের জেনা হল শ্রবন করা , রসনার জেনা হল কথোপকথন, হাতের জেনা হল স্পর্শ করা, পায়ের জেনা হল হেঁটে যাওয়া , অন্তরের জেনা হল আকাঙ্ক্ষা এবং কামনা করা ।
[সহীহ বুখারী ৮;৭৭;৬০৯]

তাহলে এবার হিসেব করুন কয় রকমের জেনা  আপনি  করলেন
প্রথমত হাতের জেনা , হাত দিয়ে  কিবোর্ড চেপে সার্চ করে করে চটিগল্প বের করলেন । দ্বিতীয়ত চোখের জেনা -  চোখ দিয়ে নিষিদ্ধ জিনিস দেখলেন এবং পড়লেন । তৃতীয়ত অন্তরের জেনা – চটিগল্পে পড়া জিনিস গুলো চিন্তা করলেন এবং ভাবলেন ইশ! একবার যদি হত এরকম ।


এবার একটা হাদীস শোনাই । খুব ভয়ংকর রকমের হাদীস ।  
রাসুল বলেছেন,“আমি স্বপ্নে একটি চুলা দেখতে পেলাম যার উপরের অংশ ছিল চাপা আর নিচের অংশ ছিল প্রশস্ত আর সেখানে আগুন উত্তপ্ত হচ্ছিল, ভিতরে নারী–পুরুষরা চিৎকার করছিল। আগুনের শিখা উপরে আসলে তারা উপরে উঠছে, আবার আগুন স্তিমিত হলে তারা নিচে যাচ্ছিল, সর্বদা তাদের এ অবস্থা চলছিল


আমি জিবরাইল আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞেস করলামঃ এরা কারা ?
জিবরাইল আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললঃ  এরা হল, জেনাকারী  নারী ও পুরুষ ।
 [সহীহ আল–বুখারী]


ভাই , জাহান্নামের আগুন এতোটাই ভয়াবহ সেখানে কেউ যদি এক সেকেন্ড না এক মাইক্রো সেকেন্ড বা তারচেয়েও অনেক কম সময় থাকে তাহলে সে দুনিয়ার সকল আনন্দ , সকল মজা , আরাম আয়েশ ভুলে যাবে । হয়তো সে দুনিয়ার সবচেয়ে সুখী ব্যক্তি ছিল , জীবনেও কোন দুঃখ কষ্টের মুখোমুখি হয়নি , রাজার হালে থেকেছে , যা মন চায়  খেয়েছে,  ইচ্ছেমত পান করেছে । কিন্তু জাহান্নামের এক মুহূর্তই তাকে দুনিয়ার সব সুখস্মৃতি ভুলিয়ে দেবার জন্য যথেষ্ট । চটিগল্প পড়ে মজা পাচ্ছেন কিছুটা সময়ের জন্য কিন্তু একটা বিশাল পাপের পাহাড় তৈরি করছেন    আস্তে আস্তে  আর আপনাকে আপ্যায়ন করার জন্য  উত্তপ্ত করা হচ্ছে জাহান্নামের আগুন বাঁচান ভাই নিজেকে , জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচান । কোনমতেই  সহ্য করা সম্ভব না ঐ আগুন ।

চটিগল্পের নেশা আপনাকে একদিন না একদিন মাস্টারবেশন আর পর্ন আসক্তির দিকে ঠেলে নিয়ে যাবেই । উত্তপ্ত হয়ে ওঠা ভেতরটাকে ঠান্ডা করতে হবে না ? তাছাড়া শুধু পড়তে আর কতদিন ভালো লাগবে ?  গল্পে পড়া জিনিসগুলো বাস্তবে দেখতে মন চাইবে না ?

সাধারণত  চটিগল্পের নেশা  দিয়ে অশ্লীল অসভ্য  ভয়ংকর এই  জগতটাতে মানুষের প্রবেশ ঘটে,মাস্টারবেশন পর্ন আসক্তির বেড়া ডিঙ্গিয়ে লিটনের ফ্ল্যাটে যেয়ে  তার পথচলা শেষ হয় । ভুল বললাম বোধহয় লিটনের ফ্ল্যাটে না  জাহান্নামের আগুনের গর্তে যেয়ে পথচলা শেষ হয়

একটা গল্প বলি । গল্প হলেও সত্যি ।  
২০১০ সালে এস. এস. সি.   পরীক্ষার রেজাল্টের পরে বাবা মার ইচ্ছে হল ঢাকার কোন কলেজে ছেলেকে  ভর্তি করানোর ।  কলেজের ফর্ম তোলার জন্য একদিন কয়েকজন বন্ধু বান্ধব মিলে ঢাকার ট্রেনে চেপে বসলাম । অনেক  প্রথমের সূচনা ছিল সেই দিনটা আমার জন্য । প্রথমবারের মতো ট্রেনে চড়া , প্রথমবারের মতো মফঃস্বল শহর ছেড়ে  এতদূরের শহর ঢাকা যাওয়া , প্রথমবারের মতো   ফুটপাতে ময়লা ন্যাকড়া জড়িয়ে কুকুরের সঙ্গে জড়াজড়ি করে শুয়ে থাকা পথশিশু দেখা , রাস্তার পাশে , রেললাইনের ধারের  বস্তিতে অবর্ণনীয় দুঃখ কষ্টে বেঁচে থাকা মানুষদের দেখা । খুব খারাপ লেগেছিল সেদিন । এক ছুটির সকালে হোস্টেলের পেছনে আশীপিতর এক বৃদ্ধা লাঠিতে ভর  করে বহু কষ্টে কাগজ কুড়াচ্ছিল । কেন সে এত কষ্ট করে কাগজ কুড়াচ্ছে জিজ্ঞেস করাতে বলেছিল , “বাবা! সকালের নাস্তা করব কিন্তু কোন টাকা নেই আমার কাছে । তাই , কাগজ কুড়াচ্ছি , ভাঙ্গাড়ীর দোকানে বিক্রী করে ঐ টাকা দিয়ে কিছু কিনে খাব” ।

কেঁদেছিলাম সেদিন । নীরবে , ডুকরে ডুকরে । ঢাকায় আসার পর মাস ঘুরে এক  বছর শেষ  হয়ে  গেল ।  কলেজে যাবার পথেই প্রতিদিন দেখতাম   ডাস্টবিনের পাশের ময়লাতে টোকাইরা শুয়ে আছে ,  আগের মতো খারাপ লাগতো না ।  আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হয়ে গেল । মনে হতো ঠিকই তো আছে , টোকাইরাতো রাস্তাতেই শুয়ে থাকবে ।  বস্তির মানুষের করুন দশা দেখেও আমার আর মন খারাপ হতো না , কান্না কাটি করা তো বহু দূরের কথা ।
                                          
মানুষের সাইকোলজি কিন্তু এরকমই । কোন অস্বাভাবিক কিছু প্রতিনিয়ত চোখের সামনে দেখতে থাকলে সে সেটাকেই স্বাভাবিক বলে ধরে নেয় ।

ভাই প্রথম প্রথম আপনি যখন চটিগল্প পড়া শুরু করেছিলেন তখন  মা, বোন , খালা , ভাবী , চাচী , মামী , কাজিন ,  পাশের বাসার আন্টি , টিচার, কাজের মেয়েদের নিয়ে লিখা গল্প গুলো পড়ে আপনার  মনে হত না,   গল্প গুলো কত  জঘন্য  ? কিন্তু আস্তে আস্তে আপনার কাছে সেটাই স্বাভাবিক হয়ে গেল । আপনি তাদেরকে নিয়ে ফ্যান্টাসীতে ভোগা শুরু করলেন , তাদের বিভিন্ন আচরনের অন্য অর্থ করলেন আপনি ,   শেয়ালের চোখে দেখতে শুরু করলেন তাদের,  বশ করার ফন্দি আঁটলেন ,  হয়তো সুজোগও খুঁজলেন ,তাই না ? অস্বীকার করবেন না । স্বভাবতই   বাঙ্গালী ছেলেদের  চিন্তাভাবনা   কতগুলো  নিকটাত্মীয়াকে (ভাবী , শালী , কাজিন  ) নিয়ে  একটু অন্যরকম হয় । চটিগল্পে  তাদের  সেই অবাধ্য চিন্তাভাবনায় রঙ চং লাগিয়ে একেবারে তারা ঠিক যেমন  চাই তেমন ভাবেই উপস্থাপন করা হয় ।        

চটি  গল্পের  প্রধান  সমস্যাটাই এখানে । আপনাকে সে যৌনতা সম্পর্কে একগাদা মিথ্যে তথ্য গুলে খাওয়াবে এবং আপনি সেগুলো আস্তে আস্তে সত্যি বলে ধরে নিবেন- সত্যিই বোধহয় তারা আমার কাছ থেকে কিছু চাই , আমার সঙ্গে বিছানায় যেতে আগ্রহী ইত্যাদি ইত্যাদি ।  আপনি শুধু এখানেই বসে থাকবেন না , মেয়ে শিকারের সেই  টেকনিক গুলো  নিজের  জীবনেও এপ্লাই করার চেষ্টা করবেন ।  
বিকৃত চিন্তার গল্প গুলো পড়ে আপনি নিজের ভেতরে ক্রমাগত যে ‘কামের’ আগ্নেয়গিরি তৈরি করছেন তার  অগ্নুৎপাত কি কখনো হবে না ভেবেছেন ?  অগ্নুৎপাতের পরে কি হবে চিন্তা করেছেন কখনো ? কত ঘর ভাঙবে , সম্পর্ক আর জীবন নষ্ট হবে ? আপনার বাবা মা’র কথা একবার চিন্তা করুন । কি পরিমাণ লজ্জিত , অপমানিত তারা হবেন !

আপনি হয়তো আমার কথা এখন হেসেই উড়িয়ে দিবেন  কিন্তু বিশ্বাস করুন আপনার চটিগল্পের নেশা আপনাকে ধর্ষক , শিশু নির্যাতনকারী এমনকি সমকামিও (আঊজুবিল্লাহ) বানিয়ে ফেলতে পারে  , পতিতার কাছেও যাওয়াও আশ্চর্যের কিছু না   চটিগল্প পড়ে হরমোন ক্ষরণে উত্তেজিত হয়ে ওঠা আপনি শান্ত হয়ে  হওয়ার জন্য হাতের কাছে যেটা আছে সেটা দিয়েই কাজ সারতে চাইবেন । কেউই আপনার লালসা থেকে নিরাপদ  থাকবে না । 

চলবে ইনশা আল্লাহ্‌ .........

পড়ুনঃ
১) “নেশা যখন চটিগল্প পড়া” সিরিজের প্রথম পর্ব- http://lostmodesty.blogspot.com/2016/05/blog-post_23.html


        






Monday, June 6, 2016

সমকামিতাঃ স্বাধীনতা, রোগ নাকি ......... ?




বিসমিল্লাহির রহমানীর রহীম । 

সমকামিতাকে পাশ্চাত্যে ডাকা হয়একটি বিকল্প লাইফস্টাইল’, ‘ব্যক্তিগত পছন্দঅথবাপ্রাকৃতিক ব্যতিক্রমহিসেবে, অথচ সমকামিতাকে একটি অসুস্থতা হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন এসোসিয়েশন অফ সাইক্রিয়াটিস্টের মনোবিদেরা যদিও এখন আর অসুখের লিস্টে সমকামিতা খুঁজে পাওয়া যায়না বরং তার জায়গায় উল্টো হোমোফোবিয়া অর্থাৎ সমকামভীতিকেই এখন অসুস্থতা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে
 
ইসলাম এবং আমরা মুসলিমরা ক্রমাগত এর বিরোধিতা করে যাবার কারণে আজ আমাদেরগোঁড়া’, ‘ভিন্নমতের প্রতি অসহনশীলইত্যাদি বিভিন্ন কথা শোনানো হচ্ছে আর সমকামিতার পক্ষে বিভিন্ন যুক্তি খাঁড়া করে প্রমাণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে যে, সমকামিতা শুধুই সামাজিক অবক্ষয় বা ব্যতিক্রমী সামাজিক ব্যবহারের ফসল নয়, বরং বায়োলজিকালি এর ভিত্তি রয়েছে, অর্থাৎ কিনা কিছু মানুষ জিনগত বৈশিষ্ট্যের কারণেই সমকামী আসুন দেখা যাক যুক্তিগুলো

1. সমাকামিতার বিরোধিতা করতে গিয়ে আগেকালের সভ্য মানুষ প্রথম যুক্তি এটাই দেখাত যে, সমকামি আচরণ পুরোটাই অস্বাভাবিক পায়ুকাম কখনই সন্তান উৎপাদনে সক্ষম নয় যা কিনা যৌনতার প্রধান উদ্দেশ্য প্রকৃতিআমাদেরকে সমকামি করে বানায়নি এটাই ছিল মানুষের প্রথম যুক্তি
 কিন্তু সমকামিতার গবেষকরা, পৃথিবীবাসীর এই যুক্তির দুর্বলতাকে ততদিন ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখেছিল যতদিন না তারা প্রাণিজগতের অন্যান্য প্রাণীর মধ্যে সমকামি আচরণ প্রত্যক্ষ করে ঘটনা হল, জাপানের উপকূলে তারা এমন কিছু সামুদ্রিক মাছের প্রজাতি খুঁজে পায় যাদের পুরুষ মাছেরা স্ত্রীমাছ হবার অভিনয় করে অন্য পুরুষ মাছের কাছে, যাতে করে অন্য পুরুষেরা তাদের স্ত্রীদের গর্ভধারণের কারণ না হয় তারা আরও দেখে যে আফ্রিকার এক ধরণের প্রজাপতির পুরুষেরাও এই কাজটি করে থাকে  

আমাদের পাল্টা যুক্তি হল, যদি অন্য প্রাণীর আচরণ দিয়ে মানুষের আচরণ জাস্টিফাই করা লাগে তাহলে দক্ষিণ আমেরিকায় একধরণের মাকড়সা পাওয়া যায়, যার নারী সদস্যরা পুরুষের চাইতে আকারে বড় হয় এবং যৌনসঙ্গমের পর নারী পুরুষকে খেয়ে ফেলে (তাহলে কি কিছুদিন পর এই আচরণও আইনের আওতায় আনা যাবেনা আর আমাদের স্ত্রীরা এরকম ক্যানিবালিজম চালু করলেও এটা স্বাভাবিক হবে? )

2.
মানুষের মস্তিস্কের একটি গ্ল্যান্ড আছে যা পুরুষের একটু বড় এবং মেয়েদের ছোট হয় ৮০ এর দশকে দাবি করা হয়, সমকামি পুরুষদের এই গ্ল্যান্ডটি ছোট বলেই তারা সমকামি  

কিন্তু বিজ্ঞানের জগতে এই দাবি বেশিদূর এগোতে পারেনি গ্ল্যান্ড ছোট প্রমাণ করার জন্য সমকামি গবেষকরা বেছে নিয়েছিল মৃত সমকামি পুরুষদের মস্তিস্ককে বিজ্ঞানীরা এই ডেটাকে পাত্তা না দেবার এক নম্বর কারণ হল মস্তিস্কগুলো মৃত এমন হতে পারে মৃত্যুর পর সেটি ছোট হয়েছে আর দ্বিতীয়ত গ্ল্যান্ড ছোট হয়ে যাওয়ার কারণে তারা সমকামি নাকি সমকাম চরিতার্থ করবার কারণেই তাদের গ্ল্যান্ড ছোট হয়ে গেছে তা জানা যায়না এমনও হতে পারে যে তারা জন্ম নিয়েছিল সঠিক সাইজের গ্ল্যান্ড নিয়ে কিন্তু সমকামিতার কারণে তা বছরের পর বছর ধরে ধীরে ধীরে ছোট হয়ে গেছে (এরকম ঘটনা ঘটার প্রমাণ আছে অন্য গ্ল্যান্ডের ক্ষেত্রে)

3.
সাম্প্রতিককালে জেনেটিক্স দিয়ে সমকামিতাকে সবচাইতে বেশিস্বাভাবিক বানাবার প্রয়াস চলছে ১৯৯৩ সালে National Cancer Institute এর . ডীন হেমার,  গে জিন আবিস্কারের দাবি করেন, 
“the first concrete evidence that ‘gay genes’ really do exist.”
                                                                                                    
এই আবিস্কার হেমারের জীবনকে বদলে দেয় সাদামাটা একজন গবেষক থেকে হেমার হয়ে যায় বিখ্যাত মিডিয়া ব্যক্তিত্ব প্রেস্টিজিয়াস জার্নালে হেমারের গবেষণা প্রকাশিত হলে সংবাদপত্রের হেডলাইন থেকে টিভি চ্যানেলের ব্রেকিং নিউজ হয় হেমার তার দাবি ছিল, সমকামি পুরুষেরা তাদের মায়েদের এক্স ক্রোমোসোমের থেকে এই বৈশিষ্ট্য পায় কলরোডো সুপ্রিম কোর্টে হেমারের টেস্টিমোনি, সমকামি বিরোধী আইনকেও রদ করে দেয়

কিন্তু মজার ব্যাপার হল হেমারের অনুসরণ করা পদ্ধতি অনুসরণ করে, ওয়েস্টার্ন ওন্টারিও বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা সেই গে জিন আবিস্কার করতে ব্যর্থ হন পরবর্তীতে দেখা যায় হেমারের গবেষণায় কোন control group ছিলনা, যা কিনা বৈজ্ঞানিক গবেষণার একটি মৌলিক বিষয় কিন্তু আসল মজার তখনও বাকি ছিল

জুন ১৯৯৪ তে শিকাগো ট্রিবিউন রিপোর্ট করে, হেমারের ল্যাবোরেটরির একজন জুনিয়র এসিস্টেন্ট, যে কিনা গে জিন আবিস্কারের সময় সহায়তা করেছিল, ইচ্ছে করে করে সিলেক্টিভ রিপোর্ট করেছে মহিলাকে হেমারের ল্যাবে post-doctoral fellowship থেকে অব্যহতি দেওয়া হয় এবং হেমার যদিও তার আত্মজীবনীতে নিজের যৌন পরিচয় গোপন রেখেছিল, পরে সে তার লেকচারে স্বীকার করে যে সে সমকামি

(
সমস্যা হল হেমারের আবিস্কার পত্রপত্রিকার হেডলাইন হলেও, পরের কেচ্ছাগুলো তেমন মিডিয়া কভারেজ পায়নি তাই জনসাধারণের মনে এখনও গে জিনের ভূত খুঁটি গেড়ে বসে আছে )

4. ইসলাম হঠাৎ করে পৃথিবীতে সমকামবিরোধি আইন আনেনি বরং মানুষের ইতিহাস সমকামকে ঘেন্না করেছে Torah তে স্পষ্টভাবেই এই আচরণকে কন্ডেম করা হয়েছে

5. ফলাফল হিসেবে এইডস রোগই যথেষ্ট এটা প্রমাণ করার জন্য যে সমকামিতা সমাজের জন্যে ভয়াবহ এইডস প্রথমদিকে সবচাইতে বেশি ছড়িয়েছে সমকামি কমিউনিটিগুলোর মধ্যে এবং তারপর এটি ড্রাগ রক্তদানের মাধ্যমে এবং সবশেষে সাধারণ যৌন আচরণের মানুষের মধ্যে এটি ছড়িয়ে পড়ে  

(
পায়ুকাম এর কারণে রক্তপাত এইডস সংক্রমণের জন্যে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ একজন এইডস রোগীর সঙ্গে স্বাভাবিক যৌন আচরণের ফলে এইডসে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা, পায়ুকামের তুলনায় নগণ্য তাই সবচাইতে মজার ব্যাপার হল, ঘোর সেক্যুলাররাও এইডস সংক্রান্ত সেমিনারে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলার উপদেশ দেয় )

6.
ইসলাম সমকামিতাকে সম্পূর্ণ ব্যক্তি মানুষের পছন্দ হিসেবে বিবেচনা করে এটি কোন রোগও নয় এটা কখনই হতে পারেনা যে ঈশ্বর কিছু মানুষকে সমকামি করে সৃষ্টি করলেন এবং তারপর একে একটি অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করে দুনিয়া আখিরাতে শাস্তির বিধান দিলেন আল্লহ কখনই এরকম অবিচার করেন না কোন বিষয়ের প্রতি বহু মানুষের ঝুঁকে পড়াটাই সে বিষয়টি স্বাভাবিক হবার জন্য যথেষ্ট নয় মানুষের সমাজে নানা অনাচার প্রবণতা দেখে দিতে পারে আধুনিক মানুষের জটিল জীবনযাত্রার বিভিন্ন ধরণের স্বাভাবিক অস্বাভাবিক কার্যকলাপের কারণে; সেটা হতে পারে ব্যভিতার থেকে ধর্ষণ, নেক্রফিলিয়া থেকে পাশবিকতা এসব অনাচারের পিছনে জিনগত বৈশিষ্ট্য দায়ী হতে পারে, দায়ী হতে পারে মিডিয়ার প্রভাব কিংবা মানুষের কুমন্ত্রণা
মানুষ রোবোট নয় তার নিজস্ব বুদ্ধি বিবেচনা দিয়েই সে কাজ করে এবং আল্লহ তার সেই কাজের হিসাব নেন যা সে জেনে বুঝেই করে যদি সমকামিতা আসলেই জিনগত কারণে হত, ঈশ্বর কখনই একে পাপ হিসেবে চিহ্নিত করতেন না

একেবারে সম্প্রতি কিছু বিজ্ঞানী বলছেন, পেশাদার খুনিদের কিছু জিনগত বৈশিষ্ট্য আছে, যা অন্য মানুষ থেকে আলাদা তাই বলে কি কাল থেকে আমরা খুনিদের ক্ষমা করে দিয়ে, মানুষ হত্যা আইনত জায়েজ করে দেবো ?

7. ইসলাম মা-বাবা হিসেবে আমাদের নির্দেশ দেয়, আমরা যেন ১০ বছর বয়স থেকে আমাদের সন্তানদের বিছানা পৃথক করে দেই যাতে করে শৈশবের শিশুসুলভ কৌতুহল থেকে উৎসারিত কোন অনাকাঙ্ক্ষিত যৌনতা, আমাদের সন্তানদের স্পর্শ না করে এমনকি স্কুলে বা অন্য এডাল্টদের দ্বারা আক্রান্ত হবার কারণেও ধরণের ঘটনা যে ঘটতে পারে, সে সম্পর্কেও আমাদের সচেতন থাকতে হবে

 ইসলাম আমাদের আরও শিক্ষা দেয় যেন সমাজে পুরুষ মহিলাদের একদম ক্লিয়ার কাট পার্থক্য বিদ্যমান থাকে পোশাকে, ব্যবহারে রসূলুল্লহ সল্লাল্লহুআলাইহি ওয়া সাল্লাম লানত করেছেন সেসব পুরষদের যারা মহিলাদের নকল করে আরও লানত করেছেন মহিলাদের যারা পুরুষের মত আচরণ করার চেষ্টা করে দুঃখজনক হলেও সত্যি, আজকের ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিগুলো অধিকাংশই সমকামিদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় সমকামিরা ইচ্ছে করেই এমন পোশাক বানায় যা পুরুষ না মহিলার বোঝা দায় এর কারণেই ছেলেদের পোশাকে ধীরে ধীরে নারীত্বের ছাপ আসছে অন্যদিকে মেয়েরা পরছে স্যুট, টাই আর ছেলেদের জুতো

[ লেখাটি  Dr. Abu Ameenah Bilal Philips এর Contemporary Issues বই থেকে ভাবানুবাদ করা   ব্রাকেটের লেখাগুলো অনুবাদকের, লেখকের নয়  । অনুবাদ করেছেন  Salman Saeed । আল্লাহ্‌ তাঁকে উত্তম প্রতিদান দান করুক । ]